Advertisement
E-Paper

দলের অনুষ্ঠানেই ডাক নেই কৃষ্ণেন্দু ও সাবিত্রীর

সম্প্রতি মালদহে সরকারি মঞ্চে প্রকাশ্যেই বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী ও সাবিত্রী মিত্র। এই ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তার পরে এ দিন দলের কৃষক সংগঠনের জেলা সম্মেলনে আমন্ত্রিতদের তালিকা থেকে হঠাৎই নাম কাটা গেল এই দুই মন্ত্রীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:৩৬

সম্প্রতি মালদহে সরকারি মঞ্চে প্রকাশ্যেই বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী ও সাবিত্রী মিত্র। এই ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়েন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তার পরে এ দিন দলের কৃষক সংগঠনের জেলা সম্মেলনে আমন্ত্রিতদের তালিকা থেকে হঠাৎই নাম কাটা গেল এই দুই মন্ত্রীর। মালদহের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন ওই দু’জনকে আমন্ত্রণ জানাতে নিষেধ করে দিলেন।

কৃষ্ণেন্দু-সাবিত্রীর কাজিয়া নিয়ে এর মধ্যেই একাধিক বার বিব্রত হতে হয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। তৃণমূল নেত্রীর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই মন্ত্রীর উপরে তিনি এতই বিরক্ত যে, শেষ বার উত্তরবঙ্গ সফরের সময় মালদহে রাত কাটানোর সূচি বাতিল করে সুকনায় চলে যান। তৃণমূল সূত্রের খবর, মালদহের অনুষ্ঠান মঞ্চে সম্প্রতি দু’জনের মধ্যে যে বচসা হল, তাতে মুখ্যমন্ত্রীও ক্ষুব্ধ। এখন তাঁদের সামলাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পথে নেতৃত্ব। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রের বক্তব্য, দুই মন্ত্রীকে ‘সেন্সরের’ কথাও ভাবা হচ্ছে।

এ সবের মধ্যেই রবিবার মোয়াজ্জেম সাহেবের সিদ্ধান্ত প্রশ্ন তুলে দিয়েছে— তা হলে কি দু’জনের উপরে রাশ টানার কাজ শুরু হয়ে গেল? মোয়াজ্জেম নিজেও বলেছেন, ‘‘আমি কাউকে ছোট করতে চাই না। কিন্তু দল পরিচালনার ক্ষেত্রে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই আমাকে চলতে হয়। রাজ্য আমাকে যা নির্দেশ দিয়েছে, তা আমি কিসান খেতমজুর সংগঠনের নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি। এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’’

আগামী ১৩ জানুয়ারি দলের কিসান খেতমজুর সংগঠনের জেলা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে চাঁচলে। কিসান খেতমজুর সংগঠন সূত্রে জানা যায়, কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে, তা নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে আলোচনার সময় তিনিই দুই মন্ত্রীকে ওই সভায় আমন্ত্রণ না জানানোর নির্দেশ দেন।

স্বাভাবিক ভাবেই মোয়াজ্জেমের সিদ্ধান্ত মানতে গিয়ে অস্বস্তিতে কিসান খেতমজুর সংগঠনের নেতারা। এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সংগঠনের জেলা সভাপতি রঞ্জন সিংহ জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘মোয়াজ্জেম সাহেবের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত।’’ মন্ত্রীদের সঙ্গে যে তাঁর সরাসরি কথা হয়নি, তা রঞ্জনবাবু মেনে নেন। তবে তাঁর দাবি, ‘‘ওই দিন জেলার দুই মন্ত্রী জেলায় থাকবেন না। তাঁরা নিজেরাই সে কথা জানিয়েছেন।’’

শুধু এই সভাই নয়, কৃষ্ণেন্দু-সাবিত্রীকে নিজেদের বিধানসভা এলাকার বাইরে দলের কোনও অনুষ্ঠানে যেতেও বারণ করা হয়েছে। কিসান সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদিন মনসুর বলেন, ‘‘মন্ত্রীরা নিজেদের বিধানসভা এলাকার বাইরে কোনও কর্মসূচিতে যাবেন না বলে জেলা তৃণমূল সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন। এ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ রয়েছে বলে তিনি জানান।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘তাই ইচ্ছে থাকলেও আমরা দুই মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে পারছি না।’’

আর এই নির্দেশকে ঘিরেই মালদহের তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই ঘটনায় নির্বাচনের আগে দলে প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন দুই মন্ত্রীর অনুগামীদের অনেকেই। যদিও উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কোথাও কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে কি না, তা আমি জানি না। সেখানে কেউ আমাকে ডাকছে বা বাদ দিচ্ছে, তা-ও আমি জানি না।’’ আর খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমি দলকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যেই প্রতিটি পদক্ষেপ করছি। কে আমাকে আমন্ত্রণ করছে কে করছে না তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাচ্ছি না।’’

state news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy