কলকাতা বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের প্রতিটি কোণে রয়েছে সিসিটিভি। ৫৩১টি ক্যামেরার চোখ ঘুরছে সর্বত্র। নিরাপত্তার সামান্য ত্রুটিও তাই ধরা পড়ার কথা। অথচ এমনই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ঘেরা টার্মিনাল থেকে বৃহস্পতিবার জাল পাসপোর্ট-সহ আটক করা এক যাত্রী উধাও হয়ে গিয়েছেন বলে দাবি কলকাতা বিমানবন্দরের অভিবাসন দফতরের।
সিসিটিভি-র ছবি প্রতিনিয়ত নজরে রাখে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ। ওই যাত্রী পালিয়ে যান বলে দাবি করার পরেও ফুটেজ দেখতে সিআইএসএফ-কে অনুরোধ করেনি অভিবাসন দফতর। কেন? জানা যায়নি। অভিবাসন দফতরের তরফে থানায় জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে টার্মিনালের ভিতরে চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করানোর পরে ওই যুবক পালান। অথচ তা থানায় জানানো হয় রাত বারোটা নাগাদ। দেরির কারণ জানা যায়নি। সব গেটেই সিআইএসএফ জওয়ানেরা থাকেন। সঙ্গে ছিলেন অভিবাসন অফিসারেরাও। প্রশ্ন উঠেছে, তা-ও এমন হল কী করে? অভিবাসন দফতরের দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শাকিল আহমেদ বলেন, “কোনও উত্তর দিতে পারব না।”
বিমানবন্দরের কর্মীদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরেই এক ব্যক্তিকে নিয়ে চিকিৎসকদের ঘর থেকে বেরিয়ে টার্মিনালের বাইরে আসেন অভিবাসন দফতরের অফিসারেরা। একটি পুলিশের ভ্যানেই তুলে দেওয়া হয় তাঁকে। তবে তিনিই অভিযুক্ত যাত্রী কি না, বলতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ওই যাত্রী আকবর আলি বাংলাদেশের নাগরিক। অভিযোগ, এ দিন এমিরেট্সের উড়ানে দুবাই যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে পৌঁছন তিনি। তাঁর পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেটি জাল। অভিযোগ, এর পরে কোনও ভাবে আহত হন তিনি। ওই যুবকের কপাল ও পিঠে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন ছিল। কপাল কেটে রক্ত পড়ছিল। অভিযোগ, তাঁকে ধরে অভিবাসন দফতরের কিছু অফিসার মারধর করেন। এর পরে বিমানবন্দর থানায় নিয়ে গেলে পুলিশ তাঁকে হেফাজতে নিতে অস্বীকার করে। বলে চিকিৎসককে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আনতে। কারণ পুলিশের মতে, আহত অবস্থায় কাউকে থানায় রাখলে এবং পরে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে দায় গিয়ে পড়ত থানার উপরেই।
আকবরের ব্যাগ ও সেই জাল পাসপোর্ট থানায় রেখে তাঁকে নিয়ে ফের টার্মিনালে ফেরেন অভিবাসন দফতরের অফিসারেরা। বিমানবন্দরের চিকিৎসকদের দিয়ে তাঁকে পরীক্ষা করানো হয়। পরে কিছু অভিবাসন অফিসার থানায় এসে আকবরের ব্যাগ ও পাসপোর্ট ফেরত চান। অথচ সেই সময়ে পালিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়নি। যদিও পুলিশ আকবরের ব্যাগ ও পাসপোর্ট অভিবাসন অফিসারদের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়নি। রাত প্রায় বারোটা নাগাদ অভিবাসন দফতরের কয়েক জন অফিসার থানায় এসে জানান, আকবর দুপুর দেড়টায় পালিয়ে গিয়েছেন। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy