Advertisement
E-Paper

সরকারি দফতরে পুজোর ছুটির পরে পূর্ণোদ্যমে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা, কী ভাবে কাটল গোটা দিন?

বিদেশ সফর চলাকালীন পায়ে চোট পান মমতা। সেই চোটের জন্যই মমতাকে বিশ্রাম নিতে বলেন চিকিৎসকেরা। হাঁটাচলায় জারি হয় বিধি নিষেধ। ফলে কালীঘাটের বাড়ি থেকেই অফিস করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার তিনি নবান্নে আসেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:২২
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পুজোর ছুটির পরে মঙ্গলবার পূর্ণোদ্যমে নবান্নে অফিস শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পায়ের চোটের জন্য দীর্ঘদিন গৃহবন্দি থেকেই প্রশাসনিক কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকও করেছিলেন কালীঘাটের বাড়ির লাগোয়া দফতরেই। দুর্গাপুজোর পরে ত্রয়োদশীর দিন রেড রোডের কার্নিভালে অংশ নেন তিনি। তার পরে মঙ্গলবার থেকে নবান্নে অফিস শুরু করেন।

নবান্নে পৌঁছনোর পরেই সোজা ১৪ তলায় নিজের ঘরে চলে যান মমতা। তার পরেই ডুবে যান প্রশাসনিক কাজে। জরুরি ফাইলে সইসাবুদ সেরে নিজে একের পর এক বৈঠক করেন। বিকাল পর্যন্ত তিনি নবান্নের দফতরেই কাজে ব্যস্ত ছিলেন। যেমন থাকবেন এর পর থেকেও।

এর আগে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের ১৪ তলায় তাঁর দফতরে এসেছিলেন গত ১১ সেপ্টেম্বর। পর দিন তিনি রওনা হন স্পেন এবং দুবাইয়ে বাণিজ্য সফরে। ১২ দিনের সফর। স্পেনে থাকাকালীন পায়ে চোট পান মমতা। দেশে ফেরার পরদিনই এসএসকেএমে তাঁকে পরীক্ষা করেন চিকিৎসকেরা। তাঁকে পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে বলেন তাঁরা। হাঁটাচলার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ফলে কালীঘাটের বাড়িতে বাধ্য হয়ে থাকতে হয়েছিুল মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে তার মধ্যে অনেকগুলি দিনই কেটেছে পুজাবকাশের জন্য সরকারি ছুটির কারণে। সেই দিনগুলি বাদ দিয়ে বাড়ি থেকেই কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি চলেছে তাঁর টানা চিকিৎসাও।

এই পর্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লিতে ১০০ দিনের কাজের টাকার দাবিতে কর্মসূচি পালন করে তৃণমূল। মমতা সেখানে পায়ের চোটের জন্য থাকতে পারেননি। সেখান থেকে ফিরে এসে অভিষেক ধর্নায় বসেন রাজভবনের সামনে। পাঁচদিনের সেই ধর্নামঞ্চে তৃণমূলের শীর্ষ স্তরের প্রায় সমস্ত নেতা ছিলেন। কিন্তু পায়ের চোটের কারণে মমতা সেখানে যেতে পারেননি। যদিও এই ক্ষেত্রেও বাড়ি থেকেই তিনি গোটা বিষয়টি পরিচালনা করেন। ধর্না তুলে নেওয়ার আগে অভিষেক নিজেও মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘আমি ভেবেছিলাম, আরও একদিন ধর্না চালাব। কিন্তু আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আমরা ধর্না তুলে নিচ্ছি। কিন্তু আমাদের দাবি না মানা হলে নভেম্বরে আবার আমরা আন্দোলনে নামব। এবং সেই আন্দোলন হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই।’’

এর মধ্যে সিকিমে বন্যা হয়। তিস্তার জলে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয় উত্তরবঙ্গেও। বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় দক্ষিণবঙ্গের কিছু জেলা। জরুরি পরিস্থিতিতে মমতা বাড়ি থেকেই নবান্নে বৈঠক ডাকেন। সেই বৈঠকে তিনি ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন। প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব এবং মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য উপদেষ্টাকে। নিজে বাড়িতে হেল্পলাইনের নম্বরের একটি ফোনও রাখেন।

পুজোর সময় মুখ্যমন্ত্রী কয়েক হাজার পুজোর উদ্বোধন করেন ভার্চুয়াল মাধ্যমে। পুজোর সময়েও বাড়ি থেকেই নজর রেখেছিলেন। অন্যান্যবারের মতোই। একাদশী এবং দ্বাদশীর দিন বাড়ির লাগোয়া দফতরে বিজয়া সম্মিলনী করেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান মন্ত্রী, দলীয় নেতানেত্রী, জনপ্রতিনিধি, শিল্পদ্যোগী এবং আমলারা। তার পরদিনই রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনই প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছিল, এর পর পূর্ণ উদ্যমে নবান্নে অফিস করা শুরু করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমতোই মঙ্গলবার ঠিক সকাল সাড়ে ১১টায় তিনি নবান্নে পৌঁছন। সটান চলে যান ১৪ তলায় নিজের দফতরে। সেখান থেকেই দিনভর প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলছে ৫৫ দিন পর নবান্নে এসেছি। আরে! আমি কি ছুটিতে ছিলাম? বাড়ি থেকে কাজ করেছি। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িই তাঁর অফিস। মনে রাখবেন, যে কয়েকদিন স্যালাইনের মাধ্যমে আমার ইঞ্জেকশন চলেছে, সে ক’দিন আমি কাজ করতে পারিনি। কিন্তু রোজ ফাইল সই করেছি। একটা ফাইলও পড়ে নেই।’’

Mamata Banerjee Nabanna TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy