Advertisement
E-Paper

‘স্বস্তি’র সুর মমতার, প্রশ্ন তালিকা নিয়েই

দুর্নীতি প্রশ্নে সরকারকে নিশানা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৩১
Share
Save

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আর্জি মেনে নিয়ে ‘দাগি’ নন যাঁরা, সেই শিক্ষকদের আপাতত কাজ করার যে অনুমতি সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে, তাকে ‘স্বস্তি’র বলে উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্য এখনও ‘রিভিউ পিটিশন’ করেনি কেন, ‘যোগ্য-অযোগ্যে’র তালিকার বিষয়ে সরকার এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেনি কেন, আবার নিয়োগ হলে সব যোগ্যই যে চাকরি পাবেন তার নিশ্চয়তা কোথায়, এই সব প্রশ্নে রাজ্য ও তৃণমূল কংগ্রেসকে পাল্টা বিঁধেছেন বিরোধী নেতৃত্ব। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আবার আশঙ্কা, নিয়োগের জন্য নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হলে তৃণমূল প্রশ্নপত্র বিক্রি করবে!

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বৃহস্পতিবার সামনে আসার পরেই নবান্নে মমতা বলেছেন, “আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে আদালত। আপাতত স্বস্তি। এই বছরেই সব সমাধান হবে বলে আশা করি। মানুষের কাজে ভুল করি না, নিজের কাজ ভুল করতে পারি। যথা সময়ে শিক্ষকেরা বেতন পাবেন। একটা স্বস্তি যখন হয়, ভবিষ্যতের স্বস্তিও তার উপরে নির্ভর করে।” তবে আদালতের এই নির্দেশে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “আইন অনুযায়ী কাজ করব। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে বাকিটা ঠিক করব।”

তবে ফের দুর্নীতির আশঙ্কা করেছেন বিরোধী দলনেতা। আবার নিয়োগ-পরীক্ষা নেওয়ার মাধ্যমে তৃণমূলের ‘টাকা তোলার সুযোগ তৈরি হল’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি! শুভেন্দু বলেছেন, “পরীক্ষা করাবে দুর্নীতিগ্রস্ত এসএসসি। আগে চাকরি বিক্রি করেছে, এই বারে প্রশ্নপত্র বিক্রি করবে। ভাইপো দোকান খুলবে। বিধানসভা ভোটের আগে ৫০০-৭০০ কোটি টাকা তুলবে তৃণমূল। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেই চাকরি না-ও পেতে পারেন।”

আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েও ‘যোগ্য-অযোগ্যদে’র ভাগের কথা এত দিন রাজ্য বলেনি কেন, সেই প্রশ্নে সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। যদিও এই প্রসঙ্গে কটাক্ষ করে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্য, “ওঁর (সুকান্ত) কথা শুনলে সুকুমার রায়ের কবিতা মনে পড়ে— ‘ওরে আমার গোবরা গণেশ ময়দাঠাসা নাদুস্‌ রে’!”

দুর্নীতি প্রশ্নে সরকারকে নিশানা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও। শিলিগুড়িতে তিনি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনের নিয়োগ-দুর্নীতির জন্যই এঁরা (চাকরিহারা) ভুগছেন। সরকারি নিয়ম মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হোক। শিক্ষকের চাকরি যাওয়া নিয়ে মাথাব্যথা নেই। সোনার ঝাঁটা নিয়ে মন্দির উদ্বোধন করবেন (মমতা)। মানুষ হাতে ঝাঁটা নিয়ে অপদার্থ সাম্প্রদায়িকদের বিদায় করবে।”

সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী এ দিন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন নেতাজি ইনডোরে মুখ্যমন্ত্রী ‘যোগ্য’দের চাকরি নিশ্চিত করার পরে ‘অযোগ্য’দের চাকরি বাতিলের বিষয়টিও বিবেচনার ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, “কোথায় রিভিউ পিটিশন? চাকরি বাতিল মেনে নিলেন? নিয়োগের সময় বাড়াতে আবেদন করা হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। দায় স্বীকার করে স্বচ্ছ-যোগ্যদের চাকরি বহাল রাখার কথা বললেন না?”

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে দ্রুত যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করার দাবি তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। তাঁর বক্তব্য, “কারও যাতে চাকরি না যায়, সেটাই চাইব।”

এ বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “সিপিএম জমানায় বাংলায়, ত্রিপুরাতে এবং বিজেপির আমলেও নানা জায়গায় বিভিন্ন কেলেঙ্কারি হয়েছে। এদের প্ররোচনায় পা দেবেন না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mamata Banerjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy