রাত বাড়লেই শহরের রাস্তায় শুরু হয় বেপরোয়া বাইক-বাহিনীর দাপট। বারবার এ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনও সুরাহা হয় না বলে শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। প্রশাসনের সেই গাফিলতির মাসুল দিয়ে শহরের পথে ফের বেপরোয়া বাইকের বলি হলেন এক যুবক।
শুক্রবার রাত এগারোটা নাগাদ রাজা এস সি মল্লিক রোডে বাঘা যতীন মোড়ের কাছে বেপরোয়া বাইকের ধাক্কায় নিহত হন অরুণ দাস নামে এক যুবক। তাঁর বাড়ি বাঘা যতীনের আই ব্লকে। জখম হন তাঁর সঙ্গী রিঙ্কু সর্দার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেন অরুণ। শুক্রবার রাতে বাঘা যতীন সংলগ্ন চিত্তরঞ্জন কলোনির একটি ক্লাবে তাঁর ক্যাটারিংয়ের কাজ ছিল। অনুষ্ঠান বাড়িতে ভাত কম হওয়ায় তিনি রিঙ্কুকে বাইকের পিছনে নিয়ে বাড়ি থেকে চাল আনতে গিয়েছিলেন।
স্থানীয়েরা জানান, চাল নিয়ে ফেরার সময়ে রাজা এস সি মল্লিক রোডে পৌঁছলে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি মোটরবাইক অরুণের বাইকে ধাক্কা মারে। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই উল্টো দিক থেকে আর একটি বেপরোয়া মোটরবাইক এসে ধাক্কা মারে তাঁদের। গুরুতর জখম অবস্থায় বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে অরুণকে মৃত ঘোষণা করা হয়। রিঙ্কু ওই হাসপাতালেই ভর্তি।
পুলিশ জানায়, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটে সেই জায়গায় রাস্তা সারাইয়ের কাজও চলছিল। রাস্তার পশে বালি, স্টোনচিপস্, পিচের ড্রামও পড়ে ছিল। তবে ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, মোটরবাইকের ধাক্কাতেই অরুণ পড়ে যান।
শনিবার অরুণের বাড়িতে গেলে তাঁর মা শোভারানী দাস বলেন, “আমার এক মাত্র ছেলের মৃত্যুর জন্য যাঁরা দায়ী, তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কুড়ি বছর আগে অরুণের বাবা অনিল দাসও পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। এ দিকে, স্বামীর মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে বারবার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা। তাঁদের দু’টি ছোট মেয়ে রয়েছে। পরিবারের এক মাত্র উপার্জনকারী ছিলেন তিনি।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় পরে তিনটি মোটরবাইক আটক করা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাত বাড়লেই শুরু হয় এই বেপরোয়া বাইক-বাহিনীর দাপট। স্থানীয় সূত্রে খবর, অনেক সময়ে এরা বাইকের রেসও খেলে রাস্তায়। আর এই সব বেপরোয়া মোটরবাইকের ধাক্কায় ছোটখাটো দুর্ঘটনা লেগেই থাকে।
ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, “রাত বারোটার পরে শহরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের সময় শেষ হয়ে যায়। আর তার সুযোগ নেন বেপরোয়া মোটরবাইক চালকেরা।” কিন্তু ট্রাফিকের সময় শেষ হলে রাতে যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কার? এ নিয়ে অবশ্য লালবাজারের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy