Advertisement
E-Paper

ধনখড় ‘বিজেপির লোক’, খোঁচা মমতার

ঘটনাচক্রে এ দিনই রাজ্যপালের নিরাপত্তায় সিআরপি নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজভবনে পুলিশ ও দমকলের জন্য ব্যবহৃত বেশ কিছু ঘর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য নিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে নবান্নের কাছে খবর আসে। সরকার ‘ক্ষুব্ধ’ তা নিয়েও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২১
রাজ্যপালকে সরাসরি ‘বিজেপির লোক’ বলে দাগিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

রাজ্যপালকে সরাসরি ‘বিজেপির লোক’ বলে দাগিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাতকে গুরুতর মাত্রা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে সরাসরি ‘বিজেপির লোক’ বলে দাগিয়ে দিলেন। আর রাজ্যপাল রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করে কেন্দ্রের আয়ুষ্মান প্রকল্পে রাজ্যের যোগ না দেওয়ার পিছনে ‘রাজনীতি’ আছে বলে মন্তব্য করলেন।

ঘটনাচক্রে এ দিনই রাজ্যপালের নিরাপত্তায় সিআরপি নিয়োগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজভবনে পুলিশ ও দমকলের জন্য ব্যবহৃত বেশ কিছু ঘর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য নিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে নবান্নের কাছে খবর আসে। সরকার ‘ক্ষুব্ধ’ তা নিয়েও।

সূত্রের খবর, রাজভবনের পূর্ব ফটকে কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডো রুম, তার কাছেই রাজভবনে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের ঘর, দমকলের ঘর, দক্ষিণ অলিন্দের কাছে একটি কটেজ এবং পূর্ব দিকে একটি স্টোর রুম সিআরপি-র জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এই তথ্য জেনে সরকার ‘অসন্তুষ্ট’ হয়। প্রশ্ন ওঠে, চিরাচরিত ভাবে নির্দিষ্ট দায়িত্ব অনুযায়ী যে সব ঘর রয়েছে, রাজভবনের ‘একতরফা’ সিদ্ধান্তে সেগুলি কি তা হলে উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে? সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লোকজনেরা বসবেন কোথায়? রাজভবন থেকে কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে নেওয়া হবে কি না, সংশয় তৈরি হয় তা নিয়েও।

নবান্নের এক শীর্ষকর্তা জানান, ‘‘রাজ্যপালের নিরাপত্তায় সিআরপি আসার পরে ওই বাহিনীকে জায়গা দিতেই হবে। কিন্তু কী ভাবে কী হবে, সেটা চূড়ান্ত নয়। আজ, শুক্রবার সিআরপি-র সঙ্গে এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের বৈঠক হওয়ার কথা।’’ তার জন্য অবশ্য রাজভবনের ভূমিকায় সরকারের ক্ষোভ কিছুমাত্র কমেনি।

তার আগে এ দিনই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে ধনখড়ের বক্তব্য, ‘‘সারা বিশ্বে আয়ুষ্মানের মতো যে প্রকল্পের প্রশংসা হচ্ছে, এখানকার সরকার তা গ্রহণ করছে না। সবকিছুতে রাজনীতি ঠিক নয়। এখানে সবকিছু নিয়ে রাজনীতি হয়। স্বাস্থ্যকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা উচিত।’’

এ দিন স্বভূমিতে কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প নিয়ে চিকিৎসকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব মেডিক্যাল ফিজিসিস্ট অব ইন্ডিয়া’র অনুষ্ঠানে ধনখড় বলেন, ‘‘রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত সাহায্য চেয়ে ২-৩ হাজার আবেদন পেয়েছি। সেই সব আবেদন পরীক্ষা করে দেখেছি, প্রতি ক্ষেত্রেই রাজ্যের প্রকল্পের পাশাপাশি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমেও তাঁরা সাহায্য পেতেন। স্বাস্থ্য পরিষেবাকে কেন্দ্র-রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’’

তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তিনমাসে তিন হাজার আবেদন পেলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কেমন তা বোঝাই যাচ্ছে?’’ ধনখড় বলেন, ‘‘রাজ্যপালের হৃদয় বড়, কিন্তু তহবিল ছোট। মাত্র দু’কোটি টাকা। সাংসদ, বিধায়কদের তহবিলে বরাদ্দ অর্থও এর থেকে বেশি। মানুষের স্বার্থে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয় রেখে কাজ করা উচিত। টাকা কোথা থেকে আসছে তা বিবেচ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিশ্বাস থাকলে তা নেওয়া উচিত।’’

রাজ্যপালের এই সব বক্তব্য নিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে দৃশ্যত বিরক্ত হয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েন। যেতে যেতে বলেন, ‘‘বিজেপির লোকের এ ধরনের বক্তব্য নিয়ে আমি কোনও জবাব দেব না। আমাকে এ ধরনের প্রশ্ন করবেন না।’’

Mamata Banerjee Governor Jagdeep Dhankhar BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy