E-Paper

শিক্ষা নিয়ে প্রশ্নের মধ্যেই ছাত্র-সভায় আজ মমতা

ছাত্র সংগঠনের মঞ্চে হাজির হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা কার্যকর না-হওয়ার ‘দায়’ নিয়ে সেই মঞ্চে উপস্থিত হবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ০৭:২০
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শিক্ষা সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে প্রশ্নের মধ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার দলের ছাত্র সংগঠনের মঞ্চে হাজির হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা কার্যকর না-হওয়ার ‘দায়’ নিয়ে সেই মঞ্চে উপস্থিত হবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই কারণেই দলের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে তাঁদের অবস্থান নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে শাসক দলের অন্দরেও।

ভর্তি, পঠন-পাঠন সম্পর্কিত অব্যবস্থার একাধিক অভিযোগে বিদ্ধ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। নিয়োগ-দুর্নীতি, শিক্ষকের অভাব, বদলি নীতি ও পরিকাঠামোগত অভিযোগের পাশাপাশি সম্প্রতি কলেজের মধ্যে ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনে সামগ্রিক বিশৃঙ্খলা নিয়ে সরব বিরোধীরাও। এই অবস্থায় তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের এই সমাবেশ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তবে দলীয় নেতৃত্বের ধারণা, শিক্ষা সংক্রান্ত অভিযোগের পাশাপাশি এই মঞ্চ থেকে বিভিন্ন সময়ে দলের মূল রাজনৈতিক অভিমুখ স্পষ্ট করেছেন মমতা। এ বারের সমাবেশেও নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনের ভাবনা এবং প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক রাজ্য সফরে ভোটের রাজনীতির যে আবহ তৈরি হয়েছে, তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে তা বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

গত বছর এই সভা-মঞ্চ থেকেই রাজ্যে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ বিরোধী নতুন আইনের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে সেই বিল পাশ হলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। তৃণমূলের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের অসহযোগিতা’র কারণেই সেই বিলে প্রয়োজনীয় অনুমোদন মেলেনি। আর জি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী তড়িঘড়ি বিল পাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে এ বারের কর্মসূচির আগে দক্ষিণ কলকাতা আইন কলেজের ঘটনা তৃণমূলের সামনে ‘কাঁটা’ হয়ে রয়েছে। ওই ঘটনায় দলের ছাত্র সংগঠনেরই নেতা গ্রেফতার হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে ক্যাম্পাসের অব্যবস্থা নিয়ে। এই ঘটনার সূত্রে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া সংসদ নির্বাচন নিয়েও সরকার ও শাসক দল সমালোচনার মুখে পড়েছে। প্রশ্ন গড়িয়েছে আদালতেও। সেই সংক্রান্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার ‘দায়’ও শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের থাকছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের মত।

নির্বাচনী-তরজার আবহে ছাত্র জমায়েতে শক্তির প্রমাণ দিতে এক মাস ধরে রাজ্যে জুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে বুধবারই ছাত্র-সমর্থকেরা কলকাতা পৌঁছেছেন। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাগুলির সমর্থকেরা আসবেন আজ সকাল থেকে।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য মনে করেন, ‘‘ক্যাম্পাসের অব্যবস্থা বা দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সামগ্রিক ভাবে দেশের বৃহত্তম ছাত্র সংগঠন হিসেবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভূমিকা যথেষ্ট উজ্জ্বল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘শিক্ষার পরিকাঠামো ও মান নিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। তৃণমূল আমলে যা হয়েছে, তা যথেষ্ট সন্তোষজনক।’’

বিরোধীরা যদিও প্রশ্ন অব্যাহত রেখেছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ দিনও বলেছেন, ‘‘সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ। রাজ্য সরকার চায়, যত কম পড়াশোনা, তত কম চাকরি। বাংলাকে তোষণ ও ভাতা দেওয়ার রাজ্যে পরিণত করেছেন।’’ ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস থাকায় আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিভাগের পরীক্ষা বাতিল করার জন্য শাসক দলের তরফে যে লাগাতার চাপ তৈরি করা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘সব সংগঠনেরই তো প্রতিষ্ঠা দিবস আছে! বিদ্যাসাগর, রামমোহন বা মেঘনাদ সাগার জন্মদিনে কি পরীক্ষা বন্ধ থাকে? বাংলার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নিয়ে রসিকতা করতে চাইছেন এঁরা।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMCP Abhishek Banerjee Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy