প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচের পরে নকশায় ত্রুটি ধরা পড়েছে। তাই কিছু দিন কাজের পরে ‘শিলিগুড়ি গেট’ তৈরি বন্ধ। শিলিগুড়ি শহরে ঢোকার মুখে মাটিগাড়ায় পুলিশ কমিশনারের অফিসের সামনে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ওই গেট তৈরির জন্য ৩ বছর আগে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। দু’ধারের স্তম্ভ, সংযোগকারী লোহার খাঁচা তৈরি করাতে কোটি টাকার উপরে খরচও হয়ে গিয়েছে। ঠিক ছিল, তার উপরে বসবে কাচের ছাদ। কিন্তু তার আগেই কাজ বন্ধ। সরকারের নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ সংস্থাই রিপোর্ট দিয়েছে, ছাদ বসালেই তা যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে।
তাতে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন ও বর্তমান দুই মন্ত্রীর মাথাতেও। কী ভাবে জট ছাড়িয়ে বিপুল টাকা অপচয়ের দায় থেকে বাঁচা যাবে, তা নিয়েই চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।
গেট পরিকল্পনার সময় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন গৌতম দেব। বরাত দেওয়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ই টেন্ডারের মাধ্যমেই বেশির ভাগ কাজ হয়েছে। তা ছাড়া, সরকারি সংস্থাকেই বরাত দেওয়া হয়। নামী আর্কিটেক্ট নকশা দেখেছেন। দূর থেকেও যাতে আলো দেখা যায়, তাই কাচের ছাদের কথা ভেবেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শুনছি, নকশায় ত্রুটি ধরা পড়েছে। কাচের বদলে হালকা অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে ছাদ তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। এখন যিনি দফতরের দায়িত্বে, তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ গৌতমবাবুর সময়ে কাজ শুরু হলেও বিধানসভা ভোটের আগে নির্মাণ বন্ধ হয়। সরকারি সূত্রের খবর, তখন সংযোগকারী স্তম্ভের উপরে ভারী খাঁচা বসাতে গেলে তা হড়কে যাচ্ছিল। জাতীয় সড়কে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় কাজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন ইঞ্জিনিয়াররা। গত সেপ্টেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে ওই গেটের কাজ শুনে বিরক্তি প্রকাশ করেন।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ যা শুনে বৈঠকও করেন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, প্রায় দেড় কোটি টাকা জলে যাওয়ার দায় কে নেবে? রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘যতটাই জলে যাক, দায় তো কারও উপরে বর্তাবেই। সরকারি টাকা অপচয় করা যায় না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়ে রিপোর্ট দেব। যেমন নির্দেশ পাব, তেমন ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy