Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বঙ্গবাসীর কাছে বেশি জরুরি কর্মসংস্থানই, বলছে সমীক্ষা

রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের ২১ হাজার বাসিন্দার মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে শুক্রবার এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে দুই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ (এডিআর)।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:২৫
Share: Save:

যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি ধর্ম, সন্ত্রাস, জাতপাত নিয়ে মাতামাতি করলেও দেশের সাধারণ মানুষের কাছে রাস্তাঘাট, গণপরিবহণই ভোটে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে জানিয়েছিল একটি সমীক্ষা। অন্য একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ভোটে এখানকার বাসিন্দাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কর্মসংস্থান। গ্রাম ও শহর মিলিয়ে ৩৯.২৮ শতাংশ বাসিন্দা মনে করেন, কর্মসংস্থানকেই সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। শুধু শহরের কথা ধরলে এই মতের সমর্থক ৪৫ শতাংশ বাসিন্দা।

রাজ্যের ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের ২১ হাজার বাসিন্দার মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে শুক্রবার এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে দুই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস’ (এডিআর)। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভে রিপোর্ট, ২০১৮’ নামে ওই সমীক্ষা জানাচ্ছে, কৃষি ঋণ, কৃষিপণ্যের দাম, জল ও বায়ু দূষণ, শহরের যানজট, গণ-পরিবহণ ব্যবস্থাও ভোটারদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

ভোটারেরা সমীক্ষকদের বলেছেন, রাজ্য সরকার নারীর ক্ষমতায়ন ও নিরাপত্তা, শহরাঞ্চলে স্কুলশিক্ষা এবং গার্হস্থ্য ক্ষেত্রে বিদ্যুদয়নের কাজে তাঁরা খুশি। তবে কর্মসংস্থান, কৃষি ঋণ প্রদান, জল ও বায়ু দূষণ প্রতিরোধে ভাল কাজ হয়নি। পাঁচ নম্বরের বিচারে সমীক্ষকেরা তিন নম্বর পাওয়াকে ‘গড়ে ভাল ফল’ বলে গণ্য করেছেন। মূল চাহিদাগুলির ক্ষেত্রে সরকারের প্রাপ্ত নম্বর তিনের নীচেই রয়েছে।

ভোটারদের বাসস্থান অনুযায়ী, এই সমীক্ষাকে গ্রামীণ এবং শহুরে, দু’টি ভাগে ভাগ করেছেন সমীক্ষকেরা। সেই ভাগে দেখা গিয়েছে, গ্রামাঞ্চলের ভোটারেরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন কৃষি ঋণ প্রদান, কৃষিপণ্যের দাম, বীজ ও সারে ভর্তুকিকে। শহুরে ভোটারদের কাছে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে কর্মসংস্থান, জল ও বায়ুদূষণ এবং যানজট। এই সব ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাজে নাগরিকেরা খুশি নন। যা দেখিয়ে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইলেকশন ওয়াচ’-এর সভাপতি তথা বম্বে হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘ভোটারদের প্রত্যাশা যে পূরণ হচ্ছে না, সেটাই দেখা যাচ্ছে সমীক্ষায়।’’

চাহিদা ও সরকারের কাজের পাশাপাশি ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটারদের প্রবণতার বিষয়টিও উঠে এসেছে সমীক্ষায়। সমীক্ষকেরা জানান, বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী-পদের প্রার্থীকে দেখেই ভোটারদের বড় একটি অংশ ইভিএমে নিজের মত প্রকাশ করেছিলেন। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের ব্যক্তিগত ভূমিকা দেখেও ভোট দেন ভোটারেরা। সমীক্ষকদের রাজ্য কো-অর্ডিনেটর উজ্জয়িনী হালিমের মতে, ‘‘একটি মানুষকে সব আসনে প্রার্থী ভেবে ভোট দেওয়া গণতন্ত্রের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়।’’ সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ভোটে টাকা বা উপহার বিলোনো যে নিষেধ, ৬৭ শতাংশ ভোটারেরই তা জানা আছে। কিন্তু সেই ভোটারদের ৩২ শতাংশ মেনে নিয়েছেন, নিষেধ সত্ত্বেও কিছু জায়গায় ভোটারদের মধ্যে টাকা বা উপহার বিলোনো হয়ে থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE