চলন্ত ট্রেনে মাদক মেশানো চা ও পকৌড়া খাইয়ে দুই যাত্রীকে বেহুঁশ করে তাঁদের সর্বস্ব লুটে পালিয়েছিল দুই দুষ্কৃতী। দুই যাত্রীর মধ্যে এক জনের জ্ঞান আর ফেরেনি। তিনি মারা যান। অন্য জনের জ্ঞান ফেরে ন’দিন পরে। আট বছর আগের সেই ঘটনায় মঙ্গলবার দুই দুষ্কৃতীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল শিয়ালদহ আদালত।
দণ্ডিতদের নাম অলোক ঘোষ ও গোপাল মিস্ত্রি। বছর পঁয়ত্রিশের অলোকের বাড়ি চুঁচুড়ায় আর মধ্যবয়স্ক গোপাল রিষড়ার বাসিন্দা। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। শিয়ালদহ আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ জীমূতবাহন বিশ্বাস এ দিন মামলার রায় দেন। মহিরুল ইসলাম নামে রেলের এক টিকিট পরীক্ষকের বিরুদ্ধে শিয়ালদহের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারকে
বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশও
দিয়েছেন বিচারক।
সিআইডি সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটে ২০০৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শিয়ালদহমুখী তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসের এস-এইট কামরায়। ওই সংরক্ষিত কামরায় টিকিট পরীক্ষক ছিলেন মহিরুল। যাত্রীর ভেক ধরে ফালাকাটা স্টেশন থেকে ওঠা দুই দুষ্কৃতীর বার্থ সংরক্ষিত ছিল না। কিন্তু টিকিট পরীক্ষক পরে তাদের বার্থ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে দেন।
মাদকের প্রভাবে মৃত যাত্রীর নাম সুনীলচন্দ্র দাস (৬৪)। জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে তিনি ওই ট্রেনে উঠেছিলেন। মাদকের শিকার অন্য যাত্রী অরুণ চন্দ্র উঠেছিলেন ফালাকাটা থেকে। তাঁর বয়স এখন ৫৩ বছর। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেন ঢোকার পরে রেল পুলিশ কামরায় রুটিন তল্লাশি চালাতে গিয়ে দুই যাত্রীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে।
অরুণবাবু সুস্থ হলে তাঁর বর্ণনার ভিত্তিতে দুই অভিযুক্তের স্কেচ আঁকানো হয়। এবং সেই স্কেচ ধরে সন্ধান চালিয়ে দুই দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে সিআইডি। গোয়েন্দারা জানান, টিআই প্যারেডে অরুণবাবু দু’জনকে শনাক্ত করেন। টিকিট পরীক্ষক মহিরুল কিন্তু দুই অভিযুক্তের কাউকেই শনাক্ত করতে পারেননি।