বিমল গুরুঙ্গদের ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে নারাজ রাজ্য সরকার। এক দিকে, বন্ধের দিন জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে পাহাড়ের তিন জায়গায় তিন মন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, এ দিনই নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলে দেওয়া হয়েছে— বন্ধ, তার আগের ও পরের দিন রাজ্য সরকারি ও রাজ্য সরকারের অনুদানে চলা দফতরগুলিতে হাজিরা আবশ্যিক। না এলে কর্মজীবন থেকে দিন কমে যাবে এবং ওই দিনের মাইনেও কাটা যাবে।
সম্প্রতি কালিম্পঙের সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, গত চার বছরে রাজ্য সরকার বিভিন্ন খাতে জিটিএকে সাড়ে চার হাজার কোটিরও বেশি টাকা দিয়েছে। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে খণ্ডন করতে নেমে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডাকে মোর্চা। রাজ্যের তরফে টাকার হিসেব দিলেও বন্ধেই অনড় রয়েছেন গুরুঙ্গ। ঠিক যে ভাবে শ্রমিক ইউনিয়নগুলির সাম্প্রতিক বন্ধ রুখতে নেমেছিল প্রশাসন, এ ক্ষেত্রেও সেই অবস্থানই নেওয়ার কথা জানাল নবান্ন। বন্ধের আগে-পরে মিলিয়ে মোট তিনটি কাজের দিন দফতরে হাজিরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর মধ্যে এক দিনও যদি কেউ অনুপস্থিত থাকে, তা হলে সে দিনের মাইনে কাটার পাশাপাশি কর্মজীবন থেকে একটা দিনও কমে যাবে। এর পাশাপাশি পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে কালিম্পং, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে কার্শিয়াং ও দার্জিলিং মহকুমার দায়িত্ব অনগ্রসর কল্যাণ মন্ত্রী জেমস কুজুরকে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ওই সব এলাকায় জনজীবন সচল রাখতে সচেষ্ট হবেন।
প্রশাসনের এই পদক্ষেপের প্রভাব জিটিএ কর্মীদের উপরেও পড়বে। কারণ, জিটিএ-র আর্থিক অনুদানের একটি অংশ রাজ্য সরকারও দেয়। যদিও এই নির্দেশিকার কথা জানার পরে সুর আরও চড়িয়েছেন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গ। বলেছেন, ‘‘বন্ধ বহাল থাকছেই। বাধা দিলে, ধরপাকড় হলে টানা বন্ধ হতে পারে।’’
এর আগে যিনি বলেছিলেন, মোর্চা তাঁর অনুরোধেই অতীতে বন্ধ থেকে বিরত থেকেছে, সেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া এ দিনই শিলিগুড়িতে পৌঁছন। মোর্চা সূত্রের খবর, এ যাত্রায় তাঁরা ‘প্রতীকী’ বন্ধে অনড় থাকবেন বলে অহলুওয়ালিয়ার কাছে এর মধ্যে বার্তা পাঠিয়েছেন গুরুঙ্গ। অহলুওয়ালিয়াও তাই এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে মোর্চা একটি আলাদা দল। তাই ওঁদের কর্মসূচি নিয়ে এ ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ তবে মোর্চা হঠাৎ বন্ধ ডাকায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ বিরক্ত। অহলুওয়ালিয়া-ঘনিষ্ঠ এক নেতা এ দিন রাতেও দাবি করেছেন, মোর্চার বন্ধ প্রত্যাহার করানোর শেষ একটা চেষ্টা এখনও চলছে। রোশন গিরি, বিনয় তামাঙ্গদের মতো মোর্চা নেতারাও বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে এখন যে সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়ে কেন্দ্র কোনও ভূমিকা নিতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy