Advertisement
E-Paper

সিন্দুক-রহস্য জমজমাট, ফাঁস হতে দু’সপ্তাহ

পদিপিসির সেই বর্মিবাক্সের মতোই অপ্রতিরোধ্য কৌতূহল। কী আছে তার মধ্যে? তবে বাক্স নয়, প্রমাণ সাইজের লোহার সিন্দুক। একটা নয়, একেবারে তিন-তিনটে। তাদের বয়স একশো-দেড়শো বছর নয়, ভূতত্ত্ববিদদের একাংশের মতে, কমপক্ষে কয়েকশো বছর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৪ ০২:০০
উদ্ধার হওয়া সিন্দুক। রবিবার, গড়িয়াহাট থানায়।—নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া সিন্দুক। রবিবার, গড়িয়াহাট থানায়।—নিজস্ব চিত্র।

পদিপিসির সেই বর্মিবাক্সের মতোই অপ্রতিরোধ্য কৌতূহল। কী আছে তার মধ্যে? তবে বাক্স নয়, প্রমাণ সাইজের লোহার সিন্দুক। একটা নয়, একেবারে তিন-তিনটে। তাদের বয়স একশো-দেড়শো বছর নয়, ভূতত্ত্ববিদদের একাংশের মতে, কমপক্ষে কয়েকশো বছর।

প্রাচীন ওই সিন্দুকগুলি কী ধরনের ধনরত্ন, টাকাপয়সা কিংবা কোন ধরনের নিদর্শন এত কাল ধরে আগলে রেখেছে বা আদৌ কিছু রেখেছে কি না, তা অবশেষে জানা যাবে আগামী ১৬ জুন। ওই দিন আদালতের নির্দেশে ভূতত্ত্ববিদ, পুরাতত্ত্ববিদ এবং সিন্দুক তিনটির পুরনো ও নতুন মালিকদের সামনে খুলবে সেই রহস্য। আপাতত তিনটি সিন্দুকই রয়েছে গড়িয়াহাট থানার হেফাজতে। যার মধ্যে দু’টি তুলনায় একটু বড় (দেড় ফুট লম্বা ও দু’ফুট চওড়া)। অন্যটি সামান্য ছোট।

কিন্তু যে সিন্দুক নিয়ে এত কৌতূহল, সেগুলি পাওয়া গেল কী করে?

পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৮ সালে ১৮২, রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বাড়িটি বিক্রি করেন মালিক। যাঁদের এক জনের নাম মহামায়া পাল বলে জানিয়েছে পুলিশ। জায়গাটি বিক্রি করা হয় একটি জুতো প্রস্তুতকারক সংস্থাকে। ক্রেতার কাছ থেকে চুক্তি মতো টাকাও পেয়ে যান পুরনো মালিকেরা। এর পরেই ওই বাড়িটি ভেঙে শো-রুম নির্মাণের কাজ শুরু করে জুতো তৈরির সংস্থাটি। তখনই মাটি খুঁড়তে গিয়ে উদ্ধার হয় মুখবন্ধ একটি লোহার সিন্দুক।

পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকদের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জমির নতুন মালিক। পুরনো সিন্দুকটি দেখে তিনি আন্দাজ করেন, সেটি অন্তত কয়েকশো বছরের পুরনো। কিন্তু সবেমাত্র জায়গাটা কিনেছেন। ফলে পুরনো মালিকের কানে খবর গেলে তিনি সেটি চেয়ে বসতে পারেন। তাই সিন্দুক তোলার নির্দেশ দেন তিনি। এমনকী, পুলিশ এবং আশপাশের লোকেদের চোখের আড়ালে রাতের অন্ধকারে ক্রেন দিয়ে সিন্দুকটি তোলা হয় বলে পুলিশের দাবি। তার পরে রাতের অন্ধকারে সেটি পাচার করতে যায় ওই সংস্থা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রাতে মোটরবাইকে টহলরত পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় পাচারকারীরা। খবর যায় গড়িয়াহাট থানায়। পুলিশ আসে।

পুলিশের নজরদারিতেই শুরু হয় পুরো এলাকার মাটি খোঁড়া। মেলে আরও দু’টি একই মাপের লোহার সিন্দুক। সেগুলিও বেশ পুরনো। লোহার সিন্দুকের গায়ে মরচে ধরলেও গায়ে কোনও আঁচড় ছিল না। সেগুলি রক্ষার জন্য গড়িয়াহাট থানাতেই নিয়ে যাওয়া হয়। চেষ্টা করা হয় সিন্দুক খোলার। কিন্তু ততক্ষণে খবর পৌঁছেছে জমির পুরনো মালিকের কাছে। সিন্দুকের মালিকানা নিতে এ বার দু’পক্ষই উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু পুরনো সম্পত্তি সরকারের, তা কারও ব্যক্তিগত হতে পারে না। তাই কলকাতা পুলিশও আদালতের দ্বারস্থ হয়। গত ছ’বছর ধরে চলছিল সিন্দুক তিনটির মালিকানার আইনি লড়াই।

অবশেষ আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া, জায়গার পুরনো এবং নতুন মালিক পক্ষের সামনে সিন্দুক খুলতে হবে।

sindhuk gariahat p.s
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy