Advertisement
E-Paper

গেরুয়া চোরাস্রাতের মাঝে আচমকা চাঙ্গা বামও, চওড়া হাসছেন ‘বাঁকুড়ার ভগীরথ’

দিনের বেলায় এক এক দিন এক একটা ব্লকে প্রচার সারছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। লম্বা হাঁটছেন মিছিল নিয়ে অথবা হুডখোলা জিপে রোড শো করছেন।

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ১৭:৫০
হুডখোলা গাড়িতে রোড শোয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

হুডখোলা গাড়িতে রোড শোয়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

চাঁদমারিডাঙার হোটেলে যাঁর সঙ্গে দেখা হল, তাঁর মুখমণ্ডলে আর যা-ই থাক, ‘প্রেস্টিজ ফাইট’ মার্কা টেনশনের লেশমাত্র নেই। ২০০৯ সালেও বাঁকুড়া লোকসভা আসনে লড়তে এসেছিলেন। অভিজ্ঞতা সুখকর হয়নি। ১০ বছর পর আবার সেই আসনেই প্রার্থী। তবে এ বার আর বিরোধী শিবিরের নন, শাসকের প্রার্থী তথা রাজ্যের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। প্রায় অপরাজেয় ভাবমূর্তিটায় ধাক্কা দিয়েছিল যে এলাকা, সেই এলাকা থেকেই জমা-খরচের হিসেবটা মিলিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এ বার তাঁর। সুযোগটা ফের ফস্কালে বেজায় বেইজ্জতির উদ্বেগও। কিন্তু সুব্রত মুখোপাধ্যায় যেন সব কিছুর ঊর্ধ্বে। ভোট নিয়ে তাঁর চেয়ে নিশ্চিন্ত ক’জন প্রার্থীকে দেখাচ্ছে এ রাজ্যে, খুঁজে বার করা বেশ শক্ত।

রাঢ়ভূমের কুখ্যাত গরম মাথায় করে রোজ গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটতে ছুটতে রং পুড়ে তামাটে। সদ্য মনোনয়ন জমা দিয়ে ফিরেছেন। ঝাঁ ঝাঁ রোদে চোখমুখের অবস্থা আরও কাহিল। চট করে স্নান সেরে একটু জিরিয়ে নেবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু সে উপায় রইল না। কলকাতার পাঠ আপাতত শিকেয় তুলে বাঁকুড়ায় ঘাঁটি গেড়েছেন স্ত্রী ছন্দবাণী মুখোপাধ্যায়ও। সুব্রত মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরা পর্যন্ত না খেয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। এখন যদি সুব্রত না খান, তা হলে ছন্দবাণীও খাবেন না। অতএব লুঙ্গি-গেঞ্জি চড়িয়ে ভাত-ডাল-সব্জি দিয়ে অল্প খেয়ে নিলেন পঞ্চায়েত মন্ত্রী।

‘‘ও যদি না থাকত এখানে, তা হলে কিন্তু দুপুরে খেতামই না। বেলা হয়ে গিয়েছে তো, একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার বেরিয়ে পড়তাম। রোজ এইটাই ঘটবে জেনেই ও কলকাতা ছেড়ে চলে এসেছে,’’—সোফায় এলিয়ে মুচকি হাসেন বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী। সে হাসি বুঝিয়ে দেয়, ঠাসা প্রচারসূচির বা‌ইরে যে দৈনন্দিন অরাজনৈতিক রুটিন, তার দায়িত্ব ছন্দবাণী নিজর হাতে নিয়ে নেওয়ায়, তিনি বেশ স্বস্তিতে। মনোনয়ন পেশ করার সময়ে স্ত্রী সঙ্গে যাননি ঠিকই। কিন্তু রঘুনাথপুর হোক বা শালতোড়া, ছাতনা হোক বা রানিবাঁধ— বাঁকুড়া শহরের বাইরে যে দিন যেখানে যাচ্ছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সঙ্গী হচ্ছেন স্ত্রী। খেয়াল রাখছেন নানা খুঁটিনাটির।

দিনের বেলায় এক এক দিন এক একটা ব্লকে প্রচার সারছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। লম্বা হাঁটছেন মিছিল নিয়ে অথবা হুডখোলা জিপে রোড শো করছেন। তার পরে শহরে ফিরে সামান্য বি‌শ্রাম এবং ফের বেরিয়ে পড়া। সন্ধেটা শুধুমাত্র বাঁকুড়া শহরের জন্য বরাদ্দ। রোজ দুটো করে ওয়ার্ডে কর্মী সভা, পারলে একটু অলিগলিতে হাঁটা, একটু দরজায় দরজায় পৌঁছে যাওয়া।

বাঁকুড়া শহরে কি একটু বেশি জোর দিচ্ছেন? মন্ত্রী তথা প্রার্থীর সঙ্গীরা জানালেন, জোর দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী শম্পা দরিপা হারিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূলের মিনতি মিশ্রকে। ছাতনাতেও জিতেছিল বামেরা। পরে দুই বিধায়কই তৃণমূলের ছাতার তলায় ঢুকে পড়েছেন। কিন্তু সুব্রত কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। যাবতীয় ক্ষতস্থান স্বহস্তে মেরামত করতে চাইছেন।‘বাঁকুড়ার ভগীরথ’ শহরটার দরজায় দরজায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন।

এই নামটা নতুন পেয়েছেন সুব্রত। বাঁকুড়া সদরের বিধায়ক শম্পা দরিপা দিয়েছেন নামটা। কেন এমন নাম? এই নামকরণ মন্ত্রী হিসেবে সুব্রতর কাজের সুবাদে। বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর দিকে সুব্রতকে বিশেষ নজর দিতে বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনস্বাস্থ্য করিগরি মন্ত্রী হিসেবে সে নির্দেশ প্রায় অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন সুব্রত। বিশুদ্ধ পানীয় জলের লাইন পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় সব মহল্লায়। শুধু শহরে নয়, শহরের বাইরের বেশ কিছু এলাকাতেও পানীয় জলের সমস্যা মিটিয়েছেন। পঞ্চায়েত মন্ত্রী হিসেবে ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পের আওতায় বেশ কিছু পুকুরও কাটিয়েছেন। তাই শম্পা দরিপা একের পর এক সভায় বলছেন— ভগীরথ যে ভাবে গঙ্গাকে এনেছিলেন পৃথিবীতে, সুব্রত সে ভাবেই জল এনেছেন বাঁকুড়ায়। বিধায়কের দেওয়া সেই ব্যাখ্যা কর্মীদের মুখে মুখে ফিরছে।

কংগ্রেসি ঘরানার প্রবীণ নেতা বেশ উপভোগ করছেন এই বিশেষণ। স্বভাবসিদ্ধ রসবোধে ২০০৯ সালে বাঁকুড়ায় তাঁর পরাজয়ের প্রসঙ্গ নিজেই টেনে আনছেন তিনি। বলছেন, ‘‘হেরে গিয়েও কেউ এত কাজ করে, এমনটা আর কোথাও দেখাতে পারবেন!’’ হাসির রোল উঠছে পারিষদদের মধ্যে। আর প্রার্থীর মুখে তো স্মিত হাসি সারাক্ষণই। চোখের দু’পাশে সে রেখা ধরে রেখেই তিনি বলছেন, ‘‘বাঁকুড়া আমাকে সে বার জেতায়নি বলে আমি কিন্তু অভিমান করে মুখ ফিরিয়ে থাকিনি। আমি এই জেলার জন্যই সবচেয়ে বেশি করেছি। বার বার এখানে ছুটে এসেছি। এত বার এখানে আসতে হত এবং থাকতে হত যে এই জেলায় আমার হাতে থাকা দফতরকে তিনটে বাড়ি বানাতে হয়েছে। তাই মমতা এবং অভিষেক যখন আমাকে বললেন, এ বার লোকসভায় লড়তে হবে, আমি নিজেই বাঁকুড়া চেয়েনিলাম।’’

বাঁকুড়ার গ্রামে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে প্রচারে সুব্রত মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র

যে বাঁকুড়া শহর তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, সেই বাঁকুড়ায় সুব্রতর কোনও উচ্চকিত বিরোধিতা কিন্তু শোনা যাচ্ছে না। গত পাঁচ বছর যিনি ছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ, তাঁকে নিয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই যে ভাল, সে কথা তৃণমূল কর্মীরাই বলছেন। সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মুনমুন সেন কতটা ‘নিবিড়’ যোগাযোগ বাঁকুড়ার সঙ্গে রেখেছিলেন, সে প্রসঙ্গ উঠলে স্থানীয় তৃণমূলই লজ্জিত হচ্ছে। এ বার ভোট চাইতে যাবেন কোন মুখে, এই প্রশ্ন তৃণমূলের প্রায় প্রত্যেকটা পার্টি অফিসে ঘুরপাক খাচ্ছিল প্রার্থী হিসেব সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষিত হওয়ার আগে পর্যন্ত। কিন্তু সুব্রত প্রার্থী জেনেই স্থানীয় সংগঠনের মেজাজ বদলে গিয়েছে। মেজাজ সম্ভবত কিছুটা বদলাতে শুরু করেছে শহরটারও। সুব্রতর নমস্কারের জবাবে যে প্রতিনমস্কারটা আসছে পথের দু’পাশ থেকে, তার স্বতঃস্ফূর্তিতেই সেই বদলানো মেজাজের আভাস রয়েছে। সুব্রতকে দরজার সামনে পেয়ে যে প্রৌঢ়া বেরিয়ে আসছেন এবং কয়েক দিন ধরে বিকল হয়ে থাকা জলের কলটা কবে সারাই হবে বলে প্রশ্ন তুলছেন, তাঁর অনুযোগে বোধ হয় খানিকটা আস্থার সুরও মিশে থাকছে। ঠিক জায়গায় অনুযোগটা জানানো গিয়েছে এত ক্ষণে, এই ভেবে যেন তৃপ্তি পাচ্ছেন।

বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। চিকিৎসক হিসেবে এলাকায় যথেষ্ট নামডাক, সন্দেহ নেই। দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে যে তিনি অত্যন্ত গুরুত্ব পান, সে খবরও এলাকায় রয়েছে। কিন্তু এখনও যেন গুছিয়ে উঠতে পারেননি সুভাষ। দেওয়াল লিখনে, পোস্টারে, ব্যানারে এখনও অনেকটা পিছিয়ে তিনি সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের চেয়ে। পিছিয়ে সিপিএমের চেয়েও চেয়েও।

বিজেপি কর্মীদের কাছে ‘ডাক্তারবাবু’ বেশ সম্ভ্রমের পাত্র। কিন্তু যখন তখন তাঁর নাগাল পাওয়া সম্ভব কি না, তাঁর মেজাজ বুঝে চলতে পারাটা জরুরি কি না, সে সব নিয়েও কথকতা বিস্তর। ফলে প্রচারের সমন্বয়ে বেশ ঘাটতি রয়েছে। সে প্রসঙ্গ এলে সরাসরি ‘ডাক্তারবাবু’র বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করতে পারছেন না বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু তাঁর এক ব্যক্তিগত সহায়কের বিরুদ্ধে বিপুল ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন সুযোগ পেলেই।

সাধারণের সঙ্গে মিশে ভোট প্রচারে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। —নিজস্ব চিত্র

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো হেভিওয়েটের সঙ্গে টক্কর নিতে গেলে যতটা প্রস্তুতি এবং তৎপরতা জরুরি, বাঁকুড়ার গেরুয়া শিবিরে তার অভাব বেশ স্পষ্ট। সব মিলিয়ে প্রচারাভিযানে কাঙ্খিত ছন্দটাও যেন অমিল।

তা বলে সুভাষ সরকারকে পাত্তাই না দেওয়ার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, এমনও কিন্তু নয়। রাজ্যের গোটা পশ্চিমাঞ্চলেই যে গেরুয়া হাওয়ার প্রবাহ বেড়েছে, পোড় খাওয়া রাজনীতিক তা জানেন। বাঁকুড়াতেও যে সে হাওয়া চোরাস্রোতের মতো বইছে, তা বুঝতে নরেন্দ্র মোদীর সভায় বিশাল জমায়েতটা দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে সুব্রতকে, এমনও নয়। বহু নির্বাচনী যুদ্ধের সাক্ষী সুব্রত পরিস্থিতিটা আঁচ করেছেন অনেক আগেই। তাই কোনও সকালে জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীকে ডেকে নিয়ে ভোটের যোগ-বিয়োগ কষে নিচ্ছেন। কোনও দিন আবার প্রচারে বেরনোর আগে বসে নিচ্ছেন ছাতনায় গতবার সামান্য ব্যবধানে হেরে যাওয়া তৃণমূল বিধায়ক শুভাশিস বটব্যালের সঙ্গে, বুঝে নিচ্ছেন ক্ষোভ-বিক্ষোভের আঁচ। সেই অনুযায়ী প্রচারের সূচি সাজাচ্ছেন, ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর এলাকাতেও পৌঁছে যাচ্ছেন। সম্ভব হলে প্রত্যেকটা ভোটের জন্য আলাদা করে যত্ন নেবেন তিনি— বার্তাটা এ ভাবেই চারিয়ে দিয়েছেন দলের অন্দরে। তবে কৃতিত্ব নিজে নিচ্ছেন না। চিরচেনা অকপট আলাপচারিতায় প্রথমে নিজেই মানছেন যে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তাঁর দলের খুব বড় সমস্যা। তার পরে জানাচ্ছেন যে, সেই সমস্যা আর যাকেই ভুগতে হোক, তাঁকে একবারেই ভুগতে হচ্ছে না। কারণ? ‘‘কারণ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নিজে এই কেন্দ্রটা দেখভাল করছেন, সারাক্ষণ সব বিষয়ের খোঁজখবর রাখছেন। অভিষেকের ভয়েই হোক বা ভক্তিতে, বাঁকুড়ায় তৃণমূলের অন্দরে কোনও দ্বন্দ্ব এ বার নেই।’’

সুজন চক্রবর্তীকে পাশে নিয়ে রোড শোয়ে অমিয় পাত্র। —নিজস্ব চিত্র

তবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ঠোঁটের কোণে সর্বক্ষণ হাসি লেগে থাকার আরও একটা বড় কারণ রয়েছে। কারণটা হল সিপিএম। বাঁকুড়ায় এ বার সিপিএমের প্রার্থী অমিয় পাত্র। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তিনি। বাম জমানায় গোটা বাঁকুড়া জেলার ডি-ফ্যাক্টো শাসক ছিলেন। দীর্ঘ দিন জেলা সম্পাদক থাকায় জেলাটাকে চেনেন হাতের তালুর মতো। যে কেন্দ্রে লড়ছেন, তার প্রায় প্রতিটি কোনায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচিতি রয়েছে। সাংগঠনিক দক্ষতা সমীহ করার মতো। এই সব কিছু প্রাণপণে একত্র করে যেন ময়দানে নেমেছেন অমিয়। তাঁর একাধিক মিছিলের আকার ইতিমধ্যেই চমকে দিয়েছে। তাঁর নানা সভায় যে রকম জমায়েত এ বার দেখা যাচ্ছে, ২০১১ থেকে একটানা রক্তক্ষরণে ক্লান্ত হয়ে পড়া সিপিএম নিজেই বোধ হয় মাঝেমধ্যে বিশ্বাস করতে পারছে না যে, তা সিপিএমের নেতা-কর্মীদের কাছেই কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত ঠেকছে। ২০১১ সালের পর থেকে একটানা রক্তক্ষরণে শ্রান্ত-হতোদ্যম সিপিএম অতএব উজ্জীবিত অমিয় পাত্রকে ঘিরে। দীর্ঘ দিন বামেদের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা যে ভোটাররা বিজেপির দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন গোটা রাজ্যেই সম্প্রতি, তাঁরা বাঁকুড়ায় এ বার অন্য রকম ভাবছেন। সুব্রতকে টক্কর দিতে পারলে অমিয়ই পারবেন, বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন অনেকেই। ফলে সিপিএমের ভোট এ বার প্রায় পুরোটাই সিপিএমের ঝুলিতে ঢুকতে চলেছে বাঁকুড়ায়। তাতেই চওড়া হচ্ছে সুব্রতর হাসি।

সিপিএমের সভাগুলিতে জমায়েত বেশ চোখে পড়ার মতো এ বার। —নিজস্ব চিত্র

ভোটের সময়ে প্রতিপক্ষকে পাত্তাই না দেওয়ার যে ভঙ্গিটা বালিগঞ্জের বিধায়কের স্বভাবসিদ্ধ, তার থেকে অবশ্য সরে আসছেন না সুব্রত মুখোপাধ্যায়। জ্বালাময়ী কটাক্ষে অমিয়কে বিঁধে তিনি বলছেন, ‘‘ভোট যতই পান, উনি জিততে পারবেন না। ওঁর নিজের এলাকা তালড্যাংরা। সেখানেই জিততে পারেননি। কলকাতা থেকে একটা ছেলে (সমীর চক্রবর্তী) এসে তালড্যাংরায় ওঁকে হারিয়ে দিল। এত বড় বাঁকুড়ায় আর কী ভাবে জিতবেন!’’ আর বিজেপি প্রার্থী সম্পর্কে সুব্রতর চিমটি কাটা মূল্যায়ন, ‘‘নামকরা ডাক্তার শুনেছি, কিন্তু জনপ্রিয় নন। ওঁর ডাক্তারিতে বিজেপির অসুখ সারবে না।’’

কটাক্ষ যতই করুন, সুব্রত মনেপ্রাণে চাইছেন, দুই প্রতিপক্ষই ভাল সংখ্যায় ভোট পান। অকপটে বলছেনও তা মাঝেমধ্যে। বলছেন প্রচারাভিযানে তৃণমূল প্রার্থীর সর্বক্ষণের সঙ্গীরাও। বিরোধী ভোটে এই আড়াআড়ি বিভাজনের সম্ভাবনাই তো আরও চওড়া করে দিচ্ছে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দিল্লি পৌঁছনোর রাস্তা।

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ TMC CPM BJP Subrata Mukherjee Amiya Patra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy