Advertisement
E-Paper

‘সব গাড়ি ভেঙে দে, আগুন ধরিয়ে দে’

উন্মত্ত জনতাকে কাটিয়ে সামনে এক পা এগোনোরও উপায় নেই। গাড়ির কাচ তুলে রাখলে আরও খেপে উঠছে।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০৪:০৯
মোহনপুর এলাকায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র

মোহনপুর এলাকায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। নিজস্ব চিত্র

গ্রামের মেঠো রাস্তায় সার দিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের গাড়ি। চারপাশ থেকে রে-রে করে তেড়ে আসছেন একদল পুরুষ-মহিলা। গাড়ির উপর পড়ছে এলোপাথাড়ি চড়-ঘুষি। প্রশ্ন একটাই, ‘‘কেন এসেছিস এখানে।’’

উন্মত্ত জনতাকে কাটিয়ে সামনে এক পা এগোনোরও উপায় নেই। গাড়ির কাচ তুলে রাখলে আরও খেপে উঠছে। আচমকাই কয়েক জন যুবক চেঁচিয়ে বললেন, ‘‘সব গাড়ি ভেঙে দে, আগুন ধরিয়ে দে।’’ ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছি ভিতরে। কাঁপছেন চালকও। সঙ্গী চিত্রসাংবাদিক সুমন বল্লভকেও চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি না। শুধু বুঝতে পারছি, সামনে কয়েক জনকে ঘিরে রেখেছে জনতার একাংশ।

ঘটনার সূত্রপাত সকাল সাড়ে ১০টায়। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের দাঁতন বিধানসভার মোহনপুরের রামপুরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের বচসার খবর পেয়ে আমি ও সুমনদা পৌঁছেছিলাম সেখানে। সঙ্গে আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। সব মিলিয়ে প্রায় ২০-২২টি গাড়ির কনভয়। পৌঁছতেই একদল বলতে শুরু করলেন, ‘‘সব শান্তিপূর্ণ। তোরা দালালি করতে কেন এসেছিস?’’ সঙ্গে অশালীন সম্ভাষণ।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দিলীপবাবুর তিন গাড়ির কনভয় তখন এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করছে। সেই সব গাড়িতে দুমদাম পড়ছে ঘুষি। পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী গাড়ি এগোনোর পথ করে দিলেও আটকে গেলাম। সুমনদা তখন ছবি তুলতে এগিয়ে গিয়েছেন। উন্মত্ত জনতার হাত থেকে বাঁচতে উঠলাম গাড়িতে। কয়েকজন যুবক এসে বললেন, ‘‘জানলার কাচ নামা।’’ কাচ নামাতেই শুরু হল গালিগালাজ। ‘‘আমরা চলে যাচ্ছি’’ বলতেই এক জন চিৎকার করে বাঁশ, টাঙি বের করতে বললেন। হাত জোড় করে বললাম, ‘‘এ সব কেন, আমরা তো চলে যাচ্ছি।’’ কিছুক্ষণ পরে দুই যুবক এসে সাংবাদিকদের মারতে নিষেধ করলেন। কিন্তু সুমনদা কই? দেখলাম, সুমনদা দৌড়ে আসছেন। পিছনে তাড়া করা যুবকদের আটকানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন স্থানীয় থানার অফিসার। চেঁচিয়ে অন্য অফিসারদের বলছেন, ‘‘গাড়িগুলো আগে বের করে দিন।’’ সুমনদা লাফিয়ে গাড়িতে উঠে জানালেন, তাঁকে ও আরও কয়েকজন সাংবাদিককে ঘিরে রেখে কয়েকজন হুমকি দিচ্ছিলেন, আজ আর গ্রাম ছেড়ে বেরতে দেবেন না।

দুপুরে মেদিনীপুর শহরের শ্রী নারায়ণচন্দ্র বিদ্যাভবনে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের বচসার খবর পেয়ে ফের পৌঁছলাম। সেখানেও মার মার করে তেড়ে এলেন কয়েকজন যুবক। হুমকি আসছে, ‘‘একবার নীচে নাম, কেটে রেখে দেব।’’ পুলিশকর্মীরা কোনও মতে গাড়ি বের করলেন। পিছনে তাড়া করেছে কয়েকটা বাইক। একটা সময় পরে তাঁরা ফিরে গেলেন। ভাগ্যিস! আপাতত প্রাণে তো বাঁচলাম।

Lok Sabha Election 2019 Dantan লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy