Advertisement
E-Paper

২৭শে পর্যন্ত আধাসেনাই ভরসা রাজ্যে

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, লিখিত ভাবে না-হলেও রাজ্য সরকার বার্তা পেয়েছে, কমবেশি ২০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা করছে কমিশন। তারাই ভোট-পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৯ ০৪:১৯

ভোট তো মিটল কোনও ভাবে। ভোট-পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে? চিন্তায় পড়ে গিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। তবে যত দিন নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ার বলবৎ রয়েছে, তত দিন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি তাদের হাতে থাকায় অনেকটাই স্বস্তিতে পুলিশকর্তারা। কমিশন সূত্রের খবর, অন্তত ২৭ মে পর্যন্ত ২০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা রাজ্য পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করবে। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক করেছেন কমিশনের কর্তারা। তার পরেই রাজ্য প্রশাসনকে সোমবার এই আশ্বাস দেয় কমিশন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, লিখিত ভাবে না-হলেও রাজ্য সরকার বার্তা পেয়েছে, কমবেশি ২০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা করছে কমিশন। তারাই ভোট-পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে। রাজ্যের বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে জানান, ২০০ কোম্পানি বাহিনী আপাতত রাজ্যে থেকে যাচ্ছে। গণনা এবং ভোট-পরবর্তী অশান্তি রুখতে রাজ্য পুলিশকে সাহায্য করবে তারা। বিশেষ করে ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরে পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি প্রশাসনের পক্ষে সুবিধাজনক হবে বলে মনে করছেন পুলিশকর্তাদের অনেকেই। তাঁদেরই এক জনের কথায়, “কমিশন বিষয়টি দেখছে। আমরা শুনছি, আনুমানিক ২০০ কোম্পানি বাহিনীর ব্যবস্থা করবে কমিশন। তবে নিশ্চিত করে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।” সপ্তম দফার ভোটে রাজ্যে ৭১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল। ২০০ কোম্পানি রাজ্যে রেখে অবশিষ্ট ৫১০ কোম্পানিকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রশাসনিক হিসেবে এই মুহূর্তে রাজ্যে আছে ৮২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। তবে তাদের বেশির ভাগই স্ট্রংরুমের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছে। তাই আইনশৃঙ্খলার কাজে তাদের ব্যবহার করা সম্ভব নয়। সেই জন্যই অতিরিক্ত বাহিনীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্প্রতি ভোট-পরবর্তী হিংসা রুখতে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর অবস্থান অতিরিক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন রাখার সম্ভাবনায় আরও জলবাতাস দিয়েছে বলে মনে করছেন আধিকারিকদের অনেকে। বিজেপি নেতা পীযূষ গয়াল এ দিন দিল্লিতে কমিশনের দফতরে গিয়ে জানান, পশ্চিমবঙ্গে ভোট-পরবর্তী হিংসার আশঙ্কা আছে। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-কর্মীরা এখনও আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে যত দিন নির্বাচনী আচরণবিধি বলবৎ থাকছে, আধাসেনা যাতে তত দিন রাজ্যে থাকে, তার ব্যবস্থা করা হোক।

বিজেপির দাবি, শুধু ভোটগণনা কেন্দ্রে নয়, তার বাইরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দিতে হবে। নইলে রাজ্য পুলিশ গোলমালে ইন্ধন জোগাতে পারে। বিশেষত ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের পর থেকে সেখানে অশান্তি চলছে। তার মোকাবিলায় ভাটপাড়ার একটি অংশে ১৪৪ ধারা জারি করতে হয়েছে। সেই পরিস্থিতির উল্লেখ করে ভোটের ফল প্রকাশের পরে অশান্তি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরাম। সেই জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আরও ১৫ দিন রাজ্যে রাখার অনুরোধ জানিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ভোটের ফলাফল বেরিয়ে যাওয়ার পরে কমিশনের নিয়ন্ত্রণ উঠে গেলে কী হবে?

প্রশাসন ও পুলিশ মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, কমিশনের এমসিসি বা আদর্শ আচরণবিধি উঠে গেলে আধাসেনার বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় চলে যাবে। ফলে তখন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি কেন্দ্রের উপরে নির্ভর করবে। এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, “পরিস্থিতি কেমন থাকে, তার উপরেই সব কিছু নির্ভর করছে। তবে রাজ্য পুলিশই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রক্ষায় সমর্থ। দেখা যাক, কী হয়।”

Lok Sabha Election 2019 CRPF Violence Election Commission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy