রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। —ফাইল চিত্র
আলিপুরদুয়ারে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ হুঙ্কার দিয়েছিলেন, এ রাজ্যেও অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো হবে। অসমের মতো এখানেও নাগরিক পঞ্জি চালু করবে বিজেপি। অমিতের এই বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সোমবার রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের কাছে অভিযোগ জানাল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। বলা হল, ভোটে জেতার অভিপ্রায়ে যা খুশি তাই বলা যায় না, সেটা কমিশনকে সুনিশ্চিত করতে হবে।তৃণমূল যেমন বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে, তেমনই রাজ্যের বিরোধী দলগুলি শাসকদলের বিরুদ্ধেও কমিশনের কাছে মুখ খুলেছে।
রবিবারই কলকাতায় পৌঁছেছেন বিবেক দুবে। সোমবার সকালে তাঁর সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি দল দেখা করেন।রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাবের কাছ থেকে পাওয়া এ রাজ্যের ভোট পরিস্থিতির সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখলেও, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির অভাব-অভিযোগ শুনতে চাইছিলেন বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক।তাই কলকাতায় পৌঁছনোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেললেন তিনি। ভোটের সময় আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে এ রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনিক কর্তা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তাঁদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার আগে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, অভাব-অভিযোগ শুনে তিনি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের আশ্বাস দিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
গত শুক্রবার অসম লাগোয়া আলিপুরদুয়ারে বিজেপির জনসভায় জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ বলেন, ‘‘আমরা এনআরসি এনে বাংলা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের বার করে দেব।’’ এ দিন বিবেকের সঙ্গে দেখা করে সেই অভিযোগ জানিয়ে বেরনোর পর তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, “ভোটে জেতার জন্যে যা ইচ্ছে বলা যায় না।”
আরও পড়ুন: অসমে ৭০ হাজার চিহ্নিত অনুপ্রবেশকারী উধাও! সুপ্রিম কোর্টে তথ্য দিল রাজ্য সরকার
আরও পড়ুন: আখলাক খুনে মূল অভিযুক্ত যোগীর সভার প্রথম সারিতে!
বিবেকের সঙ্গে দেখা করে অমিত শাহের মন্তব্য নিয়েযেমন তৃণমূল অভিযোগ জানিয়েছে, তেমনই বিরোধী দলগুলি বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কার্যকলাপ এবং রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি সংক্রান্ত তথ্য তুলে দেন বিবেক দুবের হাতে। বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, ‘‘বাংলার নিজস্ব সংস্কৃতি বলে আর কিছু বাকি আছে নাকি! রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’’
এ দিন সকালে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিবেক দুবে। তাঁর সঙ্গে বৈঠকের পর কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “ভোট নির্বিঘ্নে হবে কিনা, কমিশনের দায়িত্ব। ভোটে অশান্তি হলে বাংলার মানুষ কমিশনের দিকেই আঙুল তুলবেন। তার দায়িত্ব নিতে হবে কমিশনকেই।”
একই সুর শোনা গিয়েছে বাম নেতা রবীন দে-এর গলাতেও। তৃণমূলের বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “বীরভূম জেলায় ভোট হয় না। সেখানে কেউ ভোট দিতে পারেন না। ভোটের সময় অশান্তি রুখতে কমিশনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে। এ রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের উপর ভরসা করা যায় না। সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গ তুলে ভাগাভাগির চেষ্টা চলছে।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যদিও বিরোধীদের এই সব অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে চায়নি তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষকের সঙ্গে বৈঠকের তাপস রায় বলেন, “রাজ্যে এসে নাগরিক পঞ্জি নিয়ে বিতর্কত মন্তব্য করে চলেছেন বিজেপির নেতারা। ভোটে জেতার জন্যে যা ইচ্ছে বলা যায় না। কিন্তু বিজেপি নেতাদের মুখে সে রকমই ভাষণ শোনা যাচ্ছে। আমরা এর তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy