Advertisement
২৪ মে ২০২৪

‘কেমন আছেন?’ তৃণমূল নেতার বাড়িতে দিলীপ

রেল শহর খড়্গপুর মিশ্র সংস্কৃতির শহর। প্রয়াত প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবে, প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহমপালের (চাচা) হাত ধরে এই শহর রাজনৈতিক সৌজন্য শিখেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২০
Share: Save:

ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল ৮টা।

দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন খড়্গপুর শহর তৃণমূল সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে। তখনই তাঁর বাড়িতে হাজির হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের পদ্ম প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। উঠোনে দিলীপ ঘোষ-সহ বিজেপি কর্মীদের দাঁড়িয়ে থাকার কথা শুনে বাইরে আসেন তৃণমূল নেতা। তাঁকে দেখে দিলীপ জানতে চান, ‘কেমন আছেন?’ রবিশঙ্কর বলেন, “এই চলে যাচ্ছে। আর আপনি?” দিলীপ তখন মাথা নেড়ে জানান, সব ঠিকঠাক। রবিশঙ্করের স্ত্রী-সহ তাঁর পরিজনেদের সঙ্গেও সৌজন্য বিনিময় করেন বিজেপি প্রার্থী। তারই ফাঁকে দিলীপের সঙ্গে থাকা কয়েকজন বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আবেদন করেন। তখন দিলীপ বলে ওঠেন, “আমাকে ভোট দিলে মানসদা ওঁর ওপর রেগে যাবেন।” রবিশঙ্কর হাসিমুখে রসিকতা ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, “না, এতে রাগের কী রয়েছে!”

রেল শহর খড়্গপুর মিশ্র সংস্কৃতির শহর। প্রয়াত প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ নারায়ণ চৌবে, প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহমপালের (চাচা) হাত ধরে এই শহর রাজনৈতিক সৌজন্য শিখেছিল। গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে এই শহরে এসে দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, “চাচাজি ধন্যবাদ, বিজেপি জিন্দাবাদ।” বিধায়ক হওয়ার পরেও কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে চাচার সঙ্গে দেখা করেছিলেন দিলীপ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রবিশঙ্কর পাণ্ডে ও মানস ভুঁইয়া দু’জনেই আগে কংগ্রেসে ছিলেন। তখন চাচার ঘনিষ্ঠ রবিশঙ্করের সঙ্গে মানসের ঘনিষ্ঠতাও ছিল। মানস-রবি দু’জনেই দলবদলে এখন তৃণমূলে। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রবিশঙ্কর এখন তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি। মানস এ বার মেদিনীপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী। তৃণমূলের অন্দরের খবর, এ বার ভোট যুদ্ধে মানস যে কয়েকজনের উপরে বেশি নির্ভর করছেন তাঁদের অন্যতম রবিশঙ্কর। এই সমীকরণ মাথায় রেখেই কি এ দিনের সৌজন্য সাক্ষাৎ? দিলীপ ও রবিশঙ্কর অবশ্য এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই বলেই দাবি করছেন। রবিশঙ্কর পাণ্ডের কথায়, “এর আগে ওঁর সঙ্গে বিয়েবাড়িতে এক-দু’বার দেখা হয়েছিল। এ বার উনি ওয়ার্ডে প্রচারে এসে বাড়িতে এলেন। সৌজন্য বিনিময় হয়েছে। ভোট নিয়ে কথা হয়নি।” দিলীপ বলছেন, “আমি এ দিন ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে পায়ে হেঁটে প্রচার করেছি। রবিশঙ্কর পাণ্ডের বাড়ি ওই ওয়ার্ডেই। তাই সৌজন্য বিনিময় করতে গিয়েছিলাম। নিজে ভোট চাইনি। আমাদের দলের কর্মীরা ভোটের কথা বলছিলেন।’’

আজ কোথায় কোথায় ভোট, দেখে নিন

কংগ্রেস অবশ্য কটাক্ষ কাটতে ছাড়ছে না। মেদিনীপুরের কংগ্রেস প্রার্থী শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমরা বার বার বলছি বিজেপি-তৃণমূলের গোপন আঁতাত রয়েছে। এই ঘটনায় সেটাই তো সামনে এল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 BJP Dilip Ghosh TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE