Advertisement
E-Paper

ত্রিপুরা নিয়ে উনিশের পরে ভাববেন মমতা

ত্রিপুরায় দলীয় শাখার কলেবর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাবধানে পা ফেলতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯ মে ভোটের ফলাফল ঠিক করে দেবে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তিনি কতটা এগোবেন। ত্রিপুরা কংগ্রেস থেকে সদ্য সাসপেন্ড হওয়া সুদীপ রায়বর্মনের সঙ্গে মমতার প্রাথমিক কথাবার্তার পর এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।

প্রভাত ঘোষ

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ০৩:৪৯
সুদীপ রায়বর্মন

সুদীপ রায়বর্মন

ত্রিপুরায় দলীয় শাখার কলেবর বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাবধানে পা ফেলতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯ মে ভোটের ফলাফল ঠিক করে দেবে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তিনি কতটা এগোবেন। ত্রিপুরা কংগ্রেস থেকে সদ্য সাসপেন্ড হওয়া সুদীপ রায়বর্মনের সঙ্গে মমতার প্রাথমিক কথাবার্তার পর এমনটাই মনে করছেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।

শনিবার সন্ধ্যায় রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ জানান, প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা পদত্যাগী বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায়বর্মনকে এআইসিসি সাসপেন্ড করেছে। আর রবিবারই কলকাতায় আসেন সুদীপবাবু। ওই দিন বিকেলেই তৃণমূলের সহ-সভাপতি মুকুল রায়ের সঙ্গে এলগিন রোডের একটি ফ্ল্যাটে একপ্রস্ত আলোচনা হয় তাঁর। ত্রিপুরা তৃণমূলে সুদীপবাবুদের যোগ দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে দু’পক্ষে ঘণ্টা দেড়েক আলোচনা হয়। রাজ্য তৃণমূলের বর্তমান নেতৃত্বে রয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী সুরজিৎ দত্ত, চেয়ারম্যান আর এক প্রাক্তন কংগ্রেসী, রতন চক্রবর্তী। সুরজিৎবাবুরা সুদীপবাবু ও তাঁর বাবা, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীররঞ্জন বর্মনের প্রবল বিরোধী হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু দলনেত্রী সিদ্ধান্ত নিলে সুরজিৎবাবুদের নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলে সুদীপকে আশ্বাস দেন মুকুল। বৈঠকের পর মুকুল দিল্লি চলে যান রাজ্যসভার অধিবেশনে যোগ দিতে।

সোমবার দুপুরে কালীঘাটের হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়ি থেকে ফোন যায় প্রিটোরিয়া স্ট্রিটের ত্রিপুরা ভবনে। সুদীপবাবুর মোবাইলে ফোন করেন খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, মমতা সুদীপকে বলেন, এ রাজ্যে ১৯ তারিখ ভোটের ফল বেরোবে। তা নিয়ে তিনি এখন ব্যস্ত। ফল বেরোবার পরই তিনি ত্রিপুরার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। মমতা সুদীপবাবুকে পরামর্শ দেন, কংগ্রেস-সিপিএম জোটের বিরুদ্ধে তাঁরা যেমন প্রতিবাদ, আন্দোলন করছেন তা যেন তাঁরা চালিয়ে যান।

তৃণমূলের একাংশের ধারণা, ভোটের ফল কী হবে, কতটা অনুকূলে যাবে তা নিয়ে তৃণমূল নেত্রী চিন্তায় রয়েছেন। সে জন্য তাড়াহুড়ো করে এখনই ত্রিপুরার কংগ্রেস-ত্যাগী নেতাদের দলে নেওয়ার ব্যাপারে পাকা কথা দিতে চাননি। অনেকের আশঙ্কা, এ রাজ্যে ফল ততটা ভাল না হলে ত্রিপুরার কংগ্রেস ছেড়ে আসা নেতারা যদি সুযোগ বুঝে বিজেপিতে নাম লেখান তবে আগ বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে মুখ পুড়বে মমতারই। তাই ১৯ তারিখের পরেই ত্রিপুরার নেতাদের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের প্রতিবাদে গত ৭ এপ্রিল ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী নেতার পদ থেকে ইস্তফা দেন সুদীপবাবু। তারপর একে একে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ও বিধায়ক আশিস সাহা, প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি সুশান্ত চৌধুরী, প্রদেশ মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী কল্যাণী রায়, প্রাক্তন মন্ত্রী প্রকাশ দাস, বিভিন্ন জেলা সভাপতি-সহ বিভিন্ন দলীয় পদাধিকারী ইস্তফা দেন। এ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব যারপরনাই বিড়ম্বনার মধ্যে রয়েছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় এআইসিসি ইতিমধ্যেই সুদীপবাবু-সহ কয়েকজনকে দল থেকে সাসপেন্ড করেছেন। যদিও সুদীপবাবুর সঙ্গে থাকা বাকি পাঁচ বিধায়ক সম্পর্কে এখনও ‘নরম’ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের চেষ্টা, সুদীপবাবুর পাশ থেকে তাঁর অনুগামীদের সরিয়ে কংগ্রেসের মূলস্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। সুদীপবাবুদের সাসপেন্ড করে সেই বার্তাই এআইসিসি তথা প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব দিতে চেয়েছেন। যদিও সুদীপবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল নিশ্চিত, তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন ত্রিপুরার দশ কংগ্রেস বিধায়কের মধ্যে ছ’জন।

Mamata Banerjee Tripura Sudip Roy Barman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy