Advertisement
E-Paper

হাওড়া নিয়ে বৈঠকে মমতার বকুনি দুই মন্ত্রীকে

হাওড়া জেলা নিয়ে বৈঠকেও ‘অভিভাবক’ হিসেবে দলের নেতা-কর্মীদের বকুনি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট আসছে। তারই প্রস্তুতি নিতে ইদানীং কালীঘাটে তাঁর বাড়িতে জেলা-ভিত্তিক সাপ্তাহিক বৈঠক করছেন তৃণমূলনেত্রী। শনিবার ছিল হাওড়া নিয়ে বৈঠক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:২৮
কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। শনিবার প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।

কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী। শনিবার প্রদীপ আদকের তোলা ছবি।

হাওড়া জেলা নিয়ে বৈঠকেও ‘অভিভাবক’ হিসেবে দলের নেতা-কর্মীদের বকুনি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভোট আসছে। তারই প্রস্তুতি নিতে ইদানীং কালীঘাটে তাঁর বাড়িতে জেলা-ভিত্তিক সাপ্তাহিক বৈঠক করছেন তৃণমূলনেত্রী। শনিবার ছিল হাওড়া নিয়ে বৈঠক। দলীয় সূত্রের খবর, দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করার নির্দেশ দিতে গিয়ে বৈঠকে হাওড়ার দুই মন্ত্রী অরূপ রায় এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেত্রীর ধমক খেতে হয়েছে। এর আগে নদিয়ার বৈঠকেও ওই জেলার এক মন্ত্রীকে ভর্ৎসনা করেছিলেন মমতা। সে দিনের মতো এ দিনের বৈঠকেও জেলার সব নেতা-কর্মীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। ওই দুই মন্ত্রী-সহ হাওড়ার তৃণমূল নেতৃত্বকে এ দিন মমতা বুঝিয়ে দেন, দলের কে কোথায় কী করছেন, সবই তাঁর নখদর্পণে। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও এর পরে ফের গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

বৈঠকের শুরুতেই নেত্রী খেয়াল করেন জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপস্থিত। কেন তিনি আসেননি, মমতা তার কারণ জানতে চান হাওড়া সদর (জগৎবল্লভপুর ওই এলাকার মধ্যে) কেন্দ্রের সভাপতি ও কৃষি বিপণনমন্ত্রী অরূপবাবুর কাছে। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে খবর দেওয়া হয়নি বলে তিনি বৈঠকে গরহাজির বলে মমতা মন্তব্য করেন। এবং এর জন্য তিনি অরূপবাবুকেই ‘ধমক’ দেন। দল সূত্রে খবর, অরূপবাবুকে মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি জেলায় দলের সাংগঠনিক কাজেও বেশি সময় দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। বিষয়টি নিয়ে পরে অরূপবাবুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘নেত্রী আমাদের কাউকেই বকাবকি করেননি। আমাদের জেলায় দলে কোনও সমস্যা নেই। জেলায় পঞ্চায়েত থেকে পুরসভায় দারুণ কাজ হচ্ছে বলে নেত্রী প্রশংসা করেছেন।’’ একই ভাবে ডোমজুড়ের বিধায়ক ও সেচমন্ত্রী রাজীববাবুকে দলে এবং বিধানসভা কেন্দ্রে বেশি সময় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বৈঠকের পর থেকেই দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকায় রাজীববাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

জানা গিয়েছে, নেত্রী ভর্ৎসনা করেছেন উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মাজিকেও। তাঁর এলাকায় দলের যে কোনও সাংগঠনিক বৈঠক বা সম্মেলনে নিজের ছবি দিয়ে নির্মলবাবু প্রচুর কাটআউট লাগিয়েছেন। কেন অত কাটআউট বা ছবি ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে নেত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে দুই মন্ত্রী বা নির্মলবাবুকে নেত্রীর ভর্ৎসনার খবর অস্বীকার করেন দলের অন্যতম নেতা ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া জেলা সামগ্রিক ভাবেই ভাল কাজ করছে। কাউকে বকাঝকা করা হয়নি এ দিনের বৈঠকে।’’

ভোটের আগে কোথাও কাজে সমন্বয়ের অভাবের অভিযোগ পেলে তিনি রেয়াত করবেন না বলে বৈঠকে মমতা জানিয়ে দিয়েছেন। ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে রাজ্য সরকারের উন্নয়ন-কাজের প্রচারে বেশি জোর দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। মমতার আগে এ দিনের বৈঠকে তাঁর সাংসদ-ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিতে রাজ্য সরকারের উন্নয়ন-কাজ নিয়ে প্রচারে নামার কথা বলেন। বৈঠকে অভিষেক ছাড়াও, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ফিরহাদ ও অরূপ বিশ্বাস, জেলার নেতা নিত্যানন্দ দে বক্তৃতা করেন। সব বক্তাই হাওড়ার ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের সব ক’টিতেই জয় নিশ্চিত করতে নেতা-কর্মীদের তৎপর হতে বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকের পরে দলের তরফে ফিরহাদও বলেন, ‘‘হাওড়ার সব ক’টি কেন্দ্রে আমরা জিতব বলে আশা করি।’’

ফিরহাদ আরও জানান, বৈঠকে কোনও ভোটদাতা যাতে ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যান, তা নজরে রাখতেও বলা হয়েছে কর্মীদের। তালিকায় কোনও ত্রুটি থাকলে তা দ্রুত সংশোধনের ব্যবস্থা করার জন্য কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন নেত্রী। বিধানসভা ভোট বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে হবে। প্রতিটি এলাকায় ভোটাররা যাতে ওই যন্ত্রে ভোট দিতে সড়গড় হন, তা খেয়াল রাখারও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের।

state news mamata banerjee cm mamata rebukes ministers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy