বকেয়া ডিএ-র বহর বেড়ে চলায় সরকারি কর্মীদের মধ্যে সংগঠন বাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে শাসক দলের সংগঠন ফেডারেশন। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা সভায় সে কথাই তাঁকে জানিয়ে এলেন ফেডারেশনের নেতারা। এর উত্তরে বকেয়া ডিএ মেটানোর বিষয়ে কোনও প্রতিশ্রুতি অবশ্য দিতে পারলেন
না মুখ্যমন্ত্রী।
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) কেন মেটাচ্ছে না সরকার, তা নিয়ে চার বছর ধরে বার বার সরকারি কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে ফেডারেশনের নেতাদের। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক ডাকায় ওই নেতারা ভেবেছিলেন, বকেয়া ডিএ নিয়ে তিনি বুঝি কিছু ঘোষণা করবেন। কিন্তু তাঁদের সে আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন মমতা। উল্টে বলেছেন, সরকারের ভাঁড়ার শূন্য। আর্থিক অবস্থা ভাল না হলে বকেয়া ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়। বৈঠকের পর ফেডারেশনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, রাজ্য আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি একটু ভাল হলে ধাপে ধাপে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেবেন।”
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে কর্মী নেতারা কী বললেন? শাসক দলের কর্মী নেতাদের বক্তব্য, “এত ডিএ বকেয়া থাকায় সরকারি কর্মীদের মধ্যে সংগঠন গড়ে তুলতে হিমশিম খাচ্ছি, সে কথাই মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে এসেছি।”
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের থেকে এ রাজ্যের কর্মীরা ১৬% কম ডিএ পেতেন। কিন্তু বকেয়া বাড়তে বাড়তে এখন ৪২%-এ পৌঁছেছে। নবান্ন সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই কেন্দ্র আর এক কিস্তি মহার্ঘভাতা ঘোষণা করবে। তখন ব্যবধান আরও বাড়বে।
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধী কর্মী সংগঠনে নেতারা। সিপিএম প্রভাবতি রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা মনোজ গুহ বলেন, “কেন্দ্রের কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রী যত হাজার কোটি টাকাই পান, সরকারি কর্মচারীদের উনি কিছুই দেবেন না। অনেক হয়েছে, এ বার আমরা বকেয়া মহার্ঘ ভাতার দাবিতে তীব্র আন্দোলনে নামব।” কংগ্রেস প্রভাবিত কর্মী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের নেতা মলয় মুখোপাধ্যায়ও বলেন, “চলতি আর্থিক বছরে কর্মচারীদের বেতনের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, সরকার সেটাই খরচ করতে পারেনি। বেতন, পেনশন মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত পড়ে রয়েছে। তার পরেও সরকার কর্মীদের বেতন বাড়াবে না। অথচ, উৎসব, মেলা, খেলায় টাকা ওড়ানোয় খামতি নেই!”
মহার্ঘ ভাতা নিয়ে কোনও আশ্বাস না দিলেও তাঁদের বাকি ১০ দফা দাবি মুখ্যমন্ত্রী মেনে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ফেডারেশনের নেতারা। সংগঠনের অভিযোগ ছিল, বেশ কিছু আমলা এবং অফিসার কো-অর্ডিনেশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করছেন এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী তা শুনে সংশ্লিষ্ট আমলা-অফিসারদের নামের তালিকা চেয়েছেন বলে জানান তাঁরা। শূন্য পদে অন্তত চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করার প্রতিশ্রুতিও মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy