বিমল গুরুঙ্গ। ফাইল চিত্র।
আগামী ১৭ অগস্টের মধ্যে মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলার চার্জগঠন শেষ করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারককে ওই নির্দেশ দিয়েছে।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট সিবিআইকেও নির্দেশ দিয়েছে, ওই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন অর্থাৎ ২৪ জুলাই অভিযুক্ত সকলকে নগর ও দায়রা আদালতে হাজির করাতে হবে।
এই খুনের মামলার ৪৮ জন অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ, আশা গুরুঙ্গ, রোশন গিরি-সহ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রথম সারির সব নেতা। এঁদের মধ্যে বিমল, আশা-সহ ২৩ জনের আগাম জামিন এর আগেই মঞ্জুর করেছিল হাইকোর্ট। তবে উচ্চ আদালত তখন জানিয়েছিল, চার্জগঠনের শুনানির সময়ে অভিযুক্তদের কলকাতা পুলিশের এলাকায় এসে থাকতে হবে।
এ বার একই নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চও। এই মুহূর্তে পাহাড়ে পুরোদমে আন্দোলন চালাচ্ছে মোর্চা। পথে না নামলেও গুরুঙ্গ পাতলেবাসে নিজের বাড়িতে বসে সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর বা দলের বাকি নেতাদের কি পাহাড় ছেড়ে কলকাতায় এসে থাকা সম্ভব, হাইকোর্টের নির্দেশ শোনার পরে পাহাড়ে এখন এই নিয়েই আলোচনা চলছে। পাহাড়ের লোকজন বলছে, একে তো এর ফলে মোর্চার আন্দোলন আবার নেতৃত্বহীন হয়ে পড়বে। তা ছাড়া কলকাতায় গুরুঙ্গের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবে কে?
মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম মুখপাত্র ত্রিলোচন রোকা বলেছেন, ‘‘আদালতকে আমরা সম্মান করি। সব সময়ে আইনের পথে চলি। এখনও চলছি। তবে বিচারাধীন মামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ তবে অভিযুক্তদের কয়েক জনের আইনজীবী এ দিন জানিয়েছেন, তাঁরা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। মোট ২৩ জন অভিযুক্তের কৌঁসুলিরা একজোট হয়ে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে চাইছেন। আইনজীবীদের কেউ কেউ বললেন, নিম্ন আদালতে অভিযুক্তরা যখন চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আবেদন করেছেন এবং সেই আবেদন নিয়ে শুনানি চলছে, তখন ১৭ অগস্টের মধ্যে চার্জগঠন করার নির্দেশ হাইকোর্ট
দেয় কী করে? এটা জানতে চাওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টের কাছে। তাঁদের আরও বক্তব্য, হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে চার্জগঠনের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বিচারক প্রভাবিতও হতে পারেন। এই যুক্তিও দেওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টে।
এ দিন সিবিআই যে হলফনামা হাইকোর্টে পেশ করে, সেখানে চার্জশিট থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আবেদনের কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ জানান, মদন তামাঙ্গের স্ত্রী ভারতীদেবীর একটি আবেদন নিয়েও শুনানি চলছে। ভারতীদেবী সেই আবেদনে জানান, যে আদালতে এই মামলাটির শুনানি চলছে, তার বিচারক কার্শিয়াঙের বাসিন্দা। তাই ভারতীদেবীর আশঙ্কা, ওই আদালতে তিনি সুবিচার না-ও পেতে পারেন।
সব পক্ষের সওয়াল শোনার পরেই ১৭ অগস্টের মধ্যে
চার্জগঠন শেষ করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে ২৩ অগস্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy