শ্রদ্ধয়া, তপসা, সেবয়া’ এই ছিল মূলমন্ত্র। এই মন্ত্র নিয়েই ১২৫-এ পদার্পণ করল ব্রাহ্ম বালিকা শিক্ষালয়।
এই উপলক্ষে হয়ে গেল প্রভাতফেরি। অংশ নিলেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক, ছাত্রী এবং অভিভাবকরা। কাল বিকেলে স্কুলের মেরি কার্পেন্টার হলে ছিল জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। ছিলেন পবিত্র সরকার ও নবনীতা দেবসেন। আজ বিকেলে হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শিক্ষালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা জনা মজুমদার বললেন, “রাজা রামমোহন, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন এবং শিবনাথ শাস্ত্রীর আদর্শকে পাথেয় করে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এ বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। এটি ছিল শহরে মেয়েদের দ্বিতীয় স্কুল।”
সেই সময়ে মেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল অভাবনীয় বিষয়। মেয়েদের জীবন কাটত বাড়ির অন্দরমহলে। ছিল রক্ষণশীল সমাজের নানা বাধা। এর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল ব্রাহ্ম সমাজ। তাঁদের উদ্যোগেই ১৮৯০-এর ১৬ মে এই স্কুলের প্রতিষ্ঠা হয়। তখন মাত্র ১৮-১৯ জন ছাত্রী ছিল। এখন ছাত্রী সংখ্যা প্রায় দু’হাজার।
প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম শিবনাথ শাস্ত্রী। জগদীশচন্দ্র বসু, অবলা বসু, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, নীলরতন সরকার, আনন্দমোহন বসু, উমেশচন্দ্র দত্তের অবদানও কম ছিল না। মেয়েদের পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবদানও ছিল উল্লেখযোগ্য।
স্কুল শুরু হয়েছিল বিধান সরণির ভাড়া বাড়িতে। মির্জাপুর স্ট্রিট, হ্যারিসন রোডে ঠিকানা বদলের পরে ১৯১৪-য় বর্তমান বাড়িতে পঠন-পাঠন শুরু হয়। পরে গড়ে ওঠে মেয়েদের হস্টেল। এই হস্টেলের প্রথম অধ্যক্ষ জগদীশচন্দ্রের বোন লাবণ্যপ্রভা দেবী। শুধু বাংলার নানা জায়গাই নয় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্রীরা এখানে এসে থাকতেন।
স্কুলের শিশু বিভাগ গড়ে তোলার জন্য সে যুগের শিক্ষকদের ম্যাডাম মন্তেসরির কাছে প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হয়েছিল। লাঠি খেলার প্রশিক্ষণ দিতেন পুলিনবিহারী দাশ। গান শেখাতেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯১০ থেকে ১৯৩৬ পর্যন্ত স্কুলের সম্পাদক ছিলেন অবলা বসু। ১২৫ বছর উপলক্ষে বছরভর নানা অনুষ্ঠান চলবে বলে জনাদেবী জানালেন।