পরনে কালো পাড় সাদা শাড়ি। কাঁধে একটা সাদা শাল চাপানো। গাড়ি থেকে নেমে সোজা রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকানে ঢুকে পড়লেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, নিজের হাতে চা করলেন, তার পর খাওয়ালেন সকলকে। পাশাপাশি, জলপাইগুড়ির এক চা-বাগানও পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার শ্রমিকদের সঙ্গেও কথা বলতে দেখা গেল তাঁকে।
দিন দুয়েক আগেই ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি। খবর পাওয়া মাত্রই রাতে কলকাতা থেকে সেখানে চলে যান মমতা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন, কথা বলেন ঝড়ে বিধ্বস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে। সরকারি সাহায্যের আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আগামী কয়েক দিন উত্তরবঙ্গেই থাকবেন। বুধবার জলপাইগুড়ির চালসা এলাকায় জনসংযোগে বার হয়েছিলেন মমতা।
এলাকার মানুষের অভাব-অভিযোগ শোনেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই ফাঁকেই দুপুরবেলা একটি চায়ের দোকানে সদলবলে ঢুকে পড়েন তিনি। সকলের জন্য চা বানাতে বলেন দোকানদারকে। তার পর নিজেই চা বানানোর কাজে হাত লাগান। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে আপ্লুত হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। সেই সঙ্গে রাস্তা, পানীয় জল সংক্রান্ত নানা সমস্যার কথা গ্রামবাসীরা মমতাকে জানান।
আরও পড়ুন:
সকলের কথা মন দিয়ে শোনেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলেও সমস্যা সমধানের আশ্বাস দেন তিনি। মমতা জানান, এখন নির্বাচনী আচরণবিধি রয়েছে। তবে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে বলেও গ্রামবাসীদের বলেন তিনি।
অতীতেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জনসংযোগে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। একেবারে ঘরের মেয়ের মতোই গ্রামবাসীদের বাড়িতে বসে গল্প করেছেন তিনি। রান্নাঘরে ঢুকে রান্নার কাজেও হাত লাগাতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। হেঁটে হেঁটে গ্রামে ঘুরেছেন, চা খেয়েছেন গ্রামবাসীদের বাড়িতে।
পাহাড়ে গিয়ে মমতাকে আগেও দেখা গিয়েছে চা-বাগানে ঢুকে পড়তে। চা-বাগানে শ্রমিকদের মতো পোশাক পরে পিঠের দিকে ঝুড়ি ঝুলিয়ে চা তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার চা তৈরি করে খাওয়ালেন সকলকে। অনেকেই বলেন, মমতা যে ভাবে জনসংযোগ করেন তা অন্য রাজনীতিকদের থেকে অনেকটাই আলাদা। পাহাড় থেকে জঙ্গল, সমতল যেখানেই যান না কেন সেখানকার মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ করে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু গাড়িতে ঘুরে ঘুরে নয়, রীতিমতো পায়ে হেঁটে স্থানীয়দের মধ্যে মিশে যান তিনি।