মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই কুড়ি দিন পরে কিনারা করা হল নাকতলার ডাকাতির। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক জনকে।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম রাজু ঘোষ। বাড়ি সোনারপুরে। সে পেশায় রিকশাচলক। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অভিযুক্ত রাজুর বিরুদ্ধে মানিকতলা এবং সল্টলেক এলাকায় একাধিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বছর কয়েক আগে এক বার গ্রেফতারও হয়েছিল অভিযুক্ত।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাত আটটা নাগাদ নাকতলা সেকেন্ড স্কিমের বাসিন্দা চিকিৎসক রণবীর সিংহের বাড়িতে হানা দিয়েছিল চার জনের একটি ডাকাত দল। সেই সময়ে রণবীরবাবু বাড়িতে না থাকলেও বাড়ির নীচের ঘরে ছিলেন রণবীরবাবুর শ্বশুর মোহিত চৌধুরী এবং শাশুড়ি। কিন্তু ডাকাতি চলাকালীনই বাড়িতে চলে আসেন রণবীরবাবু। তখন তিন জনকে একটি ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে ডাকাতরা ডাকাতি করে বেরিয়ে যায়। এরপরে রণবীরবাবুদের চিৎকার শুনে ১০০ ডায়ালে ফোন করে পুলিশকে ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন তাঁদের এক প্রতিবেশী। ঘটনার পরেই তদন্তে নামে নেতাজিনগর থানার তদন্তকারী দল।
আরও পড়ুন
ডাকাতি করল সিপিএমের ব্রাঞ্চ কমিটির সম্পাদক, ধরা পড়ল সিসিটিভিতে
কী ভাবে কিনারা করলেন তদন্তকারীরা?
ডাকাতির সময়ে ডাকাতরা টাকা, গয়নার সঙ্গে রণবীরবাবুর মোবাইল ফোনটি নিয়ে গিয়েছিল। কিছু দিন আগে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করছেন বাঁশদ্রোণীর এক মহিলা। তাঁকে জিজ্ঞাসা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা আর এক ব্যক্তি ওই মহিলাকে ফোনটি দিয়েছেন। এর পরে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করে তদন্তকারীরা রাজুর নাম জানতে পারেন। মঙ্গলবার সকালেই রাজুকে গ্রেফতার করা হয়।
জেরায় ধৃত রাজু তদন্তকারীদের জানায়, রণবীরবাবুর শ্বশুর মোহিতবাবু তার রিকশা করেই বাঁশদ্রোণীতে সৌরভ নামে এক ব্যক্তির দোকানে কেনাকাটা করতেন, বাজারও করতে যেতেন। আবার রাজুর রিকশাতেই ফিরতেন তিনি। ঘটনার দিন এই সৌরভের নাম করেই, তাঁর দোকানে টাকা বাকি আছে বলে রণবীরবাবুর বাড়িতে ঢুকেছিল ডাকাতরা। বাজার দোকান সেরে মোহিতবাবু বাড়ি ফিরলে জিনিসপত্র ঘরের ভিতরে দিয়ে আসতো রাজু। যাতায়াতের পথে রাজুর সঙ্গে অনেক বিষয়ে গল্প করতেন তিনি। সেই সব গল্প শুনেই রাজুর ধারণা হয় ওই বাড়িতে বৃদ্ধ মোহিতবাবু এবং তাঁর স্ত্রী ছাড়া কেউ থাকে না। তাঁর গল্প শুনে রাজুর ধারণা হয়েছিল, মোহিতবাবুর ঘরে অনেক টাকাপয়সাও রয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, আগে চুরি, ছিনতাই করে হাত পাকানো রাজু তাই ডাকাতির জন্য বৃদ্ধ মোহিতবাবু এবং তাঁর স্ত্রীকে টার্গেট করেন।
তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ডাকাতিতে রাজুর তিন সহকারীও বাঁশদ্রোণী এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। ফলে তাদের কাছে এলাকার অলিগলি চেনা হওয়ায় কাজ হাসিল করে সহজেই এলাকা থেকে বেরিয়ে যেতে পেরেছিল রাজুরা।