Advertisement
০২ মে ২০২৪

চা কব্জায় পাল্টা কৌশল মমতার

লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর হাতিয়ার ছিল ‘চায়ে পে চর্চা’। দ্বিতীয় বার রাজ্যের মসনদে বসে দিদির লক্ষ্য ‘চায়ে পে কব্জা’। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারে মালঙ্গিতে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা শুনে এমনটাই মনে করছে চা শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা।

মালঙ্গিতে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। নারায়ণ দে-র তোলা ছবি।

মালঙ্গিতে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। নারায়ণ দে-র তোলা ছবি।

কিশোর সাহা ও নারায়ণ দে
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৬ ০৩:৫৮
Share: Save:

লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর হাতিয়ার ছিল ‘চায়ে পে চর্চা’। দ্বিতীয় বার রাজ্যের মসনদে বসে দিদির লক্ষ্য ‘চায়ে পে কব্জা’। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারে মালঙ্গিতে প্রশাসনিক বৈঠক সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা শুনে এমনটাই মনে করছে চা শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা।

বিধানসভা ভোটে ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা বলয়ে মাদারিহাট আসনটি বাদে সব আসন জেতে তৃণমূল। কিন্তু একই সঙ্গে দেখা যায়, আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ে বিজেপির ভোট প্রচুর বেড়েছে। এতেই অশনি সঙ্কেত দেখছে শাসকদল। নেতাদের একাংশের দাবি, ভোটের আগে বাগান অধিগ্রহণের ‘কৌশল’ নিয়েই চা শ্রমিকদের মধ্যে প্রভাব বাড়িয়েছে বিজেপি। আর তা রুখতে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী এ দিন চা বলয়ে দাঁড়িয়েই পাল্টা রাজনৈতিক চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বিজেপিকে। তেমনই জেলার রুগ্ণ এবং বন্ধ চা বাগানগুলি খুলতে নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করা, চা বাগানে সরকারি সাহায্য জারি রাখা এবং শ্রমিকদের বিকল্প রুজি দিতে চা বাগানের অব্যবহৃত জমিতে অন্য কিছু চাষ করার অনুমতি দেওয়ার মতো নজিরবিহীন সিদ্ধান্তও এ দিন ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বভাবতই এই সিদ্ধান্তে শুধু আলিপুরদুয়ার নয়, উত্তরবঙ্গ জুড়েই চা শ্রমিকদের মধ্যে খুশির হাওয়া।

বিধানসভা ভোটের আগে ডানকান গোষ্ঠীর সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক। চা পর্ষদের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের ওই সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার। ভোটের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত— এই কথা বলে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছিল তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পরে প্রথম উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই সাতটি চা বাগান নিয়েই কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করলেন। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক বৈঠকের পরে মমতা বলেন, ‘‘ভোটের আগে আলিপুরদুয়ার জেলায় সাতটি চা বাগান অধিগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। তার পর থেকে ওই বাগানের শ্রমিকরা মজুরি পাচ্ছেন না, কোনও সুযোগ সুবিধে পাচ্ছেন না। কেন্দ্র কোনও কাজও করেনি। ওই বাগানের শ্রমিকদের না ঘরকা না ঘাটকা অবস্থা। ওই বাগানগুলির শ্রমিকরা যাতে মজুরি-সুযোগ সুবিধে পায় তার ব্যবস্থা কেন্দ্রকে করতে হবে।’’

বিজেপিও কিন্তু পাল্টা জবাব দিতে ছাড়ছে না। দার্জিলিঙের সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া অভিযোগ করেছেন, রাজ্যের শ্রম দফতরের সহযোগিতার অভাবেই ডানকানের বাগানগুলি স্বাভাবিক করতে সময় লাগছে। অহলুওয়ালিয়ার দাবি, ‘‘গত বছরের ডিসেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে চা শিল্প নিয়ে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। সেই মতো কেন্দ্র পদক্ষেপ করে। কিন্তু এখন আর রাজ্য সরকার চা নিয়ে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রককে সাহায্য করছে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Tea garden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE