পথে পথে: বামফ্রন্ট ও সহযোগী মিলে ১৭ দল এবং প্রদেশ কংগ্রেসের মিছিল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে উপলক্ষ করে প্রথম বার প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে গিয়েছিলেন বামফ্রন্টের রাজ্য নেতৃত্ব। গাঁধীর জন্মের দেড়শো বছর পূর্তিতে আয়োজিত প্রদর্শনী ঘুরে দেখার অবসরে দু’পক্ষের নেতারা আলোচনাতেও বসেছিলেন। সেই গাঁধীকে সামনে রেখেই ফের একসঙ্গে শহরের পথে নামল বাম ও কংগ্রেস। মিছিলের বহর দেখে উৎসাহিত দু’পক্ষের নেতৃত্বই রাজ্যের সর্বত্র ধারাবাহিক ভাবে যৌথ কর্মসূচির ডাক দিলেন। পুরভোটের আগে সংগঠনকে সচল রাখাই তাঁদের লক্ষ্য।
গাঁধীর মৃত্যুদিবসে সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ রক্ষার দাবিতে ও বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার এন্টালির রামলীলা ময়দান থেকে বেলেঘাটায় গাঁধী ভবন পর্যন্ত মিছিলে শামিল হয়েছিল বামফ্রন্ট ও সহযোগী মিলে ১৭ দল এবং প্রদেশ কংগ্রেস। এই ১৮ দল ছাড়াও যোগ দিয়েছিল ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউপিআই)। গাঁধী-স্মরণে হলেও মিছিলের মূল প্রতিপাদ্যই হয়ে উঠেছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) বিরোধিতা। ট্যাবলো এবং সিএএ, এনআরসি-বিরোধী পোস্টার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিধান ভবন থেকে এসেছিলেন কংগ্রেস ও যুব কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। মূল মিছিলে কোনও দলের পতাকা ছিল না। কংগ্রেস হোক বা বাম, যাঁরা মিছিলে হাঁটছিলেন, তাঁদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা।
মৌলালি, শিয়ালদহ হয়ে বেলেঘাটার রাস্তা ধরে মিছিল চলাকালীন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল যান চলাচল। বেলেঘাটার গাঁধী স্মৃতি ভবনে শ্রদ্ধা জানিয়ে বাইরে জমায়েতে বক্তা ছিলেন বিমান বসু, প্রদীপ ভট্টাচার্য, স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, নরেন চট্টোপাধ্যায়, অশোক ঘোষ, পার্থ ঘোষ, অনুরাধা পূততুণ্ডেরা। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু বলেন, ‘‘ধর্মীয় বিভাজন ঘটিয়ে মানুষের সব সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার যে চক্রান্ত চলছে, তার বিরুদ্ধে এক দিন মিছিল করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। বিজেপি বিভাজন করছে আবার জলঙ্গিতে সিএএ-বিরোধী জমায়েতে তৃণমূল গুলি চালাচ্ছে। বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সব শক্তিকে সর্বত্র আমাদের সংহত করতে হবে।’’ একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘সব রকম পতাকা নিয়ে, সবাইকে একজোট করে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি। গ্রামে-শহরে এই লড়াইকে ছড়িয়ে দিন। তৃণমূল সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে মিছিল করে আবার জলঙ্গিতে গুলি চালায়! তারা চায় না, অন্য আর কেউ প্রতিবাদ করুক!’’ একই সঙ্গে প্রদীপবাবুর ঘোষণা, ‘‘জলঙ্গি হোক বা দিল্লির জামিয়া মিলিয়া, গুলি চালিয়ে এই প্রতিবাদ মিছিল বন্ধ হবে না!’’
রাজ্য জুড়েই এ দিন যৌথ ভাবে পথে নেমেছিল বাম ও কংগ্রেস। দিল্লিতে থাকায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র অবশ্য কেন্দ্রীয় মিছিলে ছিলেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy