Advertisement
E-Paper

লিজ জমিতে হস্তান্তর মূল্য দেওয়ার বিধি খারিজ কোর্টে

সল্টলেকে অনাত্মীয়দের জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারকে হস্তান্তর মূল্য দেওয়ার বিধি বুধবার খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ১৭ ধারা অনুযায়ী (অর্থাৎ যে চুক্তিতে ১৭ দফা শর্ত রয়েছে) যে সব জমির লিজ চুক্তি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই আদেশ কার্যকর হবে। ২০ ধারা অনুযায়ী (অর্থাৎ যে চুক্তিতে ২০ দফা শর্ত রয়েছে) যাঁরা লিজ চুক্তি করেছেন, এই আদেশের আওতায় তাঁরা আসবেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৯

সল্টলেকে অনাত্মীয়দের জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সরকারকে হস্তান্তর মূল্য দেওয়ার বিধি বুধবার খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ১৭ ধারা অনুযায়ী (অর্থাৎ যে চুক্তিতে ১৭ দফা শর্ত রয়েছে) যে সব জমির লিজ চুক্তি রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এই আদেশ কার্যকর হবে। ২০ ধারা অনুযায়ী (অর্থাৎ যে চুক্তিতে ২০ দফা শর্ত রয়েছে) যাঁরা লিজ চুক্তি করেছেন, এই আদেশের আওতায় তাঁরা আসবেন না। তবে অভিজ্ঞরা বলেন, সল্টলেকের অধিকাংশ জমির লিজই ১৭ ধারা অনুযায়ী করা। ফলে হাইকোর্টের এ দিনের আদেশে সল্টলেকের জমি-বাড়ির মালিকদের বড় অংশই ‘উপকৃত’ হবেন।

২০১২ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সল্টলেকের জমি হস্তান্তরে একটি নয়া বিধি চালু করে। ২০১২ সালের ২৫ জুন জারি করা সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৭ ধারায় লিজ জমির মালিকেরা রাজ্য সরকারকে কাঠা প্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা হস্তান্তর মূল্য দিলে রক্তের সম্পর্কের বাইরে অনাত্মীয়দের জমি হস্তান্তর বৈধতা পাবে। সেই বিজ্ঞপ্তির বৈধতাকেই চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা হয়। তার প্রেক্ষিতেই এ দিন বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি ইন্দ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রায় দেয়, সল্টলেকের জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে লিজ-মালিকদের (১৭ ধারার লিজ ডিড) রাজ্য সরকারকে ওই হস্তান্তর মূল্য দিতে হবে না।

২০১২ সালের ওই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে লিজ জমি বিক্রি করতে চেয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি অশোক দাস অধিকারীর আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন অজয় পোদ্দার নামে এক ব্যক্তি। বিচারপতি দাস অধিকারী রায় দেন, লিজ জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে কাঠা প্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা হস্তান্তর মূল্য দিতে হবে না। ওই মূল্য না দিয়েই জমি হস্তান্তর করা যাবে। ওই ব্যক্তির আইনজীবী নয়ন বিহানি এ দিন জানান, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার পাল্টা মামলা দায়ের করে। এ দিন সেই মামলার রায় দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।

আইনজীবী বিহানি জানান, সল্টলেকের লিজ জমি-র দলিল দু’ধরনের। একটি ১৭ ধারা অনুযায়ী, অন্যটি ২০ ধারা অনুযায়ী। ১৭ ধারা অনুযায়ী, লিজ নেওয়া জমির মালিকেরা তাঁদের জমি হস্তান্তর করতে পারতেন না। জমি হস্তান্তর করতে হলে, রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়ে রক্তের সম্পর্কের কাউকেই তা করতে হত। রাজ্য সরকারের এই নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করে ২০০৭ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের আদালতে মামলা দায়ের হয়। বিচারপতি করগুপ্ত রায় দেন, লিজ জমির হস্তান্তর আটকানো যাবে না। হস্তান্তরের জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতির প্রয়োজন নেই।

ওই আইনজীবী জানান, সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমির মালিকেরা সেই রায়ের প্রেক্ষিতে জমি হস্তান্তর করতে চেয়ে একাধিক মামলা দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার ২০১২ সালে হস্তান্তর মূল্য দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ হাইকোর্টের বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের আদালতে মামলা দায়ের হয়। বিচারপতি ভট্টাচার্য রায় দেন, হস্তান্তর মূল্য না দিয়েই জমি হস্তান্তর করতে পারবেন লিজ নেওয়া জমির মালিকেরা। আইনজীবী বিহানির দাবি, এই দু’টি মামলার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেনি। কিন্তু তাঁর মক্কেল অজয় পোদ্দারের করা মামলায় হাইকোর্ট তাঁর পক্ষে রায় দেওয়ায় রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। আইনজীবী বিহানি এ দিন আরও জানান, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই নির্দেশের ফলে ১৯৮৭-৮৮ সাল পর্যন্ত যে সব নাগরিক সল্টলেকের জমি লিজ নিয়েছেন, তাঁরা সকলেই উপকৃত হবেন।

salt lake lease land transfer pricing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy