মরণোত্তর পদ্মসম্মানে ভূষিত সত্যব্রত মুখোপাধ্য়ায় (জলুবাবু)। — ফাইল ছবি।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দুঁদে আইনজীবী প্রয়াত সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়কে পদ্মভূষণে সম্মানিত করা হল। তিনি বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্রে সমধিক পরিচিত জলুবাবু নামে। তৎকালীন বঙ্গ বিজেপির অন্যতম নেতা জলু কৃষ্ণনগর থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন। ২০২৩ সালে তিনি প্রয়াত হন।
২০১৯ সালে কৃষ্ণনগর থেকে জলুবাবুর আবার ভোটে লড়ার ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত ছিলেন অনুগামীরা। শুরু হয়ে গিয়েছিল দেওয়াল লেখাও। কিন্তু সে বার ভোটের টিকিট পাননি জলু। তাঁর বদলে বিজেপি প্রার্থী করেছিল অপেক্ষাকৃত নবীন কল্যাণ চৌবেকে। অনুগামীরা বলেন, সেই থেকেই জলু নিজেকে রাজনীতির আঙিনা থেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেন। ২০২৩ সালে কার্যত স্বেচ্ছা নির্বাসনের মধ্যেই মৃত্যু হয় সত্যব্রতের। বিজেপির বয়সের নীতিতে আটকে জলুর টিকিট কাটা যায়। জলু মরণোত্তর পদ্মভূষণ পাওয়ার পর অনুগামীদের অনেকেই মনে করছেন, লোকসভা ভোটের আগে সেই ক্ষতেই সম্ভবত প্রলেপ দিতে চেয়েছে বিজেপি। কিন্তু প্রলেপ কি সত্যিই পড়ল?
১৯৯৯ সালে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল ও বিজেপি জোটের প্রার্থী হয়েছিলেন জলু। সেখানেই জয়লাভ করে সাংসদ সত্যব্রত বাজপেয়ী মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় সার রাসায়নিক ও বাণিজ্য শিল্প দপ্তরের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন। তবে জলুর আরও একটি পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন নামী আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাই কোর্টে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর— জলুর গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা ছিল প্রায় গগনচুম্বি। নিজের দল তো বটেই এমনকি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও জলুবাবুর সুসম্পর্ক ছিল সর্বজনবিদিত।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, ‘‘সারা ভারতে যে ক’জন রাজনীতিবিদের নাম সততা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে উচ্চারণ করা হয়, জলুবাবু তাঁদের অগ্রগণ্য। কিঞ্চিত দেরি হল বটে তবে পদ্ম সম্মানে আমরা অত্যন্ত খুশি।’’ জলুবাবু পদ্ম সম্মান পাওয়ায় খুশি বামেরাও, সিপিএম নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক সুমিত দে বলেন, ‘‘জলুবাবুর মধ্যে পরিশীলিত রাজনৈতিক বোধ ছিল। ওঁর মধ্যে কোনও দিন উগ্রতা দেখিনি।’’ তৃণমূলের কল্লোল খাঁ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। লড়াই করেছি কিন্তু সৌজন্য কখনও লোপ পেতে দেননি জলুবাবু। সম্মান পাওয়াতে আমরা খুশি, তবে আরও আগে পাওয়া উচিত ছিল। লোকসভা ভোটের কথা ভেবে যদি এ সব যদি করা হয়, তবে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy