একসময়ে তাঁর হাত ধরেই শহরে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল বিজেপি। দলের দুর্দিনে পাঁচ বার বিধানসভা ও একবার লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন তিনি। হয়েছিলেন বিজেপি জাতীয় পরিষদের সদস্য। এ বার লোকসভা নির্বাচনের মুখে দলীয় প্রার্থী ও দলের সমালোচনায় সরব হলেন এই প্রবীণ বিজেপি নেতা প্রদীপ পট্টনায়েক।
দলের প্রার্থী তথা রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন ষাটোর্ধ্ব এই নেতা। ১৯৮০ সাল থেকে জেলা জুড়ে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন। ১৯৮২ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০০৬ সালে তৃণমূলের সঙ্গে জোট হওয়ায় তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। একসময়ে প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল তাঁর। এর পরে ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন প্রদীপ। জেতেননি। তবে ২০১৬সাল পর্যন্ত টানা বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন তিনি। গত বিধানসভায় দিলীপ ঘোষের হয়ে প্রচারেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে গত দু’বছর বিজেপির কোনও কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না প্রদীপকে। এমনকি, বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী দিলীপের প্রচারে দেখা যাচ্ছে না প্রদীপকে। কেন এত নিষ্ক্রিয়? প্রদীপের বক্তব্য, “আমি চাই কেন্দ্রে ফের বিজেপি সরকার গঠিত হোক। কিন্তু দল আমাকে কোনও কাজে যুক্ত করছে না। দলের রাজ্য সভাপতিও আমার কথায় গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এখন সঙ্ঘের লোকেদের বেশি প্রাধান্য দেখছি। দলের দুর্দিনে লড়াইয়ের পরে যদি সুদিনে গুরুত্ব না পাই তখন খারাপ তো লাগবেই। তাই চুপ করে বসে রয়েছি।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দিলীপের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে প্রদীপের মন্তব্য, “দলে নতুন এসে অনেকে প্রার্থী হচ্ছেন। আমি দালালি করে প্রার্থী হতে চাই না। কাজ করতে চাই। বিধানসভা এলাকায় রেলের এলাকার উন্নয়নে কাজের দায়িত্ব চাইলেও দিলীপবাবু দেননি। এটা লোকসভায় নিশ্চয়ই প্রভাব ফেলবে।” যদিও এমন ক্ষোভে গুরুত্ব না দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা প্রার্থী দিলীপ ঘোষ বলেন, “ছ’বার তো ওঁকে দল প্রার্থী করে সুযোগ দিয়েছিল। ঝাড়গ্রামে বিধানসভার সময়ে পর্যবেক্ষক করা হয়েছিল। কী করেছেন? দালালি করে কী সকলেপ্রার্থী হয়েছে?’’ এর পাশাপাশি দিলীপ যোগ করেন, ‘‘যোগ্যতা বুঝে দল প্রার্থী করেছে। ওঁর প্রভাব থাকলে আগেই প্রভাব বোঝা যেত।” অবশ্য এমন ঘটনায় উৎসাহিত তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “দিলীপ ঘোষ বিধায়ক হয়ে কোনও কাজ করেনি। ওঁর কার্যকলাপে ওঁর দলের লোকেরাই ক্ষুব্ধ। প্রদীপ পট্টনায়েক-সহ বিজেপির অনেকেই আমাদের ভোট দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”