মেদিনীপুরের সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১১ দিন আগে অভিযোগ করেছিলেন, বাংলার কৃষকরা দুর্দশাগ্রস্ত। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ভুল তথ্য দিচ্ছেন। বিভ্রান্ত করছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, এ রাজ্যের কৃষকদের আয় ইতিমধ্যেই ৩.২ গুণ বাড়ানো হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষক আন্দোলন দানা বাঁধার পর ধান-সহ ১৪টি খাদ্যশস্যের সহায়ক মূল্য বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরই বিজেপি বিভিন্ন রাজ্যে ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’ করছে এবং সেখানে মোদীকে নিয়ে গিয়ে তাঁর ‘কৃষকবন্ধু’ ভাবমূর্তি ফলাও করে প্রচার করছে। গত ১৬ জুলাই মেদিনীপুরে ওই সমাবেশে এসে মোদী নিজের সরকারের বিভিন্ন কৃষকবান্ধব প্রকল্পের ফিরিস্তি দেন এবং কৃষকদের দুর্দশার প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেন। এ দিন বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বিধায়কদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কৃষকদের বিমা প্রকল্পের ৬০% আমরা দিই। ৪০% ওরা ( কেন্দ্র) দেয়। কিন্তু বিমার ফর্মে প্রধানমন্ত্রীর ছবি! বুঝুন!’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার কৃষকদের রাতে বিদ্যুতে ছাড় দিচ্ছে, কৃষিজমিতে মিউটেশন মকুব করেছে, হিমঘর-কৃষি বাজার করেছে। সমবায় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কৃষকদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকার কৃষকদের জন্য যা করেছে, তা দেশের অন্য জায়গার কাছে অনুসরণযোগ্য। রাজ্য সরকারের প্রকল্পে ৩০ লক্ষ কৃষক উপকৃত হয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
কৃষকদের বিমার জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করার কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘বিমার জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করবে কেন? আধার কার্ড দিয়ে কি জঙ্গি আটকানো গিয়েছে? এই তো শিলিগুড়ি থেকে দু’জন চিনা ধরা পড়েছে!’’
কৃষক আত্মহত্যা নিয়েও এ দিন মোদী সরকারকে বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘সারা দেশে ১২ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। মহারাষ্ট্র, গুজরাতে কৃষক আত্মহত্যা বেশি।’’ বাংলায় কত কৃষক আত্মহত্যা করেছেন, সভায় এই প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বলেন, ‘‘এখানে এক জন কৃষকও আত্মহত্যা করেননি। অভাবী বিক্রিতে মৃত্যুর ঘটনা এখানে নেই।’’
মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করার সময়ে বিধানসভায় থাকলেও মুখ খোলেননি বিজেপির তিন বিধায়কের কেউই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা খড়্গপুর সদরের বিধায়ক দিলীপ ঘোষ পরে পাল্টা বলেন, ‘‘বিভ্রান্তিকর তথ্য মুখ্যমন্ত্রীই দেন।’’ তবে কী সেই বিভ্রান্তিকর তথ্য, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy