শুরু হয়েছে নতুন করে ছাউনি তৈরির কাজ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
গত বছরের অগস্ট মাসে ভেঙে পড়েছিল হাওড়া স্টেশনের ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ছাউনি। বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন যাত্রীরা। তা নিয়ে তদন্তও শুরু করেছিল রেল কর্তৃপক্ষ। তবে সেটা যে খোদ কর্তৃপক্ষেরই চরম অবহেলার ফল, তা স্বীকার করেছেন পূর্ব রেলের এক কর্তা। অবশেষে স্টেশনের সমস্ত বিপজ্জনক ছাউনি নতুুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ।
তদন্তে কী জানা গিয়েছে? পূর্ব রেলের এক কর্তা জানান, হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সের বেশির ভাগ ছাউনিই ব্রিটিশ আমলের।
কিন্তু এমন বহু ছাউনি বা শেড রয়েছে যেগুলি নিয়ম ভেঙে বাড়ানো হয়েছিল। ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ভেঙে পড়া ছাউনিটি সেরকম একটি শেড।
গত ১২ অগস্ট, সকাল ১০টার সময়ে হাওড়ার পুরনো কমপ্লেক্সের ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ৭৫ মিটার লম্বা ছাউনিটি ভেঙে পড়ে। সে সময় ১৪ নম্বর লাইনে দাঁড়িয়ে হাওড়া কালকা মেল। কিছু ক্ষণ আগেই নেমে গিয়েছিলেন যাত্রীরা। সে সময় ওই প্ল্যাটফর্মে যে ক’জন যাত্রী ছিলেন তাঁরা কোনও মতে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যান। ফলে বড় কোনও বিপদ ঘটেনি।
রেলের এক কর্তা জানান, পিলারের ক্ষমতার উপর নির্ভর করে ছাউনি তৈরি করা হয়। কারণ পিলারই গোটা ছাউনি ধরে রাখে। কিন্তু যদি কোনও ভাবে পিলারের ক্ষমতার থেকে বেশি ভার তার উপরে চাপানো হয় তা হলে তা ভেঙে পড়াই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে দাবি ওই কর্তার। তিনি বলেন, “ব্রিটিশ আমলের তৈরি ছাউনি ভাঙেনি। নিয়ম না মেনে যে অংশ বাড়ানো হয়েছে সেটাই ভেঙেছে।”
রেল দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা কী ভাবে তা করলেন? এই বিষয়ে রেলের কর্তারা কিছু জানাননি। সেই ভুল শুধরে ফের চালু হয়েছে ছাউনি সারাইয়ের কাজ। রেলের অন্য এক কর্তা জানান, ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বারে স্টেশনের সমস্ত ছাউনিগুলির পরীক্ষা শুরু করে পূর্ব রেল। দেখা যায় এক ও দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মেরও একই অবস্থা। ফলে সেগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে তৈরি হয়েছে পিলার। ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ক্ষেত্রে একই ভাবে নতুন পিলার করে কাজ শুরু হয়েছে।
এক্ষেত্রেও ভোগান্তি পিছু ছাড়েনি যাত্রীদের। দীর্ঘ দিন ধরে উন্মুক্ত ছিল ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। এ বার কাজ শুরু হওয়ায় সরু হয়ে গিয়েছে প্ল্যাটফর্ম। ফলে এক সঙ্গে ১৪ ও ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন এসে পড়লে যাত্রীদের সমস্যা হয়। এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “কাজ চলছে ফলে একটু অসুবিধা হবেই। চেষ্টা করছি দ্রুত কাজ শেষ করার।” রেল সূত্রের খবর, ৩১ মার্চের মধ্যেই কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy