Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari

আপনাকে নন্দীগ্রামেই দাঁড়াতে হবে, খেজুরি থেকে মমতার উদ্দেশে পাল্টা হুঙ্কার শুভেন্দুর

খেজুরির সভায় শুভেন্দু অধিকারী, বাবুল সুপ্রিয় এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়।

খেজুরির সভায় শুভেন্দু অধিকারী, বাবুল সুপ্রিয় এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খেজুরি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০২
Share: Save:

দু’জায়গায় নয়, আপনাকে নন্দীগ্রাম থেকেই লড়তে হবে— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে খেজুরির সভা থেকে এই ভাষাতেই চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। মমতা ভোটের সময় পাঁচ বছর অন্তর নন্দীগ্রামে আসেন বলেও কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। সভায় বাবুল সুপ্রিয় বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ভবানীপুরে ভয় পেয়েছেন বলেই নন্দীগ্রামে দাঁড়াতে চাইছেন।

সোমবার নন্দীগ্রামের সভা থেকে তৃৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেন, তিনি নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হতে পারেন। তার জবাবে আজ মঙ্গলবার বিজেপির সভা ছিল খেজুরিতে। সভায় শুভেন্দুর পাশাপাশি ছিলেন বাবুল সুপ্রিয় ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। ছিলেন বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বও।

সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক ভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। কোথায় সভা করছেন, তা-ও বলতে পারছেন না। নন্দীগ্রামের শহিদদের নামও কাগজ দেখে পড়তে হচ্ছে। ভোটের জন্য পাঁচ বছর পর পর আসেন।’’ তবে কবে, কোথায়, কী ঘটনা ঘটেছিল— সব তাঁর মুখস্থ বলে জানিয়ে এক এক করে পর পর শুনিয়ে যান নন্দীগ্রামের শহিদদের নাম। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় কার কবে মৃত্যু হয়েছিল, সে সব ইতিহাসও বলে যান ‘ভূমিপুত্র’ শুভেন্দু।

দু’জায়গায় প্রার্থী হওয়ার প্রসঙ্গে মমতা সোমবার বলেছিলেন ভবানীপুর বড় বোন আর নন্দীগ্রাম মেজো বোন। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেেন, ‘‘বড়় বোন, মেজো বোন, যাই হোক, দু’জায়গায় দাঁড়াতে দেব না আপনাকে। নন্দীগ্রামেই দাঁড়াতে হবে। কিন্তু কার ভরসায় নন্দীগ্রামে দাঁড়াবেন? আমপানের টাকা চোর, আর এখন বলছে করোনার টিকা চোর। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর লেটারপ্যাড তৈরি রাখুন।’’

এই প্রসঙ্গেই শুভেন্দু টেনে আনেন সিঙ্গুরের কথাও। তাঁর কথায়, ‘‘উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সিঙ্গুরের ইতিহাস লিখেছেন। তার একটা অংশ পাঠ্য বইয়েও রয়েছে। কিন্তু সেখানে নন্দীগ্রামের জন্য এক লাইনও নেই। উনি আসলে নন্দীগ্রামকে ভুলে গিয়েছেন। আমি সিঙ্গুরকে ছোট করতে চাই না। কারণ সিঙ্গুরে শুকনো ঘাসফুলকে সরিয়ে পদ্ম ফুটিয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায়।’’

তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় প্রতিটি সভায় বলেন, তাঁর নাম নিয়ে কেউ অভিযোগ করতে পারেন না। ‘ভাইপো’ সম্বোধন করেন। শুভেন্দু অবশ্য এ দিন নাম নিয়েই স্লোগান দেন, ‘‘তোলাবাজ ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে হঠাও।’’ মমতাকে নিশানা করে শুভেন্দুর কটাক্ষ, উনি তোলাশ্রী, মিথ্যাশ্রী পুরস্কার পাবেন।

তবে এ দিন শুভেন্দুর সভায় যোগ দিতে আসার পথে আক্রান্ত হন বিজেপি কর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের দিকে। এই নিয়ে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, ‘‘পুলিশকে সাত দিন সময় দিলাম। তার পর আমি তমলুকে বসে থাকব।’’

শুভেন্দুর বক্তব্য:

এখন একটাই লক্ষ্য, তোলাবাজ ভাইপোকে সরাতে হবে

তবে আমি শুধু বলব, উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এত মিথ্যে কথা বলেন কী করে

আমার মানসিকতা ভাল নয়, কারণ, এই সভায় আসার পথে হামলা হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের উপর

কারণ, ওখানে লকেট চট্টোপাধ্যায় মরা ঘাসফুল সরিয়ে পদ্মফুল ফুটিয়েছে

আপনি সিঙ্গুর নিয়ে বই লিখেছেন, খুব ভাল, আমি সিঙ্গুরকে অসম্মান করতে চাই না

কিন্তু আমার সব কিছু মুখস্থ, সব নাম মুখস্থ, কারণ, আমি এলাকার ছেলে

কাগজ দেখে বলতে হয়, কারা শহিদ হয়েছিলেন

নন্দীগ্রামে এসে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) জায়গার নাম পর্যন্ত মনে করতে পারেন না

নন্দীগ্রামেই আপনাকে প্রার্থী হতে হবে

কিন্তু তা করলে হবে না, আপনাকে এক জায়গাতেই দাঁড়াতে হবে

উনি (মমতা) বলছেন, নন্দীগ্রাম আর ভবানীপুরে দাঁড়াবেন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Suvendu Adhikari Khejuri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE