Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

১০০% সুরক্ষা দেওয়া যায়নি, কবুল বিবেকের

সোমবার চতুর্থ দফার ভোটের পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

দেশজোড়া সাত দফা ভোটের চারটি পর্ব অতিক্রান্ত। এবং সেই সব দফার ভোটে ১০০ শতাংশ নিখুঁত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত যে করা যায়নি, তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে।

সেই সঙ্গে বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের বক্তব্য, ভোট দেওয়ার জন্য সাহস করে বেরিয়ে আসতে হবে ভোটারদেরই। তার জন্য বাকি তিন দফার ভোটে নিরাপত্তার সামগ্রিক বন্দোবস্ত যথাসম্ভব আঁটোসাঁটো রাখার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। গত চার দফার নির্বাচনের পরে বিরোধী শিবির কেন্দ্রীয় বাহিনীর কার্যকারিতা নিয়ে যে-ভাবে প্রশ্নের পর প্রশ্ন তুলেছে, তার পরে বিবেকের এই অবস্থান তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।

সোমবার চতুর্থ দফার ভোটের পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। কড়া ভাষায় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করেন তাঁরা। মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও) আরিজ আফতাব এবং বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় ভি নায়েককে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন বিবেক। সেখানেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি নেতারা। কারণ, চতুর্থ দফার ভোটে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৯৮% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দিতে পারেনি কমিশন। ওই ভোটে সর্বাধিক ৯৬% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া গিয়েছিল। উপরন্তু তাদের ততটা সক্রিয় হতেও দেখা যায়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কাঠের পুতুলের মতো দাঁড় করিয়ে না-রেখে তাদের যথাযথ ভাবে ব্যবহার করুক কমিশন। ভোটারদের পরিচয়পত্র পরীক্ষার দায়িত্ব তাদেরই দেওয়া হোক।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এ দিনের বৈঠক শেষে সিইও-র দফতর থেকে বেরোনোর সময় বিবেক বলেন, “সবটা একশো ভাগ নিখুঁত করা যায় না কখনওই। তবে সর্বোচ্চ যা সম্ভব, সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোটের স্বার্থে সেই পদক্ষেপই করা হবে।’’

বিগত দফার ভোটে একাধিক জায়গায় বুথ পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। তা নিয়ে কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি করে সুর চড়িয়েছেন তাঁরা। সেই প্রসঙ্গে বিবেক জানান, পরের বিভিন্ন দফার ভোটে এলাকায় টহলদারি, রুটমার্চের পাশাপাশি ভোটারদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আরও সক্রিয় ভাবে কাজ করবে বাহিনী। বিবেক বলেন, “ভোটারদেরও সাহস করে এগিয়ে এসে ভোটে অংশ গ্রহণ করতে হবে। এত দিন ধরে ভোটদানের যে-হার দেখা গিয়েছে, তা খারাপ নয়। বাকি ভোটে যথেষ্ট ব্যবস্থা রাখছি আমরা।”

পঞ্চম দফার ভোটে কী ব্যবস্থা হবে? বিবেক জানান, চতুর্থ দফার ভোটে কমিশনের চ্যালেঞ্জ ছিল, একক বুথগুলিতে পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া। কারণ, সেগুলিতেই সমস্যা হয় সব চেয়ে বেশি। এই ভাবেই পর্যায়ক্রমে দুই, তিন বা তার বেশি বুথের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রকে সুরক্ষিত করতে হয়েছে সমস্যার গভীরতা অনুযায়ী। ফলে যে-সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে চার বা তার বেশি বুথ রয়েছে, সেখানে রাজ্য পুলিশই নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলেছে। পরের দফায় রাজ্যে পর্যাপ্ত বাহিনী থাকবে। তাই সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব। “পরের ভোটে ৫৭৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। তাই সেই নিরাপত্তা থেকে কোনও বুথই বাদ যাবে না,” আশ্বাস দিয়েছেন বিবেক। কমিশন সূত্রের খবর, পঞ্চম পর্বে সব বুথে আধাসেনা দেওয়ার পাশাপাশি ১৪২টি কুইক রেসপন্স টিম নামানো হবে।

বিশেষ পুলিশ-পর্যবেক্ষকের আজ, বুধবার চুঁচুড়ায় প্রশাসনিক বৈঠকের পাশাপাশি বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনায় বসার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE