বৈশাখী চমক। মঙ্গলবার রাতে ধর্মতলায় সুমন বল্লভের তোলা ছবি।
প্রয়োজনের তুলনায় নস্যি! তবু মেঘ-ঝড়-বৃষ্টি যে কলকাতার পথ ভুলে যায়নি, মঙ্গল-রাত্রিতে তার কিছুটা প্রমাণ পেয়েই যেন বর্তে গেলেন নগরবাসী!!
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পেরোতেই উত্তরে বরাহনগর-শ্যামবাজার-বাগবাজার থেকে দক্ষিণে পাটুলি-গড়িয়া পর্যন্ত প্রায় সর্বত্রই ধেয়ে আসে ঝড়। দহনক্লান্ত নগরে স্বস্তির প্রথম প্রলেপ। তবে বৃষ্টির কার্পণ্য ছিলই। কোথাও নিতান্ত ছিটেফোঁটা, কোথাও টিপটিপিয়ে বৃষ্টি নামল। কিন্তু আশ মিটল না। বরং বেড়ে গিয়েছে তৃষ্ণা। তেমন বৃষ্টি না-হোক, বৃষ্টির গন্ধমাখা হাওয়ার স্পর্শ পেতে নগর নেমে আসে রাস্তায়। আট থেকে আশি, সকলেই মাথায়-মুখে শান্তিবারি মেখে নিতে উন্মুখ। যানবাহন থামিয়ে আরোহীরা পথে নেমে মেঘমেদুর গ্রীষ্মরাত্রির উন্মাদনাকে মোবাইল-বন্দি করতে থাকেন। যত কমই হোক, বৃষ্টি তো! তাকে স্বাগত জানাতে রাস্তায় নামেন রাত-অফিসের অনেক কর্মী।
ভোটের গরম আর বৈশাখের দহন পাল্লা দিয়ে দাপট দেখাচ্ছিল কলকাতায়। মহানগরে ভোট মিটতেই নামল বৃষ্টি। এর আগে ২১ মার্চ, আইপিএলে ভারত বনাম পাকিস্তান ইডেন-ম্যাচের দিন শেষ কালবৈশাখী পেয়েছিল কলকাতা। দেরি করে শুরু করতে হয়েছিল খেলা। তার পরে দীর্ঘ দহনে জ্বলতে হয়েছে মহানগরীকে। এর মধ্যে অন্যান্য জেলায় অল্পবিস্তর কালবৈশাখী হলেও গত দেড় মাসে তার মুখ দেখেনি কলকাতা। অবশেষে মঙ্গলের মেঘবৃষ্টিতে মিলল স্বস্তি।
কোথা থেকে এল এই বৃষ্টি? আবহবিদেরা বলছেন, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে। তার ফলে সাগর থেকে হুড়মুড়িয়ে জলীয় বাষ্প ঢুকছিল। এক দিকে গরম এবং অন্য দিকে বাড়তি জোলো হাওয়ার জন্য বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতির জেরেই কয়েক দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু কলকাতার কপাল খুলছিল না। রাতে সেই আফসোস কিছুটা হলেও মিটেছে। আজ, বুধবারেও কলকাতায় ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক কর্তা বলেন, এই পরিস্থিতির ফলে আগামী কয়েক দিন নাকাল করা গরমে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে। বিক্ষিপ্ত ভাবে হতে পারে ঝড়বৃষ্টিও। হাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এ দিন প্রথমে ঝ়়ড় এবং ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয় উত্তর ও পূর্ব কলকাতায়। তার পরে তার প্রসাদ পায় মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতা, শহরতলিও। সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি-সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে ঝড়বৃষ্টির খবর এসেছে। ঝড়বৃষ্টিতে রাতের তাপমাত্রা নেমে যায়। কিছু কিছু এলাকায় ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy