অমিত শাহ। ছবি: বিজেপির টুইটার হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।
ফের নরেন্দ্র মোদীই প্রধানমন্ত্রী হবেন। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই, বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এসে ফের এমন দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। বুধবার হাওড়ার পাঁচলায় জনসভা ছিল তাঁর। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘গত সত্তর বছরে মোদীজির মতো নেতা পায়নি দেশ। গরিব মানুষের কল্যাণে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন উনি।’’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তীব্র আক্রমণ করেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘বাংলায় গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন মমতা। পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা করিয়েছেন।’’ বাংলায় মমতা গুন্ডারাজকে ছাড়পত্র দিয়েছেন বলেও এ দিন অভিযোগ করেন অমিত। ক্ষমতায় এলে বাংলায় এনআরসি করে ছাড়বেন বলেও জানান।
কাশ্মীরের জন্য সংবিধানে সংরক্ষিত ৩৭০ ধারা তুলে দেবেন বলে নির্বাচনী ইস্তাহারে জানিয়েছিল বিজেপি। তার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। তেমন হলে রাজ্যের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রীর দাবি জানাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এ ব্যাপারে অমর আবদুল্লার প্রতি মমতার সমর্থন রয়েছে বলে অভিযোগ করেন অমিত শাহ। কাশ্মীরকে ভারত থেকে আলাদা করতে চান বলে দাবি করেন তিনি।
আরও পড়ুন: গঢ়চিরৌলীতে মাওবাদী হামলা, বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১৫ কমান্ডো
কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় না থাকলেও কাশ্মীরকে কখনও ভারত থেকে আলাদা হতে দেবে না। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে দেব আমরা। কাশ্মীরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রীর দাবি তুলেছেন ওমর আবদুল্লা। তা নিয়ে কোনও জবাব নেই মমতাদিদির। আসলে ওমর আবদুল্লার সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন উনি। কাশ্মীরকে ভারতের থেকে আলাদা হতে দেখতে চান ওঁরা। বায়ুসেনার এয়ারস্ট্রাইকে দেশ জুড়ে যখন উত্সবের মহল ছিল, শোকের ছায়া ছিল রাহুল গাঁধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে। বিজেপির হাতে দেশ সুরক্ষিত। সনিয়া-মনমোহনের সময় ভারতীয় জওয়ানদের মাথা কেটে নিয়ে যেত পাকিস্তানি জঙ্গিরা। কিন্তু মৌনী মনমোহন টুঁ শব্দটি করতেন না। কিন্তু পুলওয়ামায় হামলার পর চুপ করে বসে থাকেননি ৫৬ ইঞ্চি ছাতির মালিক মোদী। বায়ুসেনাকে পাকিস্তানকে পাঠিয়ে জঙ্গিদের খতম করিয়েছেন। কিন্তু ওই টাকা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। বিজেপি ক্ষমতায় এলে ওই টাকা সরাসরি সাধারণ মানুষের ঘরে ঢুকবে। বাংলায় মোদীজি কী করেছেন, তা জানতে চাইছেন মমতাদি। ওঁকে বলি রাখি, আপনাকে জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না। গত পাঁচ বছরে উনি বাংলাকে চার লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন মোদী। বাংলায় এত দিন রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনা যেত, হরিনাম শোনা যেত, এখন শুধু বোমার আওয়াজ শোনা যায়। বাংলায় শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ক্ষমতায় এলে এনআরসি চালু করব আমরা। বাংলায় সরস্বতী পুজোর অনুমতি নেই। রাম নবমী পালনের অনুমতি নেই। ভোট ব্যাঙ্কের কথা ভেবেই এ সবে অনুপতি দেন না মমতা। গুন্ডারাজকে ছাড়পত্র দিয়েছেন মমতাদি। ওঁর মদতেই পঞ্চায়েত িনর্বাচনে হিংসা হয়েছে। বাংলার গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন মমতা।
আরও পড়ুন: রাবণের লঙ্কায় হলে, রামের অযোধ্যায় কেন নয়? এ বার বোরখা নিষিদ্ধের দাবি তুলল শিবসেনা
এ দিন সকালে বনগাঁর সভা থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন শাহ। তিনি বলেন—
বাংলার গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, অনুপ্রবেশকারীদের বাংলা ছাড়া করতে, বাংলাকে রক্ষা করতে, মা-বোনদের সম্মান রক্ষা করতে বিজেপিকে ভোট দিন। পাকিস্তানে ঢুকে জঙ্গিদের শাস্তি দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন মোদী, তাঁর হাতে দেশ নিরাপদ। তৃণমূলের অপশাসন, অত্যাচারের বিরুদ্ধে একমাত্র বিজেপি-ই লড়তে পারে। চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে বাংলার মানুষের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সিন্ডিকেটের রাজ্যে সেই টাকা কোথায় গেল? আমাদের ক্ষমতায় আসতে দিন। কাউকে ছাড়ব না। কতদিন বিজেপিকে আটকে রাখতে পারবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? ২৩ মে ভোটের ফল বেরনোর পরই ওঁর জমানা শেষ হয়ে যাবে। বিজেপির কাছে ভোট ব্যাঙ্ক নয়, দেশের সুরক্ষা সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ। বাংলায় শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। নাগরিকত্ব দেওয়া হবে মতুয়াদেরও। শুধুন অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো হবে। মমতার মা-মাটি-মানুষ স্লোগান কোথায় গেল? বাংলায় এখন বোমা-বারুদের শিল্প। এই বাংলা কি আপনারা চান? একমাত্র মোদীজি-ই পারেন এখানে পরিবর্তন আনতে। গরিব মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার গণতন্ত্র ধ্বংস করেছেন। দেশ সুরক্ষিত রাখতে মোদীজিকে প্রয়োজন। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় গণতন্ত্র থাকবে কিনা তা ঠিক করবে এই নির্বাচন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy