Advertisement
E-Paper

প্রথম কোচবিহারের সঞ্জীবনী, দ্বিতীয় স্থানে কালনার শীর্ষেন্দু

৬৮৯ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিকে রাজ্যের প্রথম স্থানাধিকারী সঞ্জীবনী চিকিৎসক হতে চায়। ডেঙ্গিতে গত বছরের মৃত্যুমিছিল, এ বার নিপা ভাইরাস নিয়ে মানুষের অসহায় আতঙ্কে ভাবিত স্থানীয় সুনীতি অ্যাকাডেমির এই ছাত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৮ ০৪:১১
নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব চিত্র।

পড়ার ফাঁকে সুযোগ পেলেই গল্পের বই নিয়ে বসা বরাবরে অভ্যেস। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনির চরিত্রদের অনুভূতির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে ভাল লাগে। ‘পথের পাঁচালি’ হাতে নিলেই অপু-দুর্গা কড়া নাড়ে ওর মনের দরজায়। তবে শুধু গল্প নয়, চারপাশের মানুষের অসহায়তাও সারা ক্ষণ ভাবিয়ে তোলে কোচবিহারের সঞ্জীবনী দেবনাথকে।

৬৮৯ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিকে রাজ্যের প্রথম স্থানাধিকারী সঞ্জীবনী চিকিৎসক হতে চায়। ডেঙ্গিতে গত বছরের মৃত্যুমিছিল, এ বার নিপা ভাইরাস নিয়ে মানুষের অসহায় আতঙ্কে ভাবিত স্থানীয় সুনীতি অ্যাকাডেমির এই ছাত্রী। বুধবার ফল বেরোনোর পরে সঞ্জীবনী বলেছে, “হয় চিকিৎসক হব, নয়তো চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা করব। সেটাই আমার লক্ষ্য।” তবে রাজ্যে প্রথম হবে সেটা সে স্বপ্নেও ভাবেনি। ভাবেননি তার বাবা-মাও। বাবা পঙ্কজ দেবনাথ কোচবিহার কলেজের অধ্যক্ষ। মা সীমা দিনহাটা হাইস্কুলের শিক্ষিকা। সঞ্জীবনীর মায়ের কথায়, “ও খুব ভাল রেজাল্ট করবে এটা আশা ছিল। তবে প্রথম হবে তা ভাবিনি।” দিনহাটা রোডে নিউ কদমতলার কাছে বাড়িতে বসে সঞ্জীবনী জানাল, সাত জন গৃহশিক্ষক ছিল তার। স্কুলের শিক্ষিকারাও পড়াশোনায় খুব সাহায্য করেছেন। দিনে ছয় থেকে সাত ঘণ্টা পড়শোনা করত সঞ্জীবনী।

৬৮৮ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় পূর্ব বর্ধমানের কালনার সাতগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শীর্ষেন্দু সাহা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নীহাররঞ্জন সাহার কথায়, ‘‘খুবই মেধাবী ছেলে শীর্ষেন্দু। ওর যেমন হাতের লেখা, তেমনই নিখুঁত উত্তর!’’ স্কুল থেকে কিছুটা দূরেই ঢাকাকলোনি। সেখানেই একতলা বাড়ি শীর্ষেন্দুর। বাবা সুধাংশুশেখর সাহা কলকাতা পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর। তার মা সীমা বলেন, ‘‘ছেলে ভাল ফল করবে জানতাম। তবে দ্বিতীয় হবে ভাবতে পারিনি।’’ প্রথম স্থানাধিকারীর থেকে এক নম্বর কম পাওয়ায় আফসোস হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়ায় শীর্ষেন্দুর জবাব, ‘‘যা ফল হয়েছে, সেটাই তো অনেক।’’ তবে ভবিষ্যৎ নিয়েও এখনই কোনও পরিকল্পনা নেই তার।

এ বার তৃতীয় হয়েছে তিন জন। তিন জনই উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা। জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলের দুই পড়ুয়া নীলাব্জ দাস, মৃন্ময় মণ্ডল এবং কোচবিহারের সুনীতি অ্যাকাডেমির ময়ূরাক্ষী সরকারের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭। একই স্কুলে পড়াশোনা। জলপাইগুড়িতে একই পাড়ায় থাকে নীলাব্জ ও মৃন্ময়। নীলাব্জের বাবা তনয় এবং মা লিপিকা দু’জনেই স্কুলশিক্ষক। মৃন্ময়ের বাবা রণজিৎ শহর লাগোয়া একটি স্কুলের বাংলার শিক্ষক। সব বিষয়ের এক জন করে গৃহশিক্ষক থাকলেও মৃন্ময় বাংলা পড়ত বাবার কাছেই। স্কুলে দু’জনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা থাকলেও পাড়ার বন্ধুত্ব নষ্ট হতে দেয়নি কেউই। এ দিন ফল জানার পরে দুই বন্ধু একসঙ্গে টোটোয় চেপে স্কুলে মার্কশিট আনতে গিয়েছিল। ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায় নীলাব্জ। মৃন্ময়ের লক্ষ্য বহুজাতিক সার্চ ইঞ্জিন সংস্থায় চাকরি করা। এ বারের অন্যতম তৃতীয় ময়ূরাক্ষী সরকারের বাড়ি কোচবিহারের রবীন্দ্রনগরে। বাবা সত্যেন্দ্র সরকার উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। মা অজন্তা দেবী নিউ টাউন হাইস্কুলের শিক্ষিকা। বাবার মতোই কৃষিবিদ্যা নিয়ে পড়ায় আগ্রহ ময়ূরাক্ষীর। সহপাঠী সঞ্জীবনী প্রথম হওয়ায় অত্যন্ত খুশি ময়ূরাক্ষী। তার কথায়, “আমার সব থেকে কাছের বন্ধু সঞ্জীবনী। ওর খবরের পরপরই আমার নাম শুনে খুব খুশি হয়েছি!”

এ দিন সঞ্জীবনী এবং শীর্ষেন্দুকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Madhyamik Result Sanjibani Debnath Shirshendu Saha Top Ranks
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy