অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটের প্রচার পর্বেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তৃণমূলের প্রচারের একমাত্র ‘মুখ’ তিনিই। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, যোগী আদিত্যনাথ, রাজনাথ সিংহের মতো বিজেপি-র সবর্ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে মমতার মতোই প্রচার চালিয়ে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর তাই তাঁর ‘বড় দায়িত্ব’ পাওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা। শনিবার দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে তাঁর অভিষেক সেটাই বুঝিয়ে দিল। অর্থাৎ, তৃণমূলে শুরু হয়ে গেল পরবর্তী প্রজন্মের নির্ঘোষ।
শুধু বিজেপি নেতাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচারই নয়। বিধানসভা ভোটে দলের রণকৌশল নির্ধারণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন অভিষেক। ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরকে (পিকে) নিয়ে আসা থেকে বিজেপি-র আইটি সেলের মোকাবিলায় তৃণমূলের নেটমাধ্যম-বাহিনী গড়ায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের সক্রিয় উদ্যোগ ছিল। বস্তুত, তৃণমূলের অন্দরের লোকজন মনে করেন, অভিষেক এবং তাঁর সঙ্গীদের সক্রিয় সহযোগিতা না-পেলে টিম-পিকের রাজ্যের গ্রামে গ্রামে গিয়ে মসৃণ ভাবে কাজ করা অত সহজ হত না। সে অর্থে দেখতে গেলে তৃণমূলে অভিশেক-পিকে একটি জুটি হিসেবেই কাজ করেছেন। এ-ও বোধহয় ঘটনাচক্র নয় যে, শনিবার বৈঠক থেকে অভিষেক যখন বেরিয়ে যাচ্ছেন, তাঁর পাশে ছিলেন সেই পিকে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়ার পাশাপাশি শনিবার যুব সংগঠনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে অভিষেককে। প্রায় সাত বছর ওই পদে ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে সাময়িক ভাবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর কো-চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে। এই প্রথম দলের মূল সংগঠনে কোনও পদ দেওয়া হল তাঁকে। তবে এর আগে দলের বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন অভিষেক।
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ দখল করার পরে শুভেন্দু অধিকারীকে দলের যুব সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা। ২০১৪ পর্যন্ত শুভেন্দু যুব তৃণমূলের সভাপতি পদে বহাল ছিলেন। যদিও তার মধ্যেই দলনেত্রীর অনুমোদনে অভিষেকের নেতৃত্বে ‘যুবা’ নামে আরেকটি যুব সংগঠন গড়া হয়েছিল। সভাপতি পদ থেকে শুভেন্দুর বিদায়ের পরেই অবশ্য অভিষেককে যুব তৃণমূলের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ২০১৪ সালের মে মাসে মমতা বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সদ্যনির্বাচিত সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে যুব তৃণমূলের সভাপতি করেন। বছর ঘোরার আগেই দলের যুব সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় অভিষেককে। এরপর যুব তৃণমূলের সঙ্গেই মিশে যায় ‘যুবা’। সংযুক্ত যুব সংগঠনের সভাপতি হন অভিষেক। এতদিন পর্যন্ত ওই পদে যাঁরা থেকেছেন, তাঁরা সকলেই পুরোদস্তুর রাজনীতিক ছিলেন। তৃণমূলের ইতিহাসে প্রথমবার সেই পদে এলেন চলচ্চিত্র জগৎ থেকে আসা সায়নী ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy