ফাইল চিত্র।
কোভিড-সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য সরকার। তাই এ বারের দুর্গাপুজো সুরক্ষা ঘেরাটোপে করার বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী-সহ রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তারা বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে দুর্গাপুজো-প্রস্তুতি নিয়েও পরামর্শ দিয়েছেন বোর্ডের সদস্যেরা।
২৫ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রাজ্য সরকারের। করোনা-আবহে কী ধরনের বিধি মেনে পুজো করা হবে, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে সেই বৈঠকে। এ দিন মমতা বলেন, “সামনেই পুজো। সেটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আজ বোর্ডের সদস্যরা প্যান্ডেল খোলামেলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। পুজো কমিটি নিয়ে ২৫ তারিখ বৈঠক আছে। সেখানে আলোচনা হবে। প্যান্ডেল বদ্ধ থাকলে বা বেশি লোক সেখানে যাতায়াত করলে সমস্যা। সুরক্ষার স্বার্থেই প্যান্ডেলগুলি বেশি না ঢাকতে বলছেন বোর্ডের সদস্যেরা।”
কলকাতার পুজো উদ্যোক্তাদের সংগঠন ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমান কার্যসমিতির সদস্য পার্থ ঘোষ বলছেন, ‘‘আমাদের সদস্য পুজোকমিটিগুলি খোলামেলা মণ্ডপ ও সুরক্ষাবিধি মেনেই কাজ করছে।’’ তবে পুজো উদ্যোক্তাদের একাংশের ধারণা, এ বার শহরে সেই পরিচিত ভিড় না-ও হতে পারে।
আরও পড়ুন: পুজোর মাস থেকেই পুরোহিতদের মাসে হাজার টাকা ভাতা
প্রশাসনিক কর্তাদের আশঙ্কা, শীতের আগেই সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে। তা মাথায় রেখে তৈরি থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “রোগ এত তাড়াতাড়ি চলে যায় না। এখন প্রথম পর্যায় চলছে। কাল তো দ্বিতীয় পর্যায়ও আসতে পারে। এখন থেকে তৈরি থাকতে হবে। নতুন ঢেউ এলে তা যাতে সামলানো যায়। রাজ্যে করোনা-পরীক্ষার সংখ্যাবৃদ্ধি, হাসপাতালের আসনবৃদ্ধি-সহ সামগ্রিক পদক্ষেপগুলি নিয়ে গ্লোবাল অ্যাডডভাজ়রি বোর্ডের সদস্যেরা খুশি। আর্থিক সংক্রান্ত অনেক কাজ রাজ্যে হয়েছে। আরও ভাল কাজ করতে হবে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ যাতে ছড়াতে না পারে, সতর্ক থাকতে হবে।”
আরও পড়ুন: বিধানসভা ভোটের মুখে হিন্দিভাষীদের কাছে পৌঁছতে সেল মমতার
সরকারের বিশ্লেষণ, রাজ্যে ৩৯৪৫টি মৃত্যুর ৮৬% অন্য রোগভোগ বা কো-মর্বিডিটি থেকে হয়েছে। জাতীয় স্তরে পজ়িটিভ হওয়ার হার ৮.৫৩%। এ রাজ্যে সেই হার ৮.২১%। সুস্থতার হার দেশে যেখানে ৭৭%, এ রাজ্যে তা ৮৬.৪০%। দেশে মৃত্যুহার যেখানে ১.৬৩%, সেখানে রাজ্যের হার ১.৯৪%। অক্সিজেন সংযোগ থাকা শয্যা ১২ হাজারের বেশি রয়েছে। ৩২.৩৬% মানুষের হাসপাতালের শয্যা লেগেছে। সব ধরনের পরিকাঠামো আছে। সেফ হোমেও ১১ হাজারের বেশি শয্যা রয়েছে। করোনা সামলাতে একাধিক কমিটি ছাড়াও টেলি মেডিসিন, কল সেন্টার, হেল্পলাইন, অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা মিলিয়ে ১৫ লক্ষের বেশি মানুষকে সুবিধা দেওয়া গিয়েছে। মমতা বলেন, “এ রাজ্যের পরিস্থিতি ভৌগোলিক ভাবেই বেশ স্পর্শকাতর এবং জনসংখ্যা ও জনঘনত্বও বেশি। মৃত্যুহার আরও কমাতে হবে। কো-মর্বিটিডির ব্যাপারে প্রথমে যখন আমরা বলেছিলাম তখন অনেকে ব্যঙ্গ করেছিল। এখন গোটা দেশে এটাই মানা হচ্ছে।” রাজ্য জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ২৬ জন মৃত কোভিড-যোদ্ধার নিকটাত্মীয়কে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। ৩২০০ জন সংক্রমিত ব্যক্তিকে এক লক্ষ টাকার আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy