Advertisement
E-Paper

ভাঙচুর বন্ধ করবোই, চ্যালেঞ্জ মমতার

বিক্ষোভ, ধর্নার নামে ভাঙচুর তথা নেতিবাচক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আগেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বাংলায় ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’এর ট্র্যাডিশন খতম করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৮

বিক্ষোভ, ধর্নার নামে ভাঙচুর তথা নেতিবাচক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আগেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বাংলায় ‘ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’এর ট্র্যাডিশন খতম করার চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন তিনি।

এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ক্রীড়া দফতরের এক অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, ‘‘ক্ষোভ থাকলে, তা জানানোর জায়গা আছে। ক্ষোভটা সেখানে জানান, ডেপুটেশন দিন, কথা বলুন। তা যথাযথ হলে, ব্যবস্থা নেব।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘কেউ যদি মনে করে, আমি করিনি, তাই অন্যকেও করতে দেব না— ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও! মনে রাখবেন, ভেঙে দেওয়া, গুঁড়িয়ে দেওয়াকে আমি শেষ করবই। এটা আমার চ্যালেঞ্জ, আমার চ্যালেঞ্জ, আমার চ্যালেঞ্জ!’’

ভাঙচুরের প্রশ্নে এ দিন মুখ্যত বামেরাই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায়। নাম না করে সিপিএমকে মমতার কটাক্ষ, ‘‘৩৪ বছর ভাঙতে ভাঙতে গড়তে শেখাটাই ভুলে গিয়েছিলাম আমরা। আজকে বাংলা গড়ছে। বাংলা এগিয়ে যাচ্ছে।’’ বাংলা কী ভাবে ‘এগিয়ে যাচ্ছে’, তা তুলে ধরতে কন্যাশ্রী-সবুজসাথীর প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘জন্ম থেকে মৃত্যু, এমনকী মৃত্যুর পরে যাতে পোড়াতে পারে, কবর দিতে পারে— তার জন্যও দু’হাজার টাকা করে দেওয়ার একটা স্কিম করেছে সরকার। এমনকী কবর, শ্মশান— সব কিছু বাঁধানোর ব্যবস্থা করেছে। বাকিটা কোথায় আছে! কিছু আর বাকি নেই। এত কিছু করার পরেও বিরোধীরা শুধু বলছে— ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও!’’

মুখ্যমন্ত্রীর ‘চ্যালেঞ্জ’-কে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী তাঁকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘‘আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও! ইদানীং কালে বাংলায় ভাঙচুরের যত ঘটনা ঘটেছে, সবেতেই তৃণমূলের ইন্ধন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আগে নিজের দলকে সামলান।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘‘বাংলায় নেতিবাচক রাজনীতির পথিকৃৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিন্ডিকেট, তোলাবাজিকে প্রশ্রয় দিয়ে উনি বাংলায় এমন নেতিবাচক পরিবেশ তৈরি করেছেন যে, নতুন বিনিয়োগ আসা দূরস্থান, বাংলা থেকে লগ্নির পলায়ন শুরু হয়েছে! এমনকী এখন রাজ্যের ছোট ও মাঝারি উদ্যোপতিরাও বাংলা ছেড়ে প্রতিবেশী রাজ্যে গিয়ে বিনিয়োগ শুরু করেছেন।’’

আরও পড়ুন:
জুহির আবদার ছিল রিসর্ট, দাবি সিআইডির

তৃণমূলের শীর্ষ সারির এক নেতার বক্তব্য, বিরোধীরা যে পাল্টা হিসেবে এ সব বলবে, তা হয়তো মমতা নিজেও জানেন। এমনকী তিনি সম্ভবত এও জানেন, বহু ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীবিবাদই অন্যতম কারণ। কিন্তু রাজ্যের কোথাও না কোথাও রোজ যে ভাবে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে, তাতে ধারাবাহিক ভাবে এর বিরুদ্ধে কঠোর বার্তা দেওয়া জরুরি। না হলে আরও অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এবং তা রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগ আসার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই শুধু বিরোধীদের সতর্ক করা নয়, নিজের দলকেও এ ভাবে সতর্ক করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে ভাঙচুরের ঘটনায় তৃণমূলের কিছু স্থানীয় নেতা-কর্মীকে সম্প্রতি গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

যদিও বিরোধীরা এ সব যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের মতে, আদতে রাজনীতিটা করছেন তৃণমূলনেত্রী নিজেই। উনিও জানেন, অধিকাংশ ভাঙচুরের ঘটনায় তৃণমূল জড়িত। কিন্তু সব দায় বিরোধীদের ওপর চাপিয়ে হাত ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন তিনি।

Mamata Banerjee Challenge Vandalism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy