রাজ্য জুড়ে সপ্তাহভর ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণাবর্তের জেরে আগামী তিন দিন দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ঝড়বৃষ্টি চলবে উত্তরবঙ্গেও।
হাওয়া অফিস আগেই জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং সংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি সক্রিয় রয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্তও, যেটি আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ক্রমশ উত্তর-পশ্চিমে ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর ছত্তীসগঢ়ের দিকে এগোবে। মৌসুমি অক্ষরেখা বঠিন্ডা, রোহতক, কানপুর, ডালটনগঞ্জ এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের নিম্নচাপ অঞ্চলের কেন্দ্র বরাবর দক্ষিণ-পূর্বে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। তা ছাড়া, রাজ্যে এমনিতেই সক্রিয় রয়েছে মৌসুমি বায়ু। এ সবের জেরে সপ্তাহভর কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে ঝড়বৃষ্টি চলবে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের (৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ওই জেলাগুলির জন্য কমলা সতর্কতা জারি হয়েছে। দক্ষিণের অন্যান্য জেলাতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বর্ষণের (৭ থেকে ১১ সেন্টিমিটার) সম্ভাবনা রয়েছে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে বলে জানিয়েছে আলিপুর। বুধবারও ঝড়বৃষ্টি চলবে। ওই দিন পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়ায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বাকি জেলাগুলিতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার বিশেষ উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। শুধু তা-ই নয়, নিম্নচাপের জেরে আগামী ২৪ ঘণ্টা পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আগামী সাত দিন উত্তরবঙ্গেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি এবং কালিম্পং জেলার কোনও কোনও জায়গায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। বুধবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ার জেলায়। রবি ও সোমবার জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কালিম্পং ও আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এর মাঝে সারা সপ্তাহ জুড়েই কমবেশি ঝড়বৃষ্টি চলবে।
সোমবার রাত থেকে নাগাড়ে বর্ষণ হয়ে চলেছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে। গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরে ৮১.৬ মিলিমিটার, দমদমে ৯৯.৩ মিলিমিটার এবং সল্টলেকে ৮৮.৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কলকাতার বেশির ভাগ রাস্তা জলমগ্ন। লালবাজার, ফিয়ার্স লেন, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, নর্থ পোর্ট থানা এলাকা-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গিয়েছে। কোথাও কোথাও জল হাঁটু ছুঁয়েছে। ফলে উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা— প্রায় সর্বত্র কমবেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শহরবাসী।