Advertisement
০২ মে ২০২৪

হাজার দেড়েক বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে কী হবে, প্রশ্ন

আজ, সোমবার লোকসভা ভোটের দিন কলকাতার প্রায় দেড় হাজার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরা থাকছে না। বাছাই কয়েকটি এলাকা নয়, ওই সমস্ত বুথের অবস্থান সিঁথি থেকে সরশুনা সর্বত্রই রয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে। এই দেড় হাজার বুথ আবার পড়ছে ৫০০টির বেশি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের একটিতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাচ্ছে না।

আজ, সোমবার ভোটের দিন শহরের সর্বত্র এমন ছবি দেখা যাবে কি? রবিবার এই ছবি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের।  ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

আজ, সোমবার ভোটের দিন শহরের সর্বত্র এমন ছবি দেখা যাবে কি? রবিবার এই ছবি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।

সুরবেক বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৪ ০২:০৬
Share: Save:

আজ, সোমবার লোকসভা ভোটের দিন কলকাতার প্রায় দেড় হাজার বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রহরা থাকছে না। বাছাই কয়েকটি এলাকা নয়, ওই সমস্ত বুথের অবস্থান সিঁথি থেকে সরশুনা সর্বত্রই রয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে। এই দেড় হাজার বুথ আবার পড়ছে ৫০০টির বেশি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের একটিতেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাচ্ছে না। ফলে হিসেব মতো, কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর প্রহরাবিহীন থাকছে শহরের ৩০ শতাংশেরও বেশি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র।

এমনিতেই ভোটের আগের দিন, রবিবার কাশীপুর ও ফুলবাগান এলাকায় বিরোধীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে এবং একইসঙ্গে ওই দু’টি ঘটনায় কলকাতা পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্ব ও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এই অবস্থায় শহরের ৩০ শতাংশেরও বেশি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুপস্থিতিতে নির্বাচন কতটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে, তা নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা অবশ্য বলেন, “নির্বাচন কমিশন পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী না দিলে আমাদের কী করার আছে? তা-ও যতটা বাহিনী পেয়েছি, তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার যাতে হয়, সে ভাবে তাদের মোতায়েনের ব্যবস্থা করেছি।”

এ বার শহরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৪৯১ এবং বুথের সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজারের বেশি। কলকাতা পুলিশ ১০৫ কোম্পানি অর্থাৎ পৌনে সাত হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল। সেই জায়গায় সিআরপি, বিএসএফ, সিআইএফসব মিলিয়ে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৫০ কোম্পানির কিছু বেশি বা ৩৭৪৪ জন।

কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে তাঁরা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কথা মাথায় রেখেছেন। সেই মতো বাহিনী মোতায়েন হয়েছে ন’শোর কিছু বেশি কেন্দ্রে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে থাকা বুথের সংখ্যার নিরিখে কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হয়নি। স্বাভাবিক, স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রের ভিত্তিতে ন্যূনতম চার জন ও সর্বাধিক আট জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে এক-একটি কেন্দ্রে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে লালবাজার।

এই নির্বাচনে কলকাতার ১৪৯১টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মধ্যে ৮৫৬টিকে অতি স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সব ক’টি কেন্দ্রেই অবশ্য কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। অতি স্পর্শকাতর ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলি ছড়িয়ে রয়েছে খাস কলকাতার জোড়াসাঁকো, বেলেঘাটা, নারকেলডাঙা, কাশীপুর, সিঁথি, এন্টালি, মুচিপাড়া, টালিগঞ্জ এবং সংযোজিত এলাকার মধ্যে যাদবপুর, রিজেন্ট পার্ক, বেহালা, পাটুলি, পূর্ব যাদবপুর, হরিদেবপুর ও পঞ্চসায়রের মতো থানা এলাকায়। এ ছাড়া, ৬৩টি কেন্দ্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে স্পর্শকাতর হিসেবে।

তবে যে সব কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা সম্ভব হচ্ছে না, সেগুলিতে কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি অন্য ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে লালবাজারের দাবি। কলকাতা পুলিশের বক্তব্য, ৬৯টি থানা এলাকার প্রতিটিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জন করে জওয়ান একটি গাড়িতে টহল দেবেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নেই, সংশ্লিষ্ট থানা এলাকার এমন কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থেকে গণ্ডগোলের খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে আধা সামরিক বাহিনীর ৪ জওয়ান নিয়ে গাড়ি ছুটবে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যায়নি, এমন ভোটগ্রহণ কেন্দ্র প্রতিটি থানা এলাকায় গড়ে সাত-আটটি রয়েছে। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে সেই কেন্দ্রে পৌঁছতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বড়জোর চার-পাঁচ মিনিট লাগবে।”

কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কখন, কোথায় পাঠানো হবে, সেটা কলকাতা পুলিশই ঠিক করবে।

ভোট-প্রস্তুতির ফাঁকে জলযোগ। রবিবার নেতাজি ইন্ডোরে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

surbek biswas central force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE