Advertisement
০৪ মে ২০২৪
West Bengal Madrasah Service Commission

বিতর্কে মাদ্রাসায় নিয়োগ, ভুল প্রশ্নের জন্য প্রার্থীদের বাড়তি নম্বর দিতে হবে: কোর্ট

মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন ছিল বলে হাই কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন এক মামলাকারী। সেই প্রশ্নটি সত্যিই ভুল কি না, তা যাচাই করে এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

২০২০ সালের ৩ মার্চ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ১২১টি পদে প্রধানশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় ২০২১ সালের ১১ অগস্ট।

২০২০ সালের ৩ মার্চ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ১২১টি পদে প্রধানশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় ২০২১ সালের ১১ অগস্ট। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:২৭
Share: Save:

প্রধানশিক্ষক হওয়ার পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন এসেছিল। তার পর পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়াও অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। প্রধানশিক্ষক হিসাবে কাজে যোগ দিতে বলে নিয়োগপত্র পেয়ে গিয়েছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ওই পরীক্ষা সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিল, ভুল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সমস্ত পরীক্ষার্থীকে বাড়তি নম্বর দিতে হবে। এতে রাজ্যের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ওই প্রধানশিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হতে চলেছে বলে মনে করছে কমিশন।

কমিশন আদালতকে জানিয়েছে, এখন পরীক্ষার্থীদের নম্বর বাড়ানো হলে অনেকেই শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবেন। ফলে আবার তাঁদের ইন্টারভিউ নিতে হবে। বসাতে হবে প্যানেল। যার জেরে বিপুল সমস্যায় পড়তে হবে কমিশনকে। এই বক্তব্য শোনার পর আদালত মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ৭ দিন সময় দিয়েছে। এবং একই সঙ্গে জানিয়েছে, ২১ নভেম্বরের মধ্যেই কমিশনকে ঠিক করে নিতে হবে, কী ভাবে এই বাড়তি নম্বর দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবেন কমিশন কর্তৃপক্ষ।

ভুল প্রশ্নের মামলাটি প্রকাশ্যে আসে মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক পদের আবেদনকারী মিজানুর ইসলামের করা একটি মামলার দৌলতে। সপ্তম এসএলএসটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পরও তাঁকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি। কাট অফ মার্কস ছিল ৬১। মামলাকারী পেয়েছিলেন ৬০.৫ আদালতকে তিনি জানান, একটি প্রশ্নের উত্তরের বিকল্প ভুল ছিল। তাই তাঁর বাড়তি নম্বর পাওয়া উচিত। গত ২৮ জুলাই মিজানুরের হয়ে ওই মামলা করেন আইনজীবী আলি এহসান আলমগীর এবং রাবিয়া খাতুন। তাঁদেরই দেওয়া যুক্তি এবং পাল্টা যুক্তি শুনে বৃহস্পতিবার বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায় নির্দেশ দেন, ওই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের প্রত্যেককে বাড়তি ১ নম্বর দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, মাদ্রাসার প্রধানশিক্ষক নিয়োগের ওই পরীক্ষায় যে প্রশ্নটি নিয়ে বিতর্ক, তাতে লেখা ছিল—

রাজ্য বিধানসভায় জিরো আওয়ার হল:

১) দুপুর ১টা ২) ঘুমানোর সময় ৩) সভা সমাপ্তির সময় ৪) বাক্যবাণে আক্রমণ করার কাম্য সময়

প্রশ্নটি সত্যিই ভুল কি না, তা গত ২৮ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সচিবের কাছে জানতে চায় হাই কোর্ট। ২৮ নভেম্বর বিধানসভার সচিব জানান, এই প্রশ্নের উত্তরের বিকল্পগুলি ভুল রয়েছে। বিধানসভার কাজের ধরন অনেকটা লোকসভা এবং রাজ্যসভার মতো। জিরো আওয়ারের জন্য নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম নেই। তিনি এ-ও জানান, বিধানসভা শুরু হয় বেলা ১১টা থেকে। বিভিন্ন বিষয় উত্থাপন করার পর থেকে জিরো আওয়ার শুরু হয়। এর জন্য নির্দিষ্ট কোনও সময় বরাদ্দ করা হয় না। এর পরই মামলাটির শুনানিতে বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে ভুলের ‘মাশুল’ দেওয়ার ওই নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩ মার্চ পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন ১২১টি পদে প্রধানশিক্ষক/শিক্ষিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি লিখিত পরীক্ষা হয়। ফল প্রকাশিত হয় ওই বছর ১১ অগস্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE