Advertisement
E-Paper

শূন্যস্থানে চলছে মতুয়া জয়ের অঙ্ক

স্পষ্ট হয়ে গেল, বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পরে মতুয়াদের কাছে সে ভাবে গ্রহণযোগ্য মুখ এখনও তুলে ধরতে পারেনি তৃণমূল। অন্য দিকে, মতুয়া-অধ্যুষিত কেন্দ্র রানাঘাটে প্রধান বিজেপি মুখ জগন্নাথ সরকার আপাতত ওই বিধায়ক খুনের মামলায় সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদ এবং অসুস্থতা মিলিয়ে ধরাশায়ী।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০২:৫৪
মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা ‘বড়মা’ বীণাপাণি দেবী প্রয়াত। —ফাইল চিত্র।

মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রধান উপদেষ্টা ‘বড়মা’ বীণাপাণি দেবী প্রয়াত। —ফাইল চিত্র।

শূন্যস্থান ক্রমশ প্রকট হচ্ছিলই। মতুয়া সঙ্ঘমাতা বীণাপানি দেবী ওরফে বড়মার মৃত্যুসংবাদ এসে পৌঁছতেই তা একেবারে স্পষ্ট হয়ে উঠল।

স্পষ্ট হয়ে গেল, বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হওয়ার পরে মতুয়াদের কাছে সে ভাবে গ্রহণযোগ্য মুখ এখনও তুলে ধরতে পারেনি তৃণমূল। অন্য দিকে, মতুয়া-অধ্যুষিত কেন্দ্র রানাঘাটে প্রধান বিজেপি মুখ জগন্নাথ সরকার আপাতত ওই বিধায়ক খুনের মামলায় সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদ এবং অসুস্থতা মিলিয়ে ধরাশায়ী। সেই ‘শূন্যস্থানে’ কার্যত ফাঁকা মাঠ পেয়ে গিয়েছেন দলের অভ্যন্তরে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বলে পরিচিত মতুয়া নেতা, দলের দক্ষিণ জেলা সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু ভৌমিক।

এই জোড়া শূন্যস্থানই আপাতত নিয়ন্ত্রণ করবে বড়মা-আবেগে ভাসা মতুয়া রাজনীতি। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, রানাঘাট কেন্দ্রে তা আরও প্রকট হবে, সন্দেহ নেই।

সরস্বতী পুজোর আগের রাতে নিজের বাড়ির কাছেই খুন হয়েছিলেন কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস। তিনি ছিলেন জেলা তৃণমূলের প্রধান মতুয়া মুখ। এবং তাঁকে সামনে রেখেই মতুয়া সংগঠন ধরে রেখেছিল শাসক দল। তাঁর মৃত্যুর পরে যে একটা বড় শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে তা স্বীকার করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর বিকল্পও যে খুঁজে পাওয়া যায়নি তা মেনে নিচ্ছেন জেলা নেতারাও।

মঙ্গলবার রাতে বড়মার মৃত্যুসংবাদ আসার পরেই তৃণমূল ও বিজেপি দুই শিবিরেই পরের কর্মসূচি নিয়ে ভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা যা-ই হোক, তা কার্যকর করবে কে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত বলছেন, ‘‘সত্যজিৎ না থাকায় অসুবিধা তো হচ্ছেই। তার বিকল্প আমরা পাইনি। সেই শূন্যস্থান আমরা যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে পুরণ করব।”

সব শূন্যস্থান যে ‘যৌথ নেতৃত্বের মাধ্যমে’ পূরণ করা যায় না, তা গেলে যে বড় নেতাদের দরকার হত না, সেই সব প্রসঙ্গ অবশ্য তাঁরা আপাতত এড়িয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তব হল, এ দিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে মতুয়াদের সংগঠিত করে উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে বড়মার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলেও সেই উদ্যোগ কিছুটা ছন্নছাড়াই ঠেকেছে।

ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই নার্সিংহোম থেকে ছাড়া পান বিজেপির দক্ষিণ জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার। তার আগে সোমবার নার্সিংহোমে এসে সিআইডি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গিয়েছে। বাড়ি ফিরেও তিনি বিশ্রামে রয়েছেন। বুধবারও প্রায় সারা দিনই ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকি অনুগামীরাও সকলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না বলে দলীয় সূত্রের খবর। সিআইডি এবং অসুস্থতার জোড়া গেরো কাটিয়ে কবে তিনি পুরোদস্তুর মাঠে ফিরবেন, তা নিয়ে দলেই সংশয় তৈরি হয়েছে।

আর, দুই দলের দুই নেতার এই অনুপস্থিতিই এখন পুরোদস্তুর কাজে লাগাতে চাইছেন দিব্যেন্দু। তিনি নিজে মতুয়া হওয়ায় সেই বাজিটা অনেক দিন ধরেই খেলতে চাইছেন তিনি। এর আগে বারবার মতুয়া ধর্ম সম্মেলন আয়োজনে তাঁকেই দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার বড়মার অবস্থা সঙ্কটজনক জেনে তিনি দুপুরেই চলে গিয়েছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। বুধবার ঠাকুরনগরে তো গিয়েছেনই, জেলা জুড়ে স্মরণসভা করার কর্মসূচিও ঠিক করে ফেলেছেন অনুগামীদের নিয়ে। দিব্যেন্দু অবশ্য বলছেন, “শূন্যস্থান দখলটখল কিছু নয়। বড়মা নেই, এটা ভাবতেই পারছি না। তাই ছুটে যাচ্ছি।”

Matua Binapani Devi Matua Votebank Lok Sabha Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy