Advertisement
E-Paper

অবশেষে হদিস অর্ণবের

সিআইডি-র দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়ে। বিকেলে সিআইডির ডিআইজি (অপারেশনস) নিশাত পারভেজ দাবি করেন, গত সাত দিন ধরে তিনি হাওড়া স্টেশন প্ল্যাটফর্মেই ছিলেন!

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২৫
খোঁজ মেলার পরে অর্ণব (মাঝে)। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

খোঁজ মেলার পরে অর্ণব (মাঝে)। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

টানা সাত দিন পরে খোঁজ পাওয়া গেল কৃষ্ণনগর থেকে বেপাত্তা হয়ে যাওয়া অফিসার অর্ণব রায়ের। নদিয়া জেলায় ইভিএম ও ভিভিপ্যাট যন্ত্রের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ভোটের মুখে তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে।

সিআইডি-র দাবি, বৃহস্পতিবার সকালে হাওড়া স্টেশন থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়ে। বিকেলে সিআইডির ডিআইজি (অপারেশনস) নিশাত পারভেজ দাবি করেন, গত সাত দিন ধরে তিনি হাওড়া স্টেশন প্ল্যাটফর্মেই ছিলেন! ভোটের কাজের চাপ নিতে না পেরেই তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে সোজা হাওড়া স্টেশনে চলে আসেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে সাত দিন ধরে তাঁর খোঁজ পাওয়া গেল না কেন, সেই প্রশ্নও এড়ানো যাচ্ছে না।

গত ১৮ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃষ্ণনগর থেকেই উধাও হয়ে গিয়েছিলেন অর্ণব। দুপুরে তাঁর মোবাইলের শেষ ‘টাওয়ার লোকেশন’ দেখা গিয়েছিল নদিয়ারই শান্তিপুর স্টেশনের কাছে। তার পর থেকেই ফোন বন্ধ। জেলা প্রশাসনের একাধিক সূত্রে দাবি করা হয়, দু’দিন আগে জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত তাঁকে কাজ নিয়ে বকুনি দিয়েছিলেন। তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিস্থিতিও তৈরি হয়। সেই কারণেই অর্ণব কর্মস্থল ছেড়ে চলে যান। যদিও জেলাশাসক এবং অর্ণবের স্ত্রী তথা সহকর্মী অনীশা যশ তা উড়িয়ে দেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

অর্ণব উধাও হওয়ার দু’দিন পরে পুলিশের কাছে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ করে তাঁকে আটকে রাখার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অনীশা। এ দিনও অর্ণবের শ্বশুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএসপি (ট্র্যাফিক) নির্মল যশ বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়, কারও কথায় ওঁকে কোথাও রেখে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশি চাপ বেড়ে যাওয়ায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।’’

এ দিন সকালে অর্ণবই প্রথম ফোন করেন অনীশাকে। জেলা প্রশাসনের কর্তাদের খবর দিয়ে অনীশা কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতার দিকে রওনা দেন। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, অর্ণব আছেন তাঁর শ্বশুরবাড়ি হাওড়ার শিবপুর এলাকার বেতাইতলায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দরজা-জানালা বন্ধ। ডাকাডাকি করে কারও সাড়া মেলেনি। পরে জানা যায়, সকালেই তাঁকে ভবানী ভবনে পুলিশের সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ডেকে পাঠানো হয়েছে অনীশাকেও।
প্রশ্ন হল, অর্ণবের মতো এক জন অফিসার সাত দিন ধরে হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে থাকলেন, অথচ তা কেউ জানতেই পারল না? এ দিনই বা তাঁর খোঁজ পাওয়া গেল কী করে?

সিআইডি সূত্রের দাবি, সাত দিন বাদে এ দিনই অর্ণব তাঁর মোবাইল ফোন ফের খোলেন। কাউকে ফোন বা মেসেজ না করলেও তিনি ইন্টারনেট ব্যবহার করছিলেন। ওই ফোনের ইন্টারনেট প্রোটোকল অ্যাড্রেসের সূত্রেই গোয়েন্দারা জানতে পারেন, অর্ণব হাওড়া স্টেশনে রয়েছেন। এর পরেই অভিযান চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। তার পরে হাওড়া স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ কি খতিয়ে দেখা হয়েছিল? নিশাত পাল্টা যুক্তি দেন, কেউ নিজের ইচ্ছায় চলে গেলে আর তিনি নিজে ফিরে এসে তা জানালে বললে সিসিটিভি দেখার আর দরকার কী? ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে অর্ণবকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের এড়িয়ে ভবানী ভবনের পিছন গেট দিয়ে তাঁকে বার করে নদিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে অনীশা রওনা হয়ে যান বাড়ির দিকে।
সত্যিই যদি কাজের চাপে অর্ণব উধাও হয়ে গিয়ে থাকেন, তার দায় কি জেলা প্রশাসনের উপরে বর্তায় না? রাতে নদিয়ার জেলাশাসক বলেন, ‘‘কে কী বলছে, কিছু আসে-যায় না। অর্ণব ভাল আছে, এটাই বড় কথা।’’ আর আসানসোলের বাড়িতে বসে অর্ণবের বাবা হারাধন রায় বলেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে। ও জানিয়েছে, যা বলার পরে বলবে।’’

Politics Lok Sabha Election 2019 TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy