২০১৩ সাল। কলকাতা সফরে এসে ডেভিড ক্যামেরন বলেছিলেন, ‘‘কলকাতার আয়তন বাড়ছে। এখানে নগরোন্নয়ন পরিকল্পনা খুব জরুরি।’’ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ-ও বলেছিলেন, নগরোন্নয়নে তাঁর দেশ বেশ পারদর্শী। টেমস নদীকে কাজে লাগিয়ে যে ভাবে তাঁরা লন্ডন শহরটার চেহারা বদলেছেন, কলকাতার নদী এবং জলপথগুলিকেও সে ভাবেই কাজে লাগাতে হবে।
সেই সফরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন ক্যামেরন। সূত্রের খবর, সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েই চলতি
মাসের শেষে লন্ডন যাচ্ছেন মমতা। ২৭ থেকে ৩০ জুলাইয়ের সেই সফরে মূলত নগরোন্নয়ন নিয়েই আলোচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই মমতার আশ্বাস ছিল, কলকাতা শহরকে লন্ডন বানাবেন তিনি। কাজেই তাঁর প্রস্তাবিত লন্ডন সফর ঘিরে বিভিন্ন মহলে কৌতূহল তুঙ্গে। এই সফরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গী হবেন মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র, কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন, সাংসদ-শিক্ষাবিদ সুগত বসু, সাংসদ-অভিনেতা দেব, ফিকির সভাপতি জ্যোৎস্না সুরি এবং আরও অনেকে।
তবে এ যাত্রায় ক্যামেরনের সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎ হবে কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে এ দেশের ব্যবসায়ী মহলের একাংশের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা আছে। এবং কলকাতা শহরের সৌন্দর্যায়নই সেই বৈঠকের মূল প্রতিপাদ্য বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকের একটি বড় অংশ জুড়ে থাকবে কলকাতা শহরের নগর-পরিকল্পনা এবং জল-পরিবহণ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার বিষয়টি।
সূত্রের বক্তব্য, গত কুড়ি বছরের চেষ্টায় টেমস নদীর দু’পাড়ে যে ভাবে লন্ডনকে সাজানো হয়েছে, বাতিল কল-কারখানাগুলির পুনর্নবীকরণ করে যে ভাবে আবাসন, অফিস, প্রদর্শশালা ইত্যাদি তৈরি করা হয়েছে, এই সফরে সে সম্পর্কে ভাল করে জেনে নেবেন মমতা। সে ভাবেই হুগলি নদীর দু’পাড় ঢেলে সাজার ইচ্ছা আছে তাঁর। সেই সঙ্গে হুগলি নদীর তীরে মিলেনিয়াম পার্ক থেকে আরও বেশি সংখ্যায় ফেরি চালু করারও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর সরকারের। এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই হুগলি নদীতে আট আসনের ৩৬টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নৌকো চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সেই ভাবনা এ বার গতি পরে বলে মনে করা হচ্ছে।
মমতার লন্ডন সফরের মধ্যেই ২৮ জুলাই একটি বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে ‘ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম’-এর সেন্ট্রাল হলে। বাংলার অনেক শিল্পী সেখানে অংশগ্রহণ করবেন। টির্যানোসরাস রেক্স-এর পূর্ণদেহ কঙ্কাল প্রদর্শনের জন্যই বিখ্যাত এই প্রেক্ষাগৃহ। ব্রিটিশ লেখিকা জে কে রোওলিং হ্যারি পটার সিরিজের শেষ বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেছিলেন এখানেই।
এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে কোনও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে এই প্রেক্ষাগৃহে। রাজ্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতেই এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাগৃহ বেছে নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy