প্রতীকী ছবি।
এক দিকে মা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, অন্য দিকে সন্তানেরা দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছেন আপনজনদের বিরুদ্ধে। মা’কে মারধর ও অ্যাসিড খাইয়ে দেওয়া নিয়ে বছর পঁচিশের রুপসান ও তার এগারো বছরের বোন মমতা নাগাড়ে বলে চলেছেন, ‘‘দাদু আর চাচাদের শাস্তি চাই। জানি, নিজের আত্মীয়দের সঙ্গে এই লড়াই প্রায় জলে দাঁড়িয়ে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করার মতো, তবু ওঁদের শাস্তি চাই।’’
মঙ্গলবার, কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ায় আনসুরা বিবি নামে ওই মহিলাকে মারধর করে তার গলায় অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মহিলার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের উপরে। ঘটনার পর থেকে গ্রামের বাড়িতেও থাকতে সাহস পাচ্ছেন না রুপসান। বহরমপুরে এক পরিচিতের কাছে রাত কাটাচ্ছেন তিনি।
এ দিনও তাঁর অভিযোগ, ‘‘কেবল কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার জন্য মা’কে এমন অত্যাচার করল ওরা। ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে, এরা আমার আপনজন!’’ আর মমতা বলছে, ‘‘আমার চাচারা খুব বাজে লোক, তা বলে মাকে আমার সামনে ও ভাবে মারধর করে অ্যাসিড ঢেলে দেবে ভাবতেও পারিনি।’’ বাধা দিতে গিয়ে তার গালেও অ্যাসিড পড়েছে।
কেশবপুরের বছর পঞ্চাশের আনসুরা বিবি ভোট দিয়েছিলেন কংগ্রেসকে। আর স্বামীর মুখের সামনে বলেছিলেন তিনি হাত চিহ্নেই ভোট দিয়েছেন। আর তাতেই ক্ষেপে ওঠে গোটা শেখ পরিবার। কারণ এলাকার কংগ্রেস নেতা আনসুরার দাদার সঙ্গে সঙ্গে শেখ পরিবারের তৃণমূল নেতা সাফিয়ার রহমানের হাতাহাতি হয় ভোটের দিন সকালে।
ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি, অত্যাচার চালিয়ে আনসুরার মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে পরিবারের ৮ সদস্যের বিরুদ্ধে। বাড়িতে থাকা আনসুরার ছেলে রুপসান শেখ বুধবার ইসলামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। আর তার পর থেকে চাপ বাড়ছে রুপসানের উপরে।
এক কংগ্রেস নেতা বলছেন, ‘‘এখন তৃণমূল ও রুপসানের আত্মীয়রা চাপ দিচ্ছে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য। ফলে ঘটনার আরও এক সাক্ষী বোন মমতাকে নিয়ে ঘর ছেড়েছে সে। এমনকি তার বাবা তাহাসেন শেখও এখন দাদা ভাইদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
রানিনগরের কংগ্রেস বিধায়ক ফিরোজা বেগম বলছেন, ‘‘ওই মহিলার স্বামী হাসপাতালে আমাদের দেখলেই প্রায় তেড়ে আসছেন। আমরা নিজেদের সংযত রেখেছি এখনও।’’
জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলছেন, ‘‘আমরা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। মহিলা একটু সুস্থ হলেই তাঁর সঙ্গে কতা বলে তদন্ত শুরু করব।’’ কিন্তু তত দিনে অভিযুক্তেরা যদি উধাও হয়ে যায়? স্পষ্ট জবাব দিতে পারেননি পুলিশ সুপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy