Advertisement
E-Paper

মহালয়ায় ফের অনশনের হুমকি কুণালের

বিভিন্ন নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগার পাশাপাশি বিচার না-পাওয়ার অভিযোগ তুলে বেশ কয়েক বার জেলে অনশনে বসেছেন তিনি। রীতিমতো হুমকি দিয়ে বন্দি অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। এ বার ন্যায়বিচারের দাবিতে মহালয়ার দিন থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলে ফের অনশন শুরু করবেন বলে আদালতে দাঁড়িয়েই হুমকি দিলেন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৪
ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কুণাল ঘোষ। সোমবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

ব্যাঙ্কশাল কোর্টে কুণাল ঘোষ। সোমবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

বিভিন্ন নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগার পাশাপাশি বিচার না-পাওয়ার অভিযোগ তুলে বেশ কয়েক বার জেলে অনশনে বসেছেন তিনি। রীতিমতো হুমকি দিয়ে বন্দি অবস্থায় আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন। এ বার ন্যায়বিচারের দাবিতে মহালয়ার দিন থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলে ফের অনশন শুরু করবেন বলে আদালতে দাঁড়িয়েই হুমকি দিলেন সাংসদ কুণাল ঘোষ।

সারদা ট্যুর ও ট্রাভেলসের মামলায় অভিযুক্ত কুণালকে সোমবার কলকাতা নগর ও দায়রা আদালতে বিচারক অরবিন্দ মিশ্রের এজলাসে তোলা হয়। একই সঙ্গে হাজির করানো হয় সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং ওই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে। সিবিআইয়ের আইনজীবী উপস্থিত থাকলেও অভিযুক্তদের পক্ষে এ দিন কোনও আইনজীবী ছিলেন না। একটানা আধ ঘণ্টা ধরে নিজের পক্ষে নিজেই সওয়াল করেন কুণাল।

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত অন্যদের জামিন, বিশেষ চিকিৎসা-সহ নানান সুযোগ-সুবিধে দেওয়া হলেও তাঁকে তা দেওয়া হচ্ছে না বলে কুণাল আগে অভিযোগ করেছেন। এ দিন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, তাঁর আবেদনে কান দেওয়া হচ্ছে না। বিচারকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘শুধু আমাদের আটকে রাখার জন্য এই মামলাকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে আমি আপনার কাছে দু’টি পিটিশন (আবেদন) দাখিল করেছি। তাতে আমার সব বক্তব্যই আছে।’’

বিচারক ওই অভিযুক্তকে জানিয়ে দেন, তিনি তাঁর একটি আবেদন পেয়েছেন। ওই আবেদনে কী আছে, কুণাল তা বলতে শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, একই সময়ে আলিপুর আদালতে শুরু হওয়া মামলায় তিন-তিনটি চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। অথচ এই মামলায় একটিও চার্জশিট জমা পড়েনি। এক বছরে আর কেউ গ্রেফতারও হয়নি। শুধু তাঁদের তিন জন (কুণাল, সুদীপ্ত, দেবযানী)-কে দিনের পর দিন আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে। তিনি আদালতের কাছে আবেদন করেন, তদন্তে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, সিবিআইয়ের কাছে তা জানতে চাওয়া হোক। অবিলম্বে এই মামলার চার্জশিট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হোক তাদের।

বিচারক তখন সিবিআইয়ের আইনজীবী ডি এন পাণ্ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনারা কবে চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দেবেন?’’

সিবিআইয়ের আইনজীবী নির্দিষ্ট কোনও তারিখের কথা জানাননি। তিনি এই মামলায় ফের বৃহত্তর ষড়যন্ত্র এবং তদন্তের জন্য আরও তথ্য সংগ্রহের কথা বলতে শুরু করায় তাঁকেও কটাক্ষ করেন কুণাল।

নিজের দু’টি পিটিশন বা আবেদনের উল্লেখ করে কুণাল আর্জি জানান, সারদা রিয়েলটি এবং সারদা ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস মামলা দু’টিকে অবিলম্বে সংযুক্ত করা হোক। অন্যান্য অভিযুক্ত এবং মুখ্যমন্ত্রীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার দাবিও তোলেন ওই সাংসদ। তাঁর দাবি, সদ্য ধৃত মিডিয়া ব্যবসায়ী রমেশ গাঁধীকেও একই মামলার আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে জেরা করতে হবে অন্য বেসরকারি লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুকেও।

কুণাল আদালতে আর্জি জানান, তিনি যাতে তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা সই করে তুলতে পারেন, তার নির্দেশ দেওয়া হোক। জেলে তিনি যা লিখেছেন, সেগুলো ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্যও বিচারকের কাছে আবেদন জানান ওই সাংসদ। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে টাকা ফেরত দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়নি। মিঠুন চক্রবর্তীর টাকা ফেরতের উল্লেখ করে কুণাল দাবি করেন, তাঁকেও সারদা থেকে নেওয়া টাকা ফেরতের সুযোগ দেওয়া হোক।

কুণালের আবেদন মামলার সঙ্গে যুক্ত নয় বলে মন্তব্য করেন বিচারক। ওই সাংসদ ফের অনশনে বসবেন বলে হুমকি দেওয়ায় জেল সুপারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তার পরেই জেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কুণালকে আদালতের পিছনের গেট দিয়ে বার করে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িতে বসে কুণাল ফের চিৎকার করে বলতে থাকেন, এই মামলায় অন্যান্য অভিযুক্ত এবং মুখ্যমন্ত্রীকে জেরা করতে হবে। তাঁর দাবি না-মানলে তিনি যে মহালয়া থেকে অনশনে বসবেন, তা-ও বারবার মনে করিয়ে দেন রাজ্যসভার ওই সদস্য।

kunal ghosh hunger strike mahalaya kunal ghosh hunger strike kunal ghosh mahalaya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy