Advertisement
E-Paper

‘লিড কিন্তু চাই-ই চাই’

কান্দি মহকুমার বিভিন্ন ব্লক নেতাদের তলব করে জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, ‘হয় লিড, না হলে লোকসান!’ আরও খোলসা করে— ‘‘দলীয় প্রার্থীকে পর্যাপ্ত ভোটের লিড দিতে না পারলে পদ টলমলে!’’

কৌশিক সাহা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৩৬

হয় লিড, না হলে লোকসান!

সে বার লড়াই হয়নি, যুদ্ধটা বরং এ বার। নিজের প্রতিপত্তির সঙ্গে দলীয় ফতোয়ার।

কান্দি মহকুমার বিভিন্ন ব্লক নেতাদের তলব করে জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন, ‘হয় লিড, না হলে লোকসান!’ আরও খোলসা করে— ‘‘দলীয় প্রার্থীকে পর্যাপ্ত ভোটের লিড দিতে না পারলে পদ টলমলে!’’

পদ রাখি না লিড রাখি’র দোটানায় এখন সকাল থেকে মধ্যরাত কাবার দলের মেজো-সেজো নেতাদের। তাঁরা খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘এমন জানলে কে ভাই প্রধানের জোয়াল কাঁধে নিত!’’

পঞ্চায়েত নির্বাচনের চাকা বছরখানেকও ঘোরেনি। প্রধানদের উপরে ঝুলে পড়েছে জেলা নেতৃত্বের ফতোয়া— পদ আঁকড়ে থাকতে হলে কিছু করে দেখাও, লিড দাও!

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের অধিকাংশ পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন শাসক দলের প্রার্থীরা। প্রধান হওয়ার লড়াইয়ে ‘আর্থিক’ প্রতিপত্তিও যে প্রাধান্য পেয়েছিল, দলের মেজো নেতাদের অনেকেই তা মাথা নিচু করে মেনে নিচ্ছেন এখন।

ভরতপুর ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আজহারউদ্দিন সিজার বলছেন, ‘‘লিড দেওয়া নিয়ে জেলা নেতারা কেন চাপ দিচ্ছেন জানি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মনেই বা পড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে কেন, তা-ও জানি। তবে তা নিয়ে দলের বাইরে মুখ খুলব না।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কান্দির এক তাবড় তৃণমূল নেতা বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট কী ভাবে হয়েছে তা সকলেই জানেন। এমনিতেই ভোট না দিতে পারায় এলাকার মানুষ বেজায় ক্ষুব্ধ। পঞ্চায়েতের প্রধান থেকে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি থেকে কর্মাধ্যক্ষ করা নিয়েও যে ঝড় বয়ে গিয়েছে, তা-ও অজানা নয়। ওই ঝড় ঝাপটার পরে যাঁদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে তাঁদের এ বার কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার পালা।’’

আর তাই জেলা নেতৃত্বের ওই ফতোয়া। ‘হিটলারি’ পদ্ধতিতেই পঞ্চায়েত নেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে ভাবেই হোক এ বার দলকে ফিরিয়ে দাও কিছু, দলীয় প্রার্থীকে লিড দেওয়ার দায় তুলে নাও কাঁধে।

লিড দিতে না পারলে চেনা চোখ রাঙানিও ফিরেছে। দলের অন্দরের খবর— রীতিমতো শাসানো হয়েছে, লিড দিতে না পারলে, প্রয়োজনে ওই অঞ্চলের প্রধানদের ক্ষমতাও ছেঁটে ফেলা হবে। কাগ্রাম অঞ্চল সভাপতি তাপস রায় খোলাখুলিই বলছেন, ‘‘কত লিড, সংখ্যাটাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ফলে চাপে তো আছিই!’’

তবে, ওই হুমকির পরে বিপাকে পড়তে হয়েছে শাসক দলকে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘প্রধান ও ব্লক নেতৃত্বের বিরোধী সদস্যরা এখন তৃণমূলে থেকে তৃণমূলের বিরোধী ভোট করতে একত্রিত হতে শুরু করেছে। আর তাতেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শাসক দলের মেজ-সেজ নেতাদের। ফলে দলের মধ্যে এখন দ্বন্দ্ব মেটাতে কালঘাম ছুটছে ওই নেতাদের।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুব্রত সাহা অবশ্য বলছেন, “যেখানে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ সমস্ত আসনেই তৃণমূল ক্ষমতায় আছে সেখানে আমাদের পক্ষে ভোট বেশি হবে এটাই তো স্বাভাবিক ঘটনা। সেটা ধরে নিয়েই কর্মীদের লিড ধরে রাখতে বলা হয়েছে। এটা লুকিয়ে চুরিয়ে বলাবলি করার ব্যাপার তো নয়।’’

লোকসভা ভোট ২০১৯ Lok Sabha Election 2019 Murshidabad
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy