Advertisement
E-Paper

আন্দোলনে বন্ধ মদের পাইকারি সরবরাহ

রাজ্য সরকার রীতিমতো নিগম গড়ে যাবতীয় মদের পাইকারি জোগান নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রমাদ গুনছেন বেসরকারি পাইকারি মদ সংস্থার কর্মীরা। রুজিরোজগারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০৩:২৬

রাজ্য সরকার রীতিমতো নিগম গড়ে যাবতীয় মদের পাইকারি জোগান নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রমাদ গুনছেন বেসরকারি পাইকারি মদ সংস্থার কর্মীরা। রুজিরোজগারের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন তাঁরা।

সোমবার শুরু হয়েছে মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কর্মবিরতি। কর্মীদের প্রতিনিধি অনির্বাণ গুহ জানান, এই প্রতিবাদ চলবে অনির্দিষ্ট কাল। এ দিন গুদাম থেকে দোকানে মদ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। অনির্বাণবাবুর দাবি, তিন দিন এ ভাবে পাইকারি সরবরাহ বন্ধ থাকলেই দোকানে মদ বিক্রি বন্ধ হয়ে যাবে। আন্দোলনকারীদের আশা, সরবরাহে টান পড়লে রাজ্য সরকার তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে।

তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, সব সংস্থার কর্মী এই প্রতিবাদে সামিল হননি। কিছু সংস্থার মালিক পক্ষ মানিকতলা থানায় অভিযোগ করেছে, গুদাম থেকে মদ বার করতে বাধা দিচ্ছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ।

রাজ্যে পাইকারি মদ সংস্থার সংখ্যা ১০২। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে এই ব্যবসার সঙ্গে ১৭ হাজার মানুষের রুজিরুটি জড়িয়ে রয়েছে। গত ডিসেম্বরে রাজ্য সরকার জানায়, পাইকারি মদ সরবরাহের বেসরকারি ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হবে। সরকার নিগম গড়ে নিজেরাই এই ব্যবসা সামলাবে। সরকারি সূত্রের খবর, মদ রাখার জন্য ইতিমধ্যেই ১৫টি গুদাম তৈরি হয়ে গিয়েছে। আরও সাতটি তৈরি করা হবে।

বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের কী হবে, সেই প্রশ্ন তো আছেই। একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে পাইকারি ব্যবস্থার সরকারি পরিকাঠামো তৈরি করার যুক্তি নিয়েও। আর্থিক টানাটানিতে জেরবার রাজ্য এই নতুন পরিকাঠামো তৈরির খরচ কী ভাবে জোগাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে নবান্নের অন্দরমহলেও। সরকারি সূত্রের খবর, এ ধরনের পরিকাঠামো তৈরি করতে ৪০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। সরকারি নিগম চালানোর খরচও কম নয়।

খরচের সঙ্গে উঠছে নীতির প্রশ্নও। শিল্পমহলের একাংশের প্রশ্ন, রাজ্য সরকার সরাসরি মদ ব্যবসায় নামবে কেন? নবান্ন তুলে ধরছে তামিলনাড়ু, ওড়িশা, কর্নাটক, ঝাড়খণ্ড-সহ ১২টি রাজ্যের উদাহরণ। ওই সব রাজ্যে মদের পাইকারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে সরকারি নিগম। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, পাইকারি মদের একচেটিয়া ব্যবসা ভাঙতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাইকারি সংস্থাগুলি বাড়তি লাভের জন্য চড়া দাম ধার্য করে। সরকারি নিগম এই বাড়তি দামে রাশ টানবে এবং সরকারের আয় বাড়াবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট দফতরের।

তবে মদ ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, যে-সব রাজ্যে সরকারি নিগম রয়েছে, সেখানে আগে মদ ব্যবসায় ঢালাও কারচুপি ও বেআইনি কাজকর্ম চলত। তাতে সরকারি রাজস্ব আদায় মার খেত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে মদ বিক্রির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ ১০০ শতাংশ। এবং ই-আবগারি চালু হওয়ায় কর জমা দেওয়ার গোটা প্রক্রিয়াই চলে অনলাইনে। মদ থেকে রাজ্য সরকার চার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায়। এবং বার্ষিক ১৮ শতাংশ হারে বেড়ে চলেছে এই রাজস্ব। তাই অন্তত এ ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা চলে না।

Protest Liquor Wholesaler Business
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy