দু’জনে: প্রচারে পরেশ। পিছনে রবি। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
মন্ত্রী ছুটছেন, পিছনে প্রার্থী। মন্ত্রী বক্তব্য দিচ্ছেন, পাশের আসনেই বসে রয়েছেন প্রার্থী। আবার মন্ত্রীর বাড়ির অফিসেই চলছে প্রার্থীর মনোনয়ন জমার কাজ। বিরোধীরা বলছেন, ‘প্রার্থীকে তো মন্ত্রী বগলদাবা করে নিয়ে ঘুরছেন! যাতে হাত ফস্কে না যান।’
একজন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আরেকজন তৃণমূলের কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রার্থী পরেশ অধিকারী। আপাতত এই দু’জনকে একসঙ্গেই দেখা যাচ্ছে সব জায়গায়। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য বলেন, “আমাদের প্রার্থী, একসঙ্গে প্রচারে যাব এটাই তো স্বাভাবিক। বিরোধীদের ওই কথার কোনও মানে হয় না।” পরেশের কথায়, “দলের কর্মসূচি মেনে সব জায়গায় প্রচারে যাচ্ছি। সব জায়গায় জেলা সভাপতি সঙ্গে থাকছেন, এটা তো বড় ব্যাপার।”
গত লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় কোচবিহার লোকসভা আসন থেকে জয়ী হয়। তাঁর সঙ্গে সেই সময় রবীন্দ্রনাথের সখ্যের কথা সবাই জানে। পার্থ রবীন্দ্রনাথের একনিষ্ঠ অনুগামী বলেই পরিচিত ছিলেন। যদিও সাংসদ হওয়ার ছ’মাস যেতে না যেতেই দু’জনের দূরত্ব বাড়ে। আড়াই বছরের মাথায় রবীন্দ্রনাথের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসেবেই দলে পরিচিত হন। এ বারে পার্থকে টিকিট দেয়নি। তাঁর জায়গায় নতুন মুখ হিসেবে আনা হয়েছে পরেশ অধিকারীকে। তৃণমূল রাজনীতিতে নতুন হলেও জেলায় পোড়খাওয়া ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত। বাম আমলে দীর্ঘসময় তিনি বিধায়ক ছিলেন। পাঁচ বছরের জন্য মন্ত্রীও ছিলেন। বামেরা হেরে যাওয়ার পরেও জেলায় ফরওয়ার্ড ব্লকের এক নম্বর নেতা হিসেবেই তাঁর পরিচিতি ছিল।
সেই পরেশের প্রার্থী হওয়ার পিছনে এ বারে রবীন্দ্রনাথের হাত রয়েছে বলেই জেলায় গুঞ্জন রয়েছে। যদিও দু’জনেই স্পষ্ট ভাবে দাবি করেন, প্রার্থী নির্বাচন করেছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় পৌঁছনোর পর থেকেই হয় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে, বা তাঁর অনুগামীদের সঙ্গেই দেখা যাচ্ছে পরেশ অধিকারীকে। সম্প্রতি জেলা কোর কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে জেলার সমস্ত তৃণমূল নেতারা হাজির ছিলেন। সবার সঙ্গেই প্রার্থীর কথা হয়। তিনি দিনহাটাতেও তৃণমূলের সভায় যোগ দেন। সেখানে ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। ছিলেন রবীন্দ্রনাথও। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সহ সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে তো প্রার্থীর কর্মসূচি থাকবে। সেই কর্মসূচিতেই দুজনেই যোগ দিচ্ছেন। এ ছাড়া জেলার সব নেতা-কর্মী থেকে সমর্থকরা পরেশ অধিকারীর হয়ে নেমে পরেছেন। তিনি এখন আমাদের দলের।” বিজেপির জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অবশ্য কটাক্ষ করে বলেন, “আগেরজন তো বাগে রাখতে পারেননি, এ বার তাই প্রার্থীকে বগলদাবা করে রাখছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy